নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ পিএম, ১১ জানুয়ারী, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা পরিষদে পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। উপদেষ্টা পরিষদে একাধিক নতুন মুখ আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে যে উপদেষ্টা মণ্ডলী রয়েছে, সেখান থেকে কেউ বাদ পড়বে কিনা সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
ইতিমধ্যেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কথা হয়েছে। তারা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন। নতুন করে যারা উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন, তাদের মধ্যে অন্যতম সালমান এফ রহমান। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা। এবার তিনি ঢাকা -১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে প্রধানমন্ত্রীর শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা করা হতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। আরেকজন ড. প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি কুমিল্লার একটি আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়ন পাননি। এর আগে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। দুই মেয়াদে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। তাকে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীকে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা করা হয়। ২০১৪ মেয়াদে মোদাচ্ছের আলী আর স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন না। স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নতুন কাউকে নিয়োগও দেয়া হয়নি।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং টেকসই উন্নয়ন ল্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। এটা যদি হয় তাহলে তার পদোন্নতি হবে। তিনি এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়কারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বর্তমানে কাজ করছেন। যেহেতু এসডিজি বাস্তবায়নের সময়ক্ষন এগিয়ে আসছে। এর সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রনালয়ের কার্যক্রম জড়িত। সেহেতু তাকে সমন্বয়কারী থেকে এসডিজি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে।
এছাড়াও আরও দু-একজন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন