নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৪ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অবসরের সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে প্রতিবাদের মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি সফরে গিয়ে ডয়চে ভেলে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তার শেষ মেয়াদ। প্রত্যেকেরই অবসরের একটা সময় আছে। তিনিও অবসর নিতে চান। তার এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দলের তৃণমূল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতত্ব ছেড়ে দেয়া বা আর প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পর যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনার এখন কোন বিকল্প নেই। আমরা মনে করি না যে এখনই রাজনীতি থেকে তার অবসরের সময় হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন তার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে, সেটা ৫ বছরেও সমাপ্ত হবে না। আরও সময় দরকার। তিনি যদি অবসরে যান, তাহলে এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলা হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। তার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না-এমন সিদ্ধান্ত জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হতে পারে না। তারা মনে করেন, শেখ হাসিনা যেহেতু জনগণের নেতা কাজেই তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর শুনবেন এবং জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে মূল্য দেবেন।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার এরকম অবসরের সিদ্ধান্ত এটাই প্রথম নয়। যতবারই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ততবারই তিনি দলের নেতাকর্মীদের তীব্র প্রতিরোধ ও বাধার মুখে পড়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগের অপ্রত্যাশিত পরাজয় হয়, সেসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীরা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর অবরোধ করে রাখে এবং আত্মহননসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে শেখ হাসিনা দলের তৃণমূলের অনুরোধে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের গত তিনটি কাউন্সিলে দলের সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এসময় তীব্র প্রতিবাদ, ‘না’ ধ্বনির মধ্য দিয়ে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়ে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত এরকম প্রতিবাদের মুখে পড়বে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন। তাদের ভাষ্য, শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগ কল্পনাও করা যায় না। বিশেষ করে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে পর যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন, তারা আওয়ামী লীগের দুঃসময় দেখেছেন। শেখ হাসিনা কিভাবে দল ও সংগঠন তিল তিল করে গড়ে তুলে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, সেই বিবেচনা থেকে তারা মনে করেন যে, শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত শুধু দলের জন্যই নয়, দেশের জন্যও অগ্রহণযোগ্য। জাতির পিতার স্বপ্নের যে সোনার বাংলা তিনি গড়তে চান, তার জন্য আরও কিছু সময় তার নেতৃত্বে থাকা প্রয়োজন।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে সুযোগ ও সময়মতো সবাই এ ব্যাপারে তাদের মনোভাব এবং জনগণের চাওয়া তাকে জানাবেন। জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে শেষ পর্যন্ত তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেই পারেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।