নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৯
নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কূটনৈতিক যুদ্ধেও হেরে গেল বিএনপি। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপির প্রধান টার্গেট ছিলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বিএনপি চেয়েছিল, আন্তর্জাতিক মহলে যেন এই নির্বাচন স্বীকৃতি না পায়। কূটনীতিক মহল যেন এই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তারা যেন নির্বাচনের ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে কথা বলে। এ লক্ষ্যে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে একটি দল দু’দফা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যেখানে নির্বাচনে নানা অনিয়ম তুলে ধরে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে তারা নির্বাচনে নানা কারচুপির অভিযোগ করে। বিএনপিও আলাদাভাবে কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করে নির্বাচনে কথিত অনিয়মের তথ্য প্রমান প্রদান করে। শুধু দেশে নয়, জাতিসংঘ, মার্কিন কংগ্রেস, পররাষ্ট্র দপ্তরেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নালিশ করে বিএনপি। এমনকি জাতিসংঘ মহাসচিবকে নির্বাচন বাতিলের জন্য হস্তক্ষেপ করারও অনুরোধ জানায়। কিন্তু বিএনপির লবিং তৎপরতা দৃশ্যত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। নির্বাচনের পর থেকেই একের পর এক প্রভাবশালী দেশ নবনির্বাচিত সরকারকে অভিনন্দন জানাতে থাকে। সর্বশেষ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অভিনন্দন বার্তার পর কূটনৈতিক যুদ্ধে বিএনপির পরাজয় নিশ্চিত হয়। আর আজ প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে চা-চক্রে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে বিএনপির কূটনৈতিক উদ্যোগের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকা হলো। এখন বিএনপির যেমন নির্বাচন নিয়ে দেশে প্রতিবাদ করার সামর্থ্য নেই, তেমনি নির্বাচনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সহানুভূতিও বিএনপি পেলো না।
আজ কূটনীতিকরা গণভবনে এসে এই সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলেন। বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই নির্বাচনকে সব দেশই মেনে নিয়েছে। কূটনীতিকরা মনে করছেন, নির্বাচনে কিছু অনিয়ম হয়েছে, কারচুপির ঘটনাও ঘটেছে। যেটা প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এই ত্রুটি বিচ্যুতি ছাড়াও এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ছিলো প্রত্যাশিত। এসব অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটলেও এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগই জয়ী হতো বলে কূটনীতিকরা মনে করেন। তাই কারচুপি বা অনিয়মের কারণে যেহেতু নির্বাচনের মৌলিক ফলাফলের কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই তাই, কূটনীতিকরা নতুন করে এ বিষয়টি নিয়ে এগুতে চায় না। তাছাড়া প্রভাবশালী কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা মনে করেন নির্বাচনে যে কারচুপির কথা বলা হচ্ছে সেটা তৃতীয় বিশ্বের দেশ এবং এই উপমহাদেশের নির্বাচনে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। যে দল যতো জনপ্রিয়, সেই দলের পক্ষে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই, তবে তা নির্বাচনের মূল ফলাফলে কোন প্রভাব ফেলে না। নির্বাচনের পর বেশ কিছু দূতাবাস, নতুন সরকার গঠন এবং তার লক্ষ্যগুলোকে অত্যান্ত ইতিবাচক ভাবে দেখছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী সকলের জন্য সুষম উন্নয়ন, সুশাসন এবং দুর্নীতি বন্ধে যে কঠোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন- তা বিদেশী দূতাবাসগুলো বাংলাদেশের জন্য নতুন আশাবাদ হিসেবে দেখছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের পথে যাচ্ছে তা আরো টেকসই হবে বলে কূটনীতিকরা মনে করছেন।
বিদেশী দূতাবাসগুলো শুধু মনে করছে, সরকার যদি মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয় তাদের এজেন্ডায় তাহলে বাংলাদেশ এই মেয়াদে সারা বিশ্বের জন্যই অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে আত্নপ্রকাশ করবে।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।