নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৫ এপ্রিল, ২০১৯
আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। তিনি মন্ত্রী- এমপি কিছুই নন। তার এলাকায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো, যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি একজন প্রতিমন্ত্রী। ঐ প্রতিমন্ত্রী বয়সে-রাজনীতিতে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের জুনিয়র। বিব্রত যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ‘অসুস্থ’ বলে নিজেকে ঘোষণা দিলেন এবং অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেন। এরকম ঘটনা এখন হারহামেশাই ঘটছে আওয়ামী লীগে। জামালপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের সাত বারের এমপি, তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী। আবার ঐ এলাকা থেকেই একজন এবার প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তাদের সম্পর্ক অনেকটাই গুরু-শিষ্যের। অথচ ঐ এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রীই প্রধান অতিথি। সিনিয়র নেতা বিব্রত হলেও মেনে নিয়েছেন পরিস্থিতি। অনুজের নেতৃত্বেই কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এরকম অনেক সদস্যই এখন বিব্রত। কোন দলীয় অনুষ্ঠান বা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচীতে যাবার আগে তারা জেনে নিচ্ছেন, অতিথি কারা। যদি সরকারী অনুষ্ঠান হয়, তাহলো তো কথাই নেই, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকে সরকারী কর্মকর্তারা পাত্তাই দেন না, ব্যস্ত থাকেন মন্ত্রী এমপিকে নিয়ে।
এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়ে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা এখন সরকারী অনুষ্ঠানে যাওয়া বন্ধই করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, এমপিদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকে, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য সংরক্ষিত কিছু থাকে না। এনিয়ে নানা জটিলতা, মান-অভিমানের খবর স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছেছে। এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী একাধিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতাদের মঞ্চ বা কাছে ডেকে নিয়েছেন, যিনি মন্ত্রী এমপি নন। কিন্তু একা প্রধানমন্ত্রী কদিক সামলাবেন? এজন্যই অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে, ক্ষমতাসীন দলে মন্ত্রী এমপি ছাড়া নেতৃবৃন্দের অবস্থান কি তা জানার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি নিজস্ব টিমকে। একমাত্র ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশে এটি বড় কোনো ইস্যু নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনে মন্ত্রী বা এমপিদের জন্য আলাদা প্রটোকল বা মর্যাদার বিশেষ ব্যবস্থা নেই। ভারতের পরিস্থিতি পুরোপুরি বাংলাদেশের মতোই। তবে, ভারতে সব দলগুলোরই এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কংগ্রেসে একজন সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য যিনি মন্ত্রী এমপি নন, তিনি মন্ত্রীর চেয়েও মর্যাদাবান হিসেবে বিবেচিত হন। একই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী থাকলে সেখানে যদি সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য থাকেন তাহলে তিনিই ‘মূখ্য অতিথি’ হবেন। আবার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য যদি এমপি নাও হন তাহলেও তিনি এমপির চেয়েও দলের মর্যাদা পাবেন। দলীয় অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতাকেই মূখ্য অতিথি করতে হবে। ভারতের সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেসেও একই রকম মর্যাদা দেওয়া আছে। সম্প্রতি বিজেপি এক ধাপ বাড়িয়ে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বিজেপি বা যেকোনো রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আসন এমপিদের আগে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে বিষয়টি নতুন। আগে এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু এখন এমপির সংখ্যা বেশি। এরকম পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং সুনিশ্চিত করার তাগিদ এসেছে। অঅর এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির টিম এ সংক্রান্ত একটি সুপারিশ চুড়ান্ত করেছে। এতে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অবস্থান মন্ত্রীর উপরে, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা মন্ত্রীর সমমর্যাদায় এবং প্রতিমন্ত্রীর উপরে। আর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মর্যাদা এমপিদের উপর থাকবে।
কোন অনুষ্ঠানে কাউকে অতিথি করা হলে বা আমন্ত্রণ জানানো হলে এই প্রটোকল অনুসরণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি যদি এটা অনুমোদন করেন, তাহলে দলের ভেতর দলীয় কর্মসূচী পালনে এরকম নির্দেশনা দেয়া হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।