ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনে জয় মুখ্য নয়, সকল শিক্ষার্থীর অংশীদারিত্ব চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১:০১ এএম, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

‘ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াটা কোন ছাত্র সংগঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য হতে পারে না। আমি মনে করি ডাকসু নির্বাচন হওয়াটাই সকল ছাত্র সংগঠনের বিজয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিজয়। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়াটা গৌণ, সকল শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্বই মুখ্য বিষয়।’

দীর্ঘ ২৮ বছর পর আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনও তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ের দেশের অন্যতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রলীগের পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নিয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তাঁর সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকারটি নেন কাবিদুল ইসলাম রুদ্র।

বাংলা ইনসাইডার: ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে, বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে গণতান্ত্রিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছিল, রাজনৈতিক চর্চার যে বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয়েছিল সেখান থেকে জাগরণের দ্বার হিসেবে দেখছি এ নির্বাচনকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে আমি মনে করি এই নির্বাচনটি হচ্ছে ঢাবির ঘুরে দাঁড়ানোর একটি আহ্বান। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অংশীদারিত্ব প্রয়োজন। একাডেমিক ক্যালেন্ডার কেমন হবে, এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ কিভাবে পরিচালিত হবে, গবেষণার বিষয়গুলো কিভাবে নির্ধারিত হবে, শিক্ষার্থীরা কিভাবে মুক্তির চেতনায় অঙ্গিকারে নিজেদেরকে শাণিত করবে সে বিষয়গুলো ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই প্রতিধ্বনিত হওয়া সম্ভব। সে জায়গা থেকে আমরা ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। একাডেমিক ক্যালেন্ডারে যেমন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার তারিখ উল্লেখ থাকে ঠিক তেমনিভাবে ডাকসু নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ থাকবে সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

এতদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার কারণ হিসেবে কী দেখছেন?

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনাকারী সংগঠন ডাকসু। এর নির্বাচন হওয়ার জন্য অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সিনেট সিন্ডিকেট, ছাত্র সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেই ধাপগুলোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ছাত্র রাজনীতিতে ডাকসুর প্রভাব অনেক বেশি। ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ’৯০ এর পর আর ডাকসু নির্বাচন হয়নি। ’৯১ তে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসে একক দখলের রাজনীতির ধারা শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অগণতান্ত্রিক হয়ে উঠার সেটিই সূচনা। তারপরও এতদিন ডাকসু নির্বাচন না হওয়ার পিছে সকল রাজনৈতিক দলের দায় রয়েছে বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি দায় রয়েছে শিক্ষকদেরও। ছাত্র সংগঠনগুলো আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে প্রতিটা ক্ষেত্রেই ছাত্রদের লড়াকু ইতিহাস রয়েছে কিন্তু যাদের নিয়ে তারা রাজনীতি করে তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। এছাড়াও, ছাত্র সংগঠনগুলো ডাকসুর মাধ্যমে অতি রাজনীতি করতে চেয়েছে। এর ফলে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যহত হওয়ার আশঙ্খাও তৈরি হয়েছে অনেক সময়। ডাকসুর মাধ্যমে ছাত্র সংগঠনের মধ্যে যেন অতি রাজনীতি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যেন বিরাজনীতিকরণ না হয় তা এড়াতেই এতদিন ডাকসু নির্বাচন আলোর মুখ দেখেনি। ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারিনি বলে আমার মনবেদনা আছে, আমি আমার সে ব্যর্থতা স্বীকার করি। এই ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক কর্মীরা একটি দায়মুক্তির সুযোগ পেয়েছে।

আওয়ামী লীগ গত দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা সত্তেও ডাকসু আলোর মুখ দেখেনি। কিন্তু কেন?

আমি বলবো এটা আমাদের ব্যর্থতা নয়, এটা আমাদের সীমাবদ্ধতা। গত ১০ বছরে ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরির প্রক্রিয়া বিরাজমান ছিল। কেননা অনেক ছাত্র সংগঠনই ইতিপূর্বে ছাত্র রাজনীতির মৌলিক শর্তগুলো লঙ্ঘন করেছে। এমন অনেক ছাত্র সংগঠন আছে যারা তাদের নেতৃত্ব অছাত্রদের হাতে তুলে দিয়েছে। অনেক ছাত্র সংগঠন আবার স্বাধীনতা বিরোধী চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী। অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের পার্টি অফিসও বানাতে চেয়েছে। মূলত এসব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যেই বিলম্ব হয়েছে।

ডাকসু নির্বাচনকে ঢাবি ছাত্রলীগের পরিকল্পনা কী?

আমাদের প্রথম চাওয়া ডাকসু নির্বাচনটা হোক। নির্বাচনের পরিবেশকে সুন্দর ও ফলপ্রসূ করার জন্য আমরা গঠনতন্ত্র কমিটির কাছে ইতিমধ্যেই আমাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছি। সেখানে আমরা বলেছি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে আমরা সকল ছাড় দিতে প্রস্তুত রয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বের সর্বাধুনিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী, সকল অযৌক্তিক বর্ধিত হল ফি ও পরীক্ষার ফি বাতিল, গণপরিবহনের সুব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, ক্যান্টিনে পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা এসব প্রত্যাশা পূরণই ঢাবি ছাত্রলীগের পরিকল্পনা।

ছাত্রলীগ থেকে কারা নির্বাচন করবেন? সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কি?

ছাত্রলীগের কর্মীদের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কর্মী হওয়াটাই সবচেয়ে বড় পরিচয়, গর্বের। তবে দায়িত্বশীল জায়গা থেকে আমাদের চেষ্টা থাকবে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য, এখানকার মেধাবী ও তরুণদের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মকাবেলা করতে সক্ষম তাদেরকেই আমরা ছাত্রলীগের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেবো। কারা নির্বাচন করবে, কারা করবে না তা আমাদের কাছে একেবারেই গৌণ। আমাদের গণতান্ত্রিক ফোরাম রয়েছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত রয়েছে, সেটির আলোকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যান্য ছাত্র সংগঠন সহাবস্থানের দাবি জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে পূর্ণ সহাবস্থান, পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল যে ১৪টি ছাত্র সংগঠন আছে, প্রত্যেকটি অবাধেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অনেকেই অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য রয়েছে, এ ব্যাপারে কী বলবেন?

ঢাবির হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আধিপত্য রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগের জনপ্রিয়তা রয়েছে, এটাই আমাদের আত্মতৃপ্তির বিষয়, অনুপ্রেরণার কারণ। ভালো কাজের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে শুভবোধের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

ছাত্র ইউনিয়নের একজন শীর্ষ নেতা (লিটন নন্দী) দুইবার মাস্টার্স করা শিক্ষার্থী ও ইভেনিং শিক্ষার্থীদেরও ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন। কীভাবে দেখছেন?

ছাত্রদের দাবি আদায়ে অতীতে তাদের লড়াকু ইতিহাস রয়েছে। এখনো তারা ছাত্রদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। তারা এমন কোন প্রস্তাব দিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমি মনে করি, যারা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের মধ্য থেকেই ছাত্রদের প্রতিনিধি আসা উচিৎ, বাকিটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত।

ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কি কোন ইশতেহারের তৈরি হয়েছে? ইশতেহারে কী কী প্রাধান্য পাবে?

ছাত্রদের অধিকার আদায়ে ছাত্রলীগ সবসময় তৎপর। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছুদিন আগে ‘বি ইউনিট’ এর পরীক্ষা পুনরায় নেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নির্বাচনী তফসিল এখনো ঘোষিত হয়নি। সেক্ষেত্রে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বের সর্বাধুনিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী, সকল অযৌক্তিক বর্ধিত হল ফি ও পরীক্ষার ফি বাতিল, গণপরিবহনের সুব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, ক্যান্টিনে পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা এগুলো আমাদের ইশতেহারে প্রাধান্য পাবে।

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ডাকসু থেকে ছাত্রলীগের অনেক ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব বের হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এমন নেতৃত্ব বের হওয়া কি সম্ভব?

ডাকসুর নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতারাই পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শুধুমাত্র ভিপি কিংবা জিএস না, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে যারাই নির্বাচিত হবে তারা প্রত্যেকেই জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ভূমিকা সংযোজন করার সক্ষমতা রাখে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে, এটি আমাদের প্রত্যাশা। যে সাধারণ শিক্ষার্থী ভোট দিল, তার হয়তো কোন প্রাপ্তি হয়নি কিংবা ডাকসুর সঙ্গে কোন সাংগাঠনিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়, কিন্তু সে যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করলো তাতেই তার নৈতিক জাগরণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার সংগ্রামে সেও নিয়োজিত হলো। আমি মনে করে ডাকসু নির্বাচনে এবার শুধুমাত্র ২২ জন শিক্ষার্থীই নির্বাচিত হবে না বরং ৩৬ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের স্ফুরণ হবে। এটিই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

প্রচণ্ড তাপদাহে ১৪ দলে স্বস্তির বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জানালেন যে, ১৪ দল বিলুপ্ত হয়নি, ১৪ দল আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি সাফ জানিয়ে দিলেন, খুব শীঘ্রই তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। 

প্রধানমন্ত্রী এটিও বলেছেন যে, ১৪ নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। ১৪ দলের সমন্বয়ক নিয়মিত ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এছাড়াও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য ১৪ দলের নেতাদেরকে উল্লসিত করেছে। তীব্র তাপদাহে যেন তাদের কাছে এক স্বস্তির বৃষ্টি। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর ১৪ দলের শরিকরা এতিম হয়ে পড়েছিল। তারা কোথাও পাত্তা পাচ্ছিল না। মন্ত্রিসভাতে যেমন ১৪ দলের কাউকে রাখা হয়নি, ঠিক তেমনই সংরক্ষিত নারী আসনে যে ৪৮ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সেখানও ১৪ দলের কোন প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। ১৪ দলের নেতাদের এ বার নির্বাচনে বড় ধরনের ভরাডুবি ঘটেছে। হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ফজলে হোসেন বাদশার মতো ১৪ দলের হেভিওয়েট নেতারা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন। এরপর ১৪ দলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ১৪ দলের নেতারা সেই সময় থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেননি। এর মধ্যে ১৪ দলের বৈঠক নিয়ে কিছু কথাবার্তা হলেও শরিকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং ১৪ দলের অন্তত তিনজন নেতা গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে সংশয় প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, ১৪ দল শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।

২০০১ সালে নির্বাচনের বিপর্যয়ের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আওয়ামী লীগ এই ১৪ দলীয় জোট গঠন করেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ভূমিধ্বস বিজয়ের পর ১৪ দলের সদস্যদেরকে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়েছিল। সেই সময় দিলীপ বড়ুয়া মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে গঠিত মন্ত্রিসভাতেও ১৪ দলের নেতা রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুকে রাখা হয়েছিল। এরপর থেকেই ১৪ দলের শরিকদেরকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়। 

এবার নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তিক্ততা সৃষ্টি হয় এবং তিক্ত অবস্থা রেখেই আওয়ামী লীগ ১৪ দলের শরিকদের জন্য মাত্র ৬টি আসন দেয়। শেষপর্যন্ত জোটের স্বার্থে ১৪ দল নির্বাচনে ওই কয়েকটি আসন নিয়ে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু সেখানে ১৪ দলের অধিকাংশ নেতার বিপুল ভরাডুবি হয়। বিশেষ করে হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বিপর্যয় ১৪ দলকে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়। এমনকি শিরীন আখতারকে পরবর্তীতে সংরক্ষিত আসনের এমপি করা হবে- এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বলেও জাসদের নেতারা দাবি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিরীন আখতারও সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে পারেননি। এরকম অবস্থায় ১৪ দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ, অসন্তোষ এবং হতাশা ছিল দৃশ্যমান। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করলেন যে, তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বসবেন। 

তিনি বলেছেন, কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করার পর তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তিনি ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১৪ দলের এই বৈঠকের নেতাদেরকে উল্লসিত করেছে। তারা এখন আশায় বুক বেঁধে আছেন। 

১৪ দলের নেতারা আসলে কর্মীহীন, অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে লতাপাতার মতো জড়িয়ে থেকে তারা কোন রকম অস্তিত্ব রক্ষা করতে চেষ্টা করছেন। এখন তিনি আওয়ামী লীগ যদি তাদের থেকে ছাতা সরিয়ে নেয় তাহলে এই দলগুলো মৃত্যু ঘটবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ তাদেরকে জীবিত করার যেন মহৌষধ দিলেন।

১৪ দল   আওয়ামী লীগ   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কমে গেল কাদেরের দাপট?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমন একজন নেতা যিনি ওবায়দুল কাদেরের এই সিদ্ধান্ত মানেননি। সিদ্ধান্ত না মেনে তিনি ধানমণ্ডি ৩ নম্বর কার্যালয়ে গিয়ে ওবায়দুল কাদেরের তোপের মুখে পড়েন। ওবায়দুল কাদের তাকে বলেন, আপনি তো দলের কোন সিদ্ধান্তই মানেন না। কিন্তু তার পরও শাজাহান খান তার ছেলেকে প্রার্থী হিসেবে রাখেন এবং দলের তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন আশঙ্কার মধ্যেই তিনি উপজেলা নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির সংবাদ সম্মেলনের পর দেখা গেল যে, ওবায়দুল কাদের যা বলেছেন এবং আওয়ামী লীগের যে সিদ্ধান্ত তার মধ্যে দুস্তর ফারাক রয়েছে। ওবায়দুল কাদের যেভাবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন বাস্তবতা তা নয়। ওবায়দুল কাদের যত গর্জেছেন বাস্তবে আওয়ামী লীগ তত বর্ষেনি। আর একারণেই এখন ওবায়দুল কাদেরের কর্তৃত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।


এমনিতেই আওয়ামী লীগে বেশ কিছুদিন ধরে এক ধরনের বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সভাপতির বাইরে অন্য কোন নেতার কথা তৃণমূলের আওয়ামী লীগ বা মাঠ পর্যায়ের নেতারা মোটেও কর্ণপাত করেন না। তাদেরকে খুব একটা আমলে নেন না। তারপরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে কথা। তিনি দলের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তি। সেই ক্ষমতাবান ব্যক্তি যখন বলছেন, সকলে ধরে নিয়েছিল যে, এটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা এবং ওবায়দুল কাদের এটিকে শেখ হাসিনার নির্দেশনা বলেই অভিহিত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার পরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা একরামুল করিম চৌধুরী, শাজাহান খান এবং ড. রাজ্জাকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন এবং তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু এই তিনজনের কেউই ওবায়দুল কাদেরের কথায় কর্ণপাত করেননি। 

ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অমান্য করে তারা প্রার্থী হওয়ার পর এখন দেখা গেল যে, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের অবস্থানই এখন আর সঠিক নেই। ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। অথচ ওবায়দুল কাদের একাধিক গণমাধ্যমে বলেছিলেন যে, ৩০ এপ্রিল যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ৩০ এপ্রিল এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাই হয়নি। তাহলে কী ওবায়দুল কাদের বাড়িয়ে বলেছেন? 


কেউ কেউ দাবি করেন, যেহেতু একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সেহেতু ওবায়দুল কাদের বিষয়টিকে বড় করে দেখেছেন এবং তিনি নিজেই উপজেলা নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আগ্রহী ছিলেন। কারণ তার নির্বাচনী এলাকায় যদি একরামুল করিমের সন্তানও উপজেলা চেয়ারম্যান হয় তাহলে তার এলাকায় আধিপত্য কমে যাবে। আর একারণেই হয়তো তিনি বিষয়টিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করেছিলেন বলে অনেকে মনে করেন।

আজ আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্য থেকে স্পষ্টতই মনে হয় যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতারা এই বিষয় নিয়ে গর্জে ছিলেন বাস্তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বিষয়টিকে অতটুকু গুরুত্বতর মনে করেন না। বরং তার প্রধান আগ্রহের ব্যাপার হলো উপজেলা নির্বাচন যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। আর এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা সবসময় যা বলেন সেটিরই পুনঃউচ্চারণ করেন এই বক্তব্যটি ঠিক না। শেখ হাসিনা আত্নীয় স্বজনদের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের অবস্থানের সঙ্গে পুরোপুরি একই রকম বক্তব্য রাখেননি। আর এর ফলে ভবিষ্যতে ওবায়দুল কাদেরের হুশিয়ারি বা নির্দেশনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কতটুকু শুনবে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে প্রশ্ন করেছেন তাহলে কী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাপট কমে গেল?




ওবায়দুল কাদের   আওয়ামী লীগ   সাধারণ সম্পাদক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে কী ধর্মঘট চলছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না। 

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ সৌদি আরবে যাচ্ছেন ওমরা পালনের জন্য। অন্যান্য নেতারাও তীব্র গরমে বাসায় শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে আছেন। কোন নেতাই কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না। একমাত্র আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলে আছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি সারাক্ষণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে আর্তনাদের মতো শোনাচ্ছে।


বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিএনপির মধ্যে এখন এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে এবং এই হতাশার কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতারা এখন বিরক্ত। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, মূলত তারেক জিয়ার খাম খেয়ালিপনা এবং স্ব-বিরোধী সিদ্ধান্তের জন্যই বিএনপি নেতারা বিরক্ত এবং নিজেদের হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন। 


বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে, আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। সিদ্ধান্ত তিনি নিচ্ছেন, তিনি আমাদেরকে জানাচ্ছেন। কাজেই আমরা কী করব? স্থায়ী কমিটির আসলে কোন কাজ নেই। স্থায়ী কমিটিতে দূরের কথা, কেন্দ্রীয় কমিটিতেও কোন কাজ নেই। 

তিনি বলেন, বিএনপির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে উপজেলা নির্বাচনে তারা বর্জন করবে। কিন্তু যারা উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র অংশগ্রহণ করছে তাদের বহিষ্কারের ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা ছিল সেই প্রক্রিয়ার কোনটাই অনুসরণ করা হয়নি। তাদেরকে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়নি, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি এমন অন্তত ৫ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে যারা কাগজে কলমে বিএনপিও করে না। বিএনপি শুভাকাঙ্খী হিসেবে, বিএনপির সমর্থক হিসেবে  তারা পরিচিত। এই যদি হয় দলের অবস্থা তাহলে সেই দলে যে কোন কথা বলে বিপদ বলে মনে করেন ওই স্থায়ী কমিটির সদস্য। 

এরকম কথাবার্তা শোনা যায়, বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের মুখে। বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নতুন করে আন্দোলন শুরু করার কথা বলেছেন, বারবার তাগাদা দিচ্ছেন। কিন্তু এ নিয়ে উদ্যোগ নিচ্ছেন না কোন বিএনপির সদস্যরা। 


বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি বড় অংশ অসুস্থ অথবা অকার্যকর। স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠনের জন্য বলা হয়েছিল দু মাস আগে। তারেক জিয়া তখন নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, স্থায়ী কমিটিতে ৫ জন সদস্য নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ঐ বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন যে, এক মাসের মধ্যে স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করা হবে। কিন্তু ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও স্থায়ী কমিটির ঐ শূণ্যপদগুলো পূরণ করা হয়নি। বিএনপিতে কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা ছিলো, সে কাউন্সিল নিয়েও তারেক জিয়া কোন রকম সিদ্ধান্ত দেননি। ফলে দলের নেতাকর্মীরা এখন গা ছেড়ে দিয়েছেন। 

বিএনপির একজন নেতা বলছেন যে, বিএনপিতে এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার এখন কারও নেই। যার কারণে সিদ্ধান্ত যদি না দিতে পারা যায়, তাহলে দলের হাল ধরাও কঠিন। আর তাই বিএনপি নেতারা হালও ধরছেন না সিদ্ধান্তও দিচ্ছেন না। তারা এক ধরনের অঘোষিত ধর্মঘটে আছেন।  


বিএনপি   ধর্মঘট   রাজনীতির খবর   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন পিছু হঠল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে। 

প্রশ্ন উঠল, আওয়ামী লীগ কেন তারা অবস্থান থেকে সরে এলো বা কেন আওয়ামী লীগ আত্মীয় স্বজনদের প্রার্থী করার বিষয়টি নিয়ে পিছু হঠল।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র এ ব্যাপারে একেক রকম মতামত দিয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি কখনোই আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না- এ ধরনের মনোভাব পোষণ করেননি বা সরাসরি এ ধরনের কথা বলেননি। তার বক্তব্য হয়তো আওয়ামী লীগের অনেকেই বুঝতে পারেননি এবং বোঝার চেষ্টা করেননি। শেখ হাসিনা কী বলতে চান তা আজ সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করেছেন। 

তিনি বলেছেন, যারা মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্যদের কথা। পরিবারের সদস্য বলতে তিনি সন্তান, স্ত্রী এবং পরিবারের মূল ব্যক্তিকে বুঝিয়েছেন। অন্য আত্মীয়দেরকে বোঝাননি। এখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের হয়তো বুঝতে ভুল হয়েছে। 

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদেরকে নির্বাচন করা যাবে না এমনটা বলেননি, বরং তিনি বলেছেন যে, তারা যেন তৃণমূলের অন্যান্য নেতাকর্মীদেরকেও সুযোগ দেয়। সবকিছু যেন তারা দখল করে না নেয়। 

তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যারা বিভিন্ন পদ পদবীতে আছেন বা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা নির্বাচন করবে না কেন? অর্থাৎ যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে, পৌরসভার মেয়র হিসেবে বা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে অর্থাৎ আগে থেকে রাজনীতি করছেন তারা নির্বাচন করলে কোনো বাধা নেই। অর্থাৎ ড. রাজ্জাক বা শাজাহান খানের তার ছেলে বা ভাই নির্বাচন করলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্ট ভাবে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল না, মন্ত্রী-এমপি হওয়ার সুবাদে ছেলে বা স্ত্রীকে রাজনীতিতে টেনে আনায় আনা হয়েছে এবং এলাকায় দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এরকম ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। এরকম ব্যক্তির সংখ্যা খুবই কম। আওয়ামী লীগ সভাপতি আজ সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন এই সংখ্যা কত জন। ওই সাংবাদিক বলেছেন, জনা পঞ্চাশেক হবে। তিনি বলেছেন, এই সংখ্যা খুব কম নয়। 

তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার কারণে এলাকায় এক ধরনের উত্তেজনা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়েছে। একদিকে মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থী এবং অন্যদিকে মন্ত্রী-এমপিদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে তৃণমূলের ঐক্য। সব কিছু মিলিয়ে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন মানেই হলো ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধি। আর সেই ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী হয়তো তার কৌশলের ব্যাখ্যা দিলেন। আসলে আওয়ামী লীগের পিছু হঠা নয়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য একটাই। নির্বাচন যেন অর্থপূর্ণ হয়, ভোটার উপস্থিতি যেন বাড়ে। আর সে কারণেই আপাতত নির্দেশ অমান্যকারীদেরকে স্বাগত জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। যেমন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্রদের স্বাগত জানিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের   রাজনীতির খবর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এবার বিএনপির ৬১ নেতাকে শোকজ

প্রকাশ: ০৬:২৪ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৬১ নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। 

বৃহস্পতিবার (২ মে) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে নেতাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ নেতাদের মধ্যে ২৫ জন চেয়ারম্যান পদে, ২০ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন অংশ নিয়েছেন।

শোকজ চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএনপির নেতা হিসাবে আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিতব্য দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা। সুতরাং দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরে নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিএনপি   শোকজ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন