নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১১ এএম, ০২ মার্চ, ২০১৯
১/১১’র সময় যখন বিএনপির একাংশ বিএনপিকে বিভক্ত করা এবং মাইনাস টু ফর্মুলা কার্যকর করার উদ্যোগ নেয় তখন সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি গঠন করা হয়েছিল এবং সেখানে মহাসচিব করা হয়েছিল মেজর অব. হাফিজউদ্দিন আহমেদকে। তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে বৈধতা চেয়েছিল। এটা নিয়ে বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেও বিএনপির অনেকেই সাইফুর রহমান-মেজর হাফিজের বিএনপিবে সমর্থন জুগিয়েছিল। যারা সমর্থন যুগিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির বর্তমান মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরকম তথ্য উঠে এসেছে এবারের বইমেলায় প্রকাশিত ‘এক এগারো’ শীর্ষক গ্রন্থে। গ্রন্থটি লিখেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সুংকোংহে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মাস্টার্স ইন এনজিও স্টাডিজ’ কোর্সের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমদ।
‘এক এগারো’ বইয়ের ২৯৭ ও ২৯৮ পাতায় বলা হয়েছে, ২ নভেম্বর বিএনপির ১০৬ জন সাবেক সাংসদ এক যৌথ বিবৃতিতে সাইফুর-হাফিজের নেতৃত্বের প্রতি তাঁদের আস্থার কথা জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে ছিলেন আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, মাহবুবুর রহমান, সাদেক হোসেন খোকা, এম ওসমান ফারুক, রেজাউল করিম, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রেজাউল বারী ডিনা, মোশারেফ হোসেন শাজাহান, লুৎফর রহমান খান আজাদ, মে. জে. (অব.) মাহমুদুল হাসান, এহছানুল হক মিলন, মইনুদ্দীন ভূঁইয়া, গৌতম চক্রবর্তী, বিচারপতি মোজাম্মেল হক, জি এম সিরাজ, কবির হোসেন, নাজিমউদ্দিন আলম, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, শামসুল আলম প্রামাণিক, আবদুল মান্নান তালুকদার প্রমুখ। এদিকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ অভিযোগ করে বলেন, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মেজর হাফিজ।
পরদিন ৩ নভেম্বর বিএনপির ১৯ জন সাবেক সাংসদের নামে একটি বিবৃতিতে অস্থায়ী মহাসচিব হিসেবে খোন্দকার দেলোয়ারের প্রতি আস্থা জানানো হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, মঈন খান, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবর রহমান মনজু, নাদিম মোস্তফা, হারুনুর রশিদ খান মুন্নু, মিজানুর রহমান সিনহা, মুশফিকুর রহমান, আবু হেনা, উকিল আবদুস সাত্তার, সাঈদ এস্কান্দার, জিয়াউল হক জিয়া ও আবুল খায়ের ভুঁইয়া। এ ছাড়া আগের দিন সাইফুর-হাফিজ কমিটিকে সমর্থন জানিয়ে যারা বিবৃতি দিয়েছিলেন তাদের মধ্য থেকে নাজিমউদ্দিন আলম, এহছানুল হক মিলন, শাহজাহান ওমর, শামসুল আলম প্রামাণিক ও আবদুল মান্নান তালুকদার মত পরিবর্তন করে খোন্দকার দেলোয়ারের প্রতি আস্থা জানান।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।