ইনসাইড পলিটিক্স

যেসব মামলা শেষ হয় না

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯


Thumbnail

বাংলাদেশে অনেক মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু কিছু মামলা আছে যেগুলো রাজনৈতিক মামলা এবং রাজনৈতিক কাজেই এগুলো ব্যবহৃত হয় বলে অনেকে মনে করেন। সেগুলোর নিষ্পত্তি বছরের পর বছর আটকা পড়ে থাকে। রাজনৈতিক নানা হিসাব-নিকাশের বেড়াজালে এই মামলাগুলো এগোয় না এবং এগুলোর নিষ্পত্তিও হয় না। এরকম মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটি আলোচিত মামলা হলো:

(১) মঞ্জুর হত্যা মামলা: ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজতে হত্যা করা হয়। এর ১৪ বছর পর বিএনপি আমলে ১৯৯৫ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার মূল বক্তব্য ছিল, জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল মঞ্জুর যে বিদ্রোহ করেছিলেন এবং সেসময় তিনি যখন ঢাকার দিকে এগুচ্ছিলেন তখন তাকে হত্য করা হয়। মেজর জেনারেল মঞ্জুরের কাছে সেসময় গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু তারপর রাজনৈতিক বেড়াজালে মামলাটি আটকা পড়ে যায়। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল, গত দুই যুগ ধরে মামলাটি ঝুলে আছে। এই মামলাটিকে বলা হয় এরশাদকে বশীকরণের মামলা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারাই এরশাদকে বশে রাখার জন্য এই মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। কিছুদিন আগে এই মামলাটির রায় দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে রায় আবারও পিছিয়ে যায় এবং মামলার অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে শুনানীর জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়। মনে করা হয়, এই মামলার কারণেই এরশাদ নড়াচড়া করতে পারেন না এবং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম আচরণ করেন।

(২) রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম: ১৯৮৬ সালে সংবিধানে অষ্টম সংশোধনী আনেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি সংবিধানে দুটি পরিবর্তন এনেছিলেন। প্রথমটি ছিলো হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরণ, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে তিনি হাইকোর্ট স্থাপন করেছিলেন। দ্বিতীয়টি ছিল, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দুটি সংশোধনীকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবীরা। এর মধ্যে হাইকোর্ট বিকেন্দ্রীকরণে অষ্টম সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংশোধনী নিয়ে করা রিট ৮৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়নি। মামলাটি নিয়ে কেউই অগ্রসর হয় না। মামলাটি হাইকোর্টে স্তূপের নিচে পড়ে আছে।

(৩) অবৈধ ক্ষমতা দখলের মামলা: সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্ষমতা দখলের মামলাটি করেছিলেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে তিনি রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগে মামলাটি করেন। মামলাটি দায়ের করাই সার। এরপর থেকে মামলাটির কোন অগ্রগতি হয়নি। মামলার বাদী ইনু এবং বিবাদী এরশাদ এখন মহাজোটের শরিক।

(৪) যুবকের মামলা: যুবক নামের সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়েছে। অধিক মুনাফাসহ নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যুবক নামক সংগঠনটি ফুলে ফেঁপে ওঠে। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আবারও বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে সংগঠনটি আবারও আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৭ সালে ১/১১’র পর যু্বকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উদ্যোগ নেয়। রাষ্ট্রীয় নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে মানুষের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মামলার কার্যক্রম অব্যাহত থাকলেও আজ পর্যন্ত মামলার কোন সুরাহা হয়নি। বিভিন্ন স্থানে যুবকের সম্পত্তিগুলো যে যার মতো দখলে নিয়েছে। কিন্তু যুবকের কাছে গচ্ছিত টাকাগুলো আজও ফেরত পায়নি সাধারণ মানুষ।

(৫) ডেসটিনির মামলা: যুবকের পরপরই ২০১০ সালে এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনির বিরুদ্ধে মামলা করে আওয়ামী লীগ সরকার। ডেসটিনির কার্যক্রম ছিল অনেকটা যুবকের অনুরূপ। মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ করে তারাও সম্পদের পাহাড় গড়েছিল। ডেসটিনির বিরুদ্ধে মামলা হলেও আজ পর্যন্ত তার বিচারিক কোন অগ্রগতি দৃশ্যমান নেই। ডেসটিনির কর্তাব্যক্তিরা আইনের ফাঁক-ফোকর গলে বহাল তবিয়তে আছেন এবং ডেসটিনির সম্পদ-সম্পত্তি ভোগ করে যাচ্ছেন।

(৬) হলমার্ক কেলেঙ্কারী: আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে সবচেয়ে আলোচিত ব্যাংকিং কেলেঙ্কারী হলো হলমার্কের দুর্নীতি। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে হলমার্ক নামক একটি ভুইফোঁড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সরকার দ্রুততার সঙ্গে হলমার্কের মালিকদের গ্রেপ্তার করে। কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। কিন্তু মামলাগুলো আর আলোর মুখ দেখছে না। হল মার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ তার মুক্তির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন এবং তিনি টাকা পরিশোধ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে এখন আইনের শাসন অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আইনের শাসন পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলেই শুধু হবে না, দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বছরের পর বছর যদি মামলাগুলো বিচারের অপেক্ষায় থাকে তাহলে আইনের প্রতি মানুষের আস্থায় চিড় ধরতে পারে। একইসঙ্গে ন্যায়বিচার এবং আইনের শাসন সুদূর পরাহত হয়ে পড়ে। তাই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই মামলা গুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এমআর 

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

হাসপাতালে থেকে আজই বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২:২৮ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় নেওয়া হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরবেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘ম্যাডামকে আজকে বাসায় আনার কথা রয়েছে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ হয়নি’।

এর আগে, বুধবার (০১ মে) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সিসিইউতে রেখে তার বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়। 


খালেদা জিয়া   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওমরাহ পালনে আজ সস্ত্রীক সৌদি আরব যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০১:৩১ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্য সৌদি আরব যাচ্ছেন। সঙ্গে থাকছেন তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগম। 

বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুর সোয়া ৩টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে তাদের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে আগামী ৮ মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


মির্জা ফখরুল   ওমরাহ হজ   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের প্রস্তুতি-প্রচারণা দেখতে বিজেপির আমন্ত্রণ পেল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।

বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে অনুরোধ করেছে।

এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে মনোনীত করেছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১ মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।

ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।


ভারত নির্বাচন   বিজেপি   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি ও শরবত বিতরণ

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপদাহ বিপর্যস্থ জনজীবনে পরিশ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত জনসাধারণের মাঝে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে সুপেয় পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্পট ঘুরে বেলা সাড়ে তিনটায় জিগাতলায় এসে শরবত ও সুপেয় পানি বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ- সভাপতি কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইসহাক মিয়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ টিংকু, মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সহ সভাপতি শাহ আলম মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ হান্নান হাওলাদার শাওন প্রমুখ।


স্বেচ্ছাসেবক লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়া কি তারেকের ভুল কৌশলের শিকার?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে দলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। 

কয়েক দিন পর পর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই নড়বড়ে বলেই মনে করছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা। বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ, সেই অসুস্থতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা দরকার এবং সেই চিকিৎসা দেশের সম্ভব নয়। এজন্য তারা মনে করেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া দরকার। তবে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। বরং তারেক জিয়ার অনাগ্রহের কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রলম্বিত হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথম উপায় হল, তিনি যদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি তার অপরাধের দণ্ড মওকুফ করতে পারে বা দণ্ড হ্রাস করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি একজন মুক্ত মানুষ হতে পারেন। তখন তার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা থাকবে না।

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই এই মতের বিরোধী। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার ভাই এবং বোন তার জীবনের প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে চান। তারা মনে করেন যে, বেগম জিয়ার এখন যে অবস্থা তাতে রাজনীতির চেয়ে তার চিকিত্সাই সবচেয়ে জরুরি। আর এই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন তাহলে এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তার তারেক জিয়া মনে করছে যদি বেগম জিয়া তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান তাহলে সেটি হবে রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারেক জিয়ার ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। নিজের স্বার্থে তিনি তার মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করছেন জিয়া পরিবারের দুই সদস্য। 

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দ্বিতীয় উপায় হল আদালতের আশ্রয় নেওয়া। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেরকম তা নিয়ে যদি আদালতে আবেদন করা হয়, আদালত সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে যদি রায় দেয় যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সরকার কোন বাধা হবে না। কারণ আদালতের রায় চূড়ান্ত। এভাবে বহুবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের রায়ে বিদেশ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের। এটি কোন নতুন প্রক্রিয়া নয়। কিন্তু তারেক জিয়া বিএনপির আইনজীবীদেরকে এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য বাধা দিচ্ছেন।

বিএনপি নেতারাও এই ধরনের বাধা বিস্মিত। তারা জানেন না তারেক জিয়া কেন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন না। এ নিয়ে বিএনপির কারোরই কোন ব্যাখ্যা নেই। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, বেগম জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া তারেক জিয়ার নির্দেশে থমকে গেছে এবং সেই থমকে যাওয়ার কারণ অজানা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় দেশের তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করুক- এটিই হয়তো তারেক জিয়া চান। কারণ তারেক জিয়া যদি তার মার প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা দেখাতেন সে ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সাথে সমঝোতা না করুন কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু সেটি তিনি গ্রহণ না করাতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে,বেগম জিয়াকে এই অবস্থায় রেখে তারেক জিয়া পূর্ণ ক্ষমতা গ্রহণ করতে চান। 

অনেকে মনে করেন যে, বেগম জিয়া যদি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বেগম জিয়া সুস্থ হলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ কারণেই কি তিনি বেগম জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে নিতে অনাগ্রহী? এই প্রশ্নটি এখন উঠেছে। 

বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার তৃতীয় পথ হলো সরকারের সাথে সমঝোতা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সেটির কোন সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন। একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে সরকারের দুটি সুবিধা দেওয়ার কোন বিধান নেই। আর বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যদি বেগম জিয়াকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করানো যায় এবং তিনি যদি বিএনপি সঙ্গে সকল সম্পর্ক ত্যাগ করেন তাহলে হয়তো সরকারের সাথে একটা সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু সেটাতেও তারেক জিয়ার সায় নেই। তারেক জিয়ার কারণেই যেমন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তারেক জিয়ার কারণেই হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসাও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।




খালেদা জিয়া   বিএনপি   এভারকেয়ার হাসপাতাল   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন