নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৬ মার্চ, ২০১৯
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে যোগ দেওয়া একটা মিশেল দল হলো বিএনপি। জামাত-মুসলিম লীগ নেতাদের বিএনপিতে যোগদানকারীর সংখ্যা যেমন কম নয়, তেমনি বিভ্রান্ত বাম থেকেও বিএনপিতে যোগ দিয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেনে অনেকে। জাতীয় পার্টি থেকেও বিএনপিতে আসা নেতাকর্মীর সংখ্যা কম নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে সাবেক জাপার নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন এবং জাপার চাপে অতিষ্ঠ হয়েছে মূল বিএনপি। বিএনপির মূল নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টি থেকে আগতরা এখন মূল বিএনপির জন্য আপদে পরিণত হয়েছে। এরা দলের মধ্যে হতাশা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এরা দলকে বিভক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এরাই নানা রকম কথা বলে কর্মীদের বিভ্রান্ত করেছে এমন অভিযোগ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের। বিএনপিতে জাপা থেকে আসা নেতার সংখ্যা নেহায়তই কম নয়। কিন্তু জাতীয় পার্টি থেকে আসা কয়েকজন নেতা এখন দলের মধ্যে বিঁষফোড়া হয়ে দেখা দিয়েছে বলে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় একাধিক নেতা বলেছেন। দুদিন আগে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় জাপা থেকে আগত শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বিএনপির মহাসচিবের কঠোর সমলোচনা করেছেন। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তীব্র সমলোচনা করে বলেছেন যে, এ ধরনের ফ্রন্ট দরকার নেই। ঐ অনুষ্ঠানে তিনি এটাও বলেন যে,আমাদের নেতা খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কাউকে নেতৃত্ব দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোন দরকার নেই। ঐ অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। মির্জা ফখরুল ঐ অনুষ্ঠানেই শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সমলোচনার জবাব দেন। তিনি বলেন যে, তিনি যা কিছু করেছেন সবকিছু বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলনে যাদেরকে পাই না। তারাই এরকম সমলোচনা করে। কিন্তু এই ব্যাপারটি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। এই অনুষ্ঠানের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তীব্রভাবে আক্রমন করেন শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনকে। তিনি বলেন,‘দলের মধ্যে আপনারা বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন। দলের হতাশা বাড়াচ্ছেন। হাত তালি দেওয়ার জন্য অনেক দামি দামি কথা বলা যায়। কিন্তু কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের জন্য লোক পাওয়া যায় না। শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন নব্বই পর্যন্ত স্বৈরাচারী এরশাদের অন্যতম আস্থাভাজন ছিলেন এবং অন্যতম চাটুকার ছিলেন। তিনি তার বিভিন্ন বক্তৃতায় বিএনপি এবং আওয়ামী লীগকে তীব্রভাবে সমলোচনা করতেন। দু্ই নেত্রী মিলিত হলে কিছুই উৎপাদিত হয় না এমন অশালীন কথার জন্মদাতা এই শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। তার বক্তব্যকে দুর্ঘন্ধময় বলেও উল্লেখ করতেন রাজনীতিবিদরা। সেই শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এখন বিএনপিতে এসে দলটির আপদে পরিনত হয়েছে।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে সবচেয়ে প্রথম যিনি দল পুনর্গঠনের কথা বলেন এবং নেতৃত্বের ব্যার্থতার কথা বলেন তিনি হলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি এরশাদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির অন্যতম নীতিনির্ধারক ছিলেন তিনি। নব্বইয়েও এরশাদের ছেড়ে দেওয়া রংপুরের একটা আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে তিনি সংসদে এসেছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে ডিগাবাজিতে যারা বিখ্যাত তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই মওদুদ আহমেদ। তিনি বিএনপির এখন অন্যতম নীতি নির্ধারক এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য। এই নেতা ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। দলকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রায় অনুপস্থিত। কোন কর্মসূচীতে তাকে দেখা যায় না। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে। তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ফোরামে বিএনপিরই কঠোর সমলোচনা করছেন। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, এ ধরনের বক্তব্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ যখন বলছেন তখন দলের ভিতর অনৈক্য তৈরী হচ্ছে। ব্যারিস্টার মওদুদের আরেকটা পরিচিতি হলো তিনি খালেদা জিয়ার আইনজীবি ছিলেন এবং নাইকো দুর্নীতি মামলার অন্যতম কুশলী। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন যে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা। খালেদা জিয়ার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া এই সবকিছু হয়েছে মওদুদের কারসাজিতেই। মওদুদকে দলের কেউই যেমন বিশ্বাস করেন না, তেমনি এখন থাকে দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য এবং দলের বিভক্তি সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
বিএনপির আরেক নেতা হলেন নিতাই রায় চৌধুরী। তিনিও হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের ঘনিষ্ঠ নেতা ছিলেন। তিনিও পরে বিএনপিতে যোগদান করেন। যারা দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরী করতে চাইছেন এবং দলের বর্তমান নেতাদের সমলোচনা করছেন অথচ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করছেন না তাদের অন্যতম হলেন নিতাই রায় চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বিভিন্ন বক্তব্যে সরকারের সমলোচনা করার বদলে বিএনপির সমলোচনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মূল ধারার বিএনপি যারা তারা এক বৈঠকে মিলিত হয়ে জাপা থেকে আগতদের অতিকথনে বিরক্তী প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন যে, এখন দায়িত্ব হলো সরকারের সমলোচনা করা, সরকারের ভুলত্রুটিগুলো জনগনের সামনে তুলে ধরা। আন্দোলন সংগ্রামের জন্য কর্মী নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করা। কিন্তু তা না করে যারা বিএনপির মধ্যেই সমলোচনা করছেন। বিএনপির গীবত গাইছেন, বিএনপিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন। তাদের নিশ্চয়ই অন্যকোন মতলব আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, জাপা থেকে যারা বিএনপিতে এসেছেন বা অন্য দল থেকে যারা বিএনপিতে এসেছেন, তাদেরকে কেনাকাটা করা সহজ। তারা সরকারের ইশারায় এটা করছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বলেছেন, যারা সরকারের সমলোচনা না করে বিএনপিকে সমলোচনা করছে। বিএনপির মধ্যে হতাশা ছড়াচ্ছে। তাদের নিশ্চয়ই অন্যকোন মতলব আছে। তারা দলের শুভাকাঙ্খি নন। এবং তার এই বক্তব্যের পরই বিএনপিতে জাপা নেতাদের অতিউক্তিতে অস্বস্তি বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাপার নেতারা কেন এত বাড়াবাড়ি কথাবার্তা বলছেন, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আজকালের মধ্যেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হবে এবং সে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যদি বিএনপি নিয়ে কোন সমলোচনা থাকে বা বিএনপির জন্য যদি কোন পরামর্শ থাকে তাহলে দলীয় ফোরামে দিতে হবে। প্রকাশ্য সভায় বা সেমিনারে এ ধরনের মুখরোচক বক্তব্য দিয়ে হাততালি নেওয়ার যদিগ চেষ্টা করা হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন