নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১০ মার্চ, ২০১৯
বর্তমান সরকারের অধীনে যে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে শুরু হওয়া উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না দলটি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং নির্বাচনে সহযোগিতা করার কারণে ইতিমধ্যে দেড়শ’র বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। সুবিধাবাদী ও আদর্শহীনদের বিএনপি থেকে বের করার এই প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে তাদের এমন মনোভাবে নমনীয় নন তৃণমূলের নেতারা। বরং বহিষ্কৃত নেতাদের দাবি, তৃণমূলে দলকে শক্তিশালী করতেই তারা স্থানীয় এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখন পর্যন্ত শতাধিক উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতারা। ফলে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের। এমনকি যারা নির্বাচনে সহযোগিতা করছেন তারাও বহিষ্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন না। এই তালিকা প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে। আর এ কারণে একইসঙ্গে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে।
বিএনপির বহিষ্কৃত এসব নেতা বলছেন, এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার লক্ষ্যেই তারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। দল থেকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবে বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বগুড়া জেলা বিএনপির এক নেত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমি নির্বাচিত হবো। দলও আমাকে সাদরে গ্রহণ করবে। আমি প্রমাণ করে দেখাতে চাই এই এলাকা বিএনপির ঘাঁটি।’
তবে তৃণমূলের নেতাদের বহিষ্কারের এমন সিদ্ধান্ত দলে কোন প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু জানান, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো। যারা বার বার দলের সিদ্ধান্ত না মেনে কাজ করছে বা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবোই। আমরাও চাই দলে এবং তৃণমূলে নতুন নেতৃত্ব আসুক।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, বিএনপিকে ঢেলে সাজানো এবং দলে শুদ্ধাভিযানের অংশ হিসেবেই এসব সুবিধাবাদী নেতাকর্মীদের চিহ্নিত ও তাদের দল থেকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ নিয়েছে বিএনপি। এতে দলের কোন ক্ষতি হবে না বরং লাভই হবে বলে মনে করেন তারা।
তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন কঠোর সিদ্ধান্তে টলছেন না তৃণমূলের এসব নেতারা। তারা মনে করেন, তৃণমূল বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্য নির্বাচনে অংশ নেয়া অপরিহার্য। নির্বাচন বর্জন কোন সমাধান নয়। বরং নির্বাচন বর্জন করলে সেখানে ক্ষমতাশীন দলের নেতারা নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে একাধিপত্য বিস্তার করবে। তখন তৃণমূল বিএনপির অস্তিত্বও সংকটের মুখে পড়তে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।