নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২১ জানুয়ারী, ২০১৯
পদত্যাগ নয়, দলের পূর্ণ কর্তৃত্ব চান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে লেখা এক চিঠিতে মির্জা ফখরুল দলের পুনঃগঠনে এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে দুই বছরের একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। এই উপস্থাপনায় বিএনপি মহাসচিব সাতটি সুনির্দিষ্ট করণীয় উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো:
১) দলের স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করতে হবে। স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ তরুণ এবং দলের নিবেদিত প্রাণদের দেয়া প্রয়োজন। যারা দলের জন্য সর্বস্ব নিংড়ে দিতে পারবেন।
২) দলের চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দলের মহাসচিবের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। কিছু কিছু বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে। তবে নীতি নির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে স্থায়ী কমিটিতে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে।
৩) জামাতকে কিছু সময়ের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ দিতে হবে। ২০ দল এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সমন্বিত করতে হবে। অন্যান্য দল গুলোকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এক প্লাটফর্মে আনতে হবে।
৪. বিএনপির আটক এবং নির্যাতিত নেতা কর্মীদের আইনী সুবিধা দিতে একটি কেন্দ্রীয় আইনী সহায়তা সেল গঠন করতে হবে। আইনজীবীদের স্থায়ী কমিটির কাছে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. দলের মাঠ পর্যায়ের কমিটিগুলো দ্রুত পুনঃগঠন করে সেখানে উদ্যমী এবং সংগঠনের ব্যাপারে সিরিয়াসদের জায়গা করে দিতে হবে।
৬. সিনিয়র নেতাদের কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে অনতিবিলম্বে সারাদেশ সফরের কর্মসূচী নিতে হবে। সেখানে জনসভা নয়, বরং কর্মীদের সাথে খোলামেলা আলাপচারিতা করতে হবে।
৭. দ্রুত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বাড়াতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সমর্থনের জন্য কাজ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার চিঠিতে বলেছেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয় হয়নি। বিএনপির পরাজয়ও হয়নি। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপির পক্ষে জনমত আরও বেড়েছে। এই নির্বাচনকে তিনি গণতন্ত্রের পরাজয় এবং আওয়ামী লীগের বিপর্যয় উল্লেখ করে বলেছেন, ‘এটাই বাংলাদেশে শেষ দলীয় সরকারের অধীনে শেষ নির্বাচন। এখন আমাদের কাজ হলো জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন দলে বিভক্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এটাও দলের জন্য ক্ষতিকর। এখন নিজেদের মধ্যে কলহের সময় নয় বরং ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সময়।’ বিএনপি মহাসচিব সংগঠন গুছিয়ে আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের সূচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁর লিখিত বক্তব্যে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের পর বিএনপিতে কোনঠাসা ফখরুল। এখন তাঁর সরে যাওয়ার দাবি উঠছে প্রকাশ্যেই। এরকম পরিস্থিতিতে দলের করণীয় সম্পর্কে মহাসচিবের কাছে লিখিত রিপোর্ট চান তারেক জিয়া। গতকাল রোববার রাতেই এই লিখিত রিপোর্টটি তারেক জিয়ার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিএনপি মহাসচিবের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।