নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ মার্চ, ২০১৯
আইএসে যোগ দেওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমার নাগরিকত্ব বাতিলের প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়ার ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিলের সম্ভাবনা বেড়েছে। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে পাওয়া গেছে, যদি এরকম তথ্য প্রমান পাওয়া যায় যে তারেক জিয়া জঙ্গিবাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। সেক্ষেত্রে তারেক জিয়া ব্রিটেনে যে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন, তা বাতিল করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে শামিমা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘শামিমা কোন দেশের বংশোদ্ভূত সেটা বড় কথা নয়। জঙ্গিবাদের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’ এই প্রেক্ষাপটে তিনি বলেছেন যে, ‘যারা ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে জঙ্গিবাদের মদদ বা পৃষ্টপোষকতা দিচ্ছেন, তাদের ব্যাপারেও ব্রিটেনের একই নীতি গ্রহণ করা হবে। ব্রিটেন তার ভূমিকে জঙ্গিবাদের লালন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দিবে না। জঙ্গিবাদের সঙ্গে তারা কোন রকম আপোস করবেন না।’
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরে তারেক জিয়ার জঙ্গি সম্পৃক্ততার একাধিক প্রমান উপস্থাপন করবে বলে জানা গেছে। এই তথ্য প্রমানগুলো যদি সঠিক বস্তুনিষ্ঠ হয় এবং ব্রিটিশ সরকার যদি তদন্ত করে সেটি সঠিক বিবেচনা করে, সেক্ষেত্রে তারেক জিয়ার রাজনৈতিক আশ্রয় সুযোগ বাতিল হয়ে যাবে বলে কূটনৈতিক প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশের কাছে তারেক জিয়ার জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার একাধিক প্রমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রমান হিসেবে যেটা আদালতে প্রমানিত হয়েছে। সেটা হলো, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা। এই গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক জিয়া প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাকিস্তান ভিত্তিক একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সহযোগিতা নিয়েছিলেন এবং এই গ্রেনেড হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য জঙ্গিরা অস্ত্র সংগ্রহ করেছিল এবং জঙ্গিরা অপারেশন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল বলে আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এই রায়ের সত্যায়িত কপি ইতিমধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কাছে আছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এর সত্যায়িত অনুলিপি তৈরী করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, তারেক জিয়া যে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং সংশ্লিষ্ট রয়েছেন, সেটা প্রমানের জন্য এই তথ্যটুকুই যথেষ্ঠ।
দ্বিতীয়ত, তারেক জিয়ার সঙ্গে জঙ্গিদের মদদদাতা এবং বিশ্বের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল দাউদ ইব্রাহিমের সম্পর্ক রয়েছে এবং তার সঙ্গে ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব রয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে পাওয়া গেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ইতিমধ্যে ২০০৮, ২০১০ এবং ২০১১ সালে তিনটি পৃথক প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তারেক জিয়ার আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে দাউদ ইব্রাহিম এবং তারেক জিয়ার একাধিক বৈঠক হয়েছে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশ সরকারের কাছে এরকম তথ্য প্রমাণ রয়েছে যে, ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করার সময় তারেক জিয়া বিভিন্ন জঙ্গিবাদি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, টেলিফোনে আলাপ করেছেন। বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্য তিনি তাঁদেরকে অর্থ দিয়েছেন। এই সমস্ত কাজের তথ্য প্রমাণও বাংলাদেশ সরকারের হাতে এসেছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার ব্রিটেনকে তদন্ত করতে বলবে।
চতুর্থত, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে তারেক জিয়া তাঁর রাজনৈতিক অফিস ‘হাওয়া ভবন’ একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে গোপন বৈঠন করেছেন বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পঞ্চমত, তারেক জিয়া একাধিক বক্তৃতায় বলেছেন যে, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল হলো একই মায়ের দুই সন্তান। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্তরা রয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির মার্কিন যুক্তরাষ্টের তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভূক্ত।
এই পাঁচটি ঘটনার একটি যদি ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর প্রমাণ পায় তাহলেই তারেক জিয়ার ব্রিটেনে থাকার কোনো অধিকার থাকবে না। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শামিমা কিশোরী বয়সে আইএস এর প্রতি আসক্ত হন এবং তিনি ব্রিটেন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আইএস কেন্দ্রে যান। সেখানে তিনি একজনকে বিয়ে করেন এবং তাঁর দুটি সন্তান চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করে। এখন তিনি তৃতীয় সন্তান সম্ভাবা হয়ে ব্রিটেনে ফেরার আবেদন করেছেন। কিন্তু ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর তাঁর আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করে। এটার মাধ্যমে ব্রিতেন সুস্পষ্ট বার্তা দিলো যে, যারাই ব্রিটেনে থাকবে তাঁদেরকে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক না রেখেই থাকতে হবে। এটা যদি প্রমাণিত হয় যে তারেক জিয়ার সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি তাঁদের মদদদাতা এবং পৃষ্ঠপোষক তাহলে তাঁর ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের আর কোনো সম্ভাবনা থাকবে না বলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এই বিষয়টি নিশ্চিত হবে বলে তাঁরা অভিমত ব্যাক্ত করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, শামিমার নাগরিকত্ব বাতিলের পর তারেকের রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন থামছে না। আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারসহ কোনো ধরনের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে। মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি মাঠ রয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারে অনেকেই সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ-নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। কমিশন তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।
নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি, খুনোখুনি, কেন্দ্র দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রার্থীরা। এ নির্বাচনের প্রচারের শুরু থেকেই বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপের নির্বাচন ৮ মে। এ ধাপে ভোট হবে ১৪৮ উপজেলায়। আজ দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২১ মে এ ধাপে ১৫৯ উপজেলায় ভোট। তৃতীয় ধাপে ২৯ মে ১১২ উপজেলায় ভোট। সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে ৫ জুন।
অনেকের অভিযোগ, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নানা ধরনের চাপ আসছে। আজ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য হুমকিধমকি ও চাপ দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে কিছু জায়গায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে এ শঙ্কার কথা জানান তাঁরা। নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ইসিকে বলেছেন, দলীয় কোন্দল ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার ঠেকানোই এ নির্বাচনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে কোথাও কোথাও সংঘাতের আশঙ্কার কথাও বলছেন তাঁরা।
তবে এ বিষয়ে অন্যতম নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। নির্বাচনে বিরোধী দল নেই। বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নির্বাচন খেলা। তবে নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জনগণের অনুপস্থিতি। নির্বাচন হচ্ছে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়া। কিন্তু এ নির্বাচনে প্রভাবমুক্ত হয়ে বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। আসলে এটা নির্বাচন নয়, মূলত প্রতিযোগিতা।’ এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) ইমামুল হক সাগর বলেন, ‘জাতীয় কিংবা স্থানীয় সব নির্বাচনেই পুলিশের বিশেষ কিছু দিকনির্দেশনা থাকে। এবারও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয় এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো এবং অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর যারাই নির্বাচন ঘিরে অপরাধমূলক কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
শাজাহান খানের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ : মাদারীপুরে উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে ডিসির ব্রিজ এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান তাঁর নির্বাচনি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। তিনি মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। শফিক খান অভিযোগ করেন, উপজেলা নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে আসিবুর রহমান খান। শাজাহান খান তাঁর ছেলেকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করছেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ওপর খবরদারি করছেন। কালো টাকা বিলির মাধ্যমে ভোট কেনার চেষ্টা, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ শফিক খানের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
শফিক খান বলেন, নির্বাচন কমিশনে ১৫টি অভিযোগ দিলেও সে বিষয়ে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি কমিশন। তিনি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা এবং ইলেকটোরাল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আবেদন জানান নির্বাচন কমিশনের কাছে।
তবে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসিবুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা শাজাহান খান এলাকায় থাকলেও তিনি নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহন করছেন না।’ শাজাহান খান নিজেও তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনোভাবেই নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহণ করিনি। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে : লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধা ব্যবহার করে মেয়র আবদুল মালেক একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন।
সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনি প্রচারের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী ও দলীয় প্রার্থী পরিচয় দেওয়ায় তাঁকে কারণ দর্শনোর নোটিস দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার। ২৪ ঘণ্টার মধ্য তাঁকে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়ার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম বলেন, ‘সুবর্ণচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুল আনাম চৌধুরী দলীয় প্রার্থী পরিচয় দিয়ে প্রচার করতে পারেন না। তিনি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এ নির্বাচনি আচরণবিধি অঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানো চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ এর আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সিরাজগঞ্জে সহিংসতা : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও কাজিপুর উপজেলায় ৮ মে ভোট। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। নির্বাচন সামনে রেখে বাগ্যুদ্ধ, হামলা এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে নিজ দলের কর্মীদের রক্ত ঝরানো শুরু হয়েছে। রবিবার রাতে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী বদিউজ্জামান বদি ফকিরের কর্মীরা অন্য প্রার্থী বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের দৌলতপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সেকান্দার মার্কেটে নির্বাচনি প্রচার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিধমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সাত বছরের জেল : নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটারদের বাধাগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের জেল হবে। এবারের নির্বাচন প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ হবে। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন নির্বিঘ্নে। ভোটে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে দেওয়া হবে না। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনি আচরণবিধি ও মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাচনে এবারই সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকছে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী সদস্য থাকবে। কেন্দ্রগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্যসহ ছয়জন অস্ত্রধারী সদস্য থাকবেন। এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না। একই সঙ্গে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সভা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের ভোট কেন্দ্রের জন্য আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে পরিমাণ সদস্য ছিল, সেটা যথেষ্ট পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রতিটি স্বাভাবিক কেন্দ্রে অস্ত্রসহ তিন পুলিশ, অস্ত্রসহ আনসারের পিসি ও এপিসি থাকবেন তিনজন। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্রধারী ছয়জন সদস্য থাকবেন। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ জন আনসার সদস্য থাকবেন ও ছয়টির বেশি বুথ আছে এমন জায়গায় একজন করে অতিরিক্ত আনসার সদস্য থাকবেন। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোয় অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য ও আনসার থাকবেন তিনজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবেন। উপজেলা নির্বাচনে এর আগে কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এত বেশি সদস্য ভোট কেন্দ্রে ছিলেন না।
সিনিয়র সচিব বলেন, যেহেতু ভোটের দিন ব্যালট পেপার পৌঁছানো হবে। এটা পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স। ব্যালট পেপার সেন্টারে পৌঁছানোর পর তাদের এলাকাভিত্তিক যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলাপ করে তারা যেটা বলবেন, সেভাবে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে এবারই এত বেশি অস্ত্রসহ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য থাকছেন। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। কাজেই ভোটও বেশি পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় স্থানীয় নির্বাচন সব সময় প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, গড়ে পাঁচটি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এ মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোয় বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে। উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার খবর নেই বলে জানিয়ে সচিব বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই। তার পরও প্রতিটি বাহিনী সতর্ক থাকবে। সব বাহিনীর প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটা সমন্বয় সেল হবে। নির্বাচনসংক্রান্ত অভিযোগ ৯৯৯-এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন থামছে না। আচরণবিধি অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা প্রচারসহ কোনো ধরনের নির্বাচনি কাজে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছে নির্বাচন কমিশনে। মন্ত্রী-এমপিরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনি মাঠ রয়েছেন। নির্বাচনি প্রচারে অনেকেই সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। প্রার্থীদের অভিযোগ-নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয় না। কমিশন তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।