নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৭ এপ্রিল, ২০১৯
সরকারী কর্মকর্তা থেকে মন্ত্রী এমপি সবাই এখন এটা জানেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর পৌঁছে সবার আগে। মন্ত্রণালয়ের হাড়ির খবর থেকে শুরু করে, কোন মন্ত্রী কোথায় যান, কোন আমলা কতটা সৎ—প্রধানমন্ত্রী সব অবলীলায় বলে দিতে পারেন। কোন কাজ কে পারবে আর কে পারবে না- এই সিদ্ধান্তে শেখ হাসিনার জুড়ি মেলা ভার। শুধু সরকার পরিচালনায় নয়, দল পরিচালনায় তার তথ্য ভাণ্ডার অনেক সমৃদ্ধ। কোন নেতা কোথায় দলের সমালোচনা করলো, কে এলাকায় গ্রুপিং করছে, কোন নেতা গোপনে অন্য দলের সঙ্গে সখ্যতা করছে- এসব খবর সম্ভবত আওয়ামী লীগ সভাপতির আগে কেউ পায় না। এজন্যই প্রধানমন্ত্রী সরকার বা দল পরিচালনায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এজন্যই সরকার এবং দলে তার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব। প্রধানমন্ত্রীর নির্ভুল তথ্য পাওয়া নিয়ে বিতর্ক নেই। এ নিয়ে অনেক মজার গল্পও আছে। কিন্তু বিতর্ক আছে তার তথ্য প্রাপ্তির উৎস নিয়ে। সাধারণত সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের তথ্য প্রাপ্তির প্রধান উৎস হলো গোয়েন্দা বিভাগ। শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেও গোয়েন্দা তথ্য সরকার বা রাষ্ট্র প্রধানদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সবচেয়ে বড় উৎস। বাংলাদেশে, জিয়াউর রহমান তার মন্ত্রীদের বিশ্বাস করতেন না, তিনি চোখ বুঝে গোয়েন্দা তথ্যে চলতেন। এরশাদও তাই ছিলেন। বেগম জিয়া গোয়েন্দা তথ্য নিলেও তিনি সম্পূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের উপর নির্ভর করতেন না। দ্বিতীয় মেয়াদে গোয়েন্দা তথ্যের চেয়েও তিনি তার ছেলে, ভাইয়ের তথ্যের উপর বেশী নির্ভর করতেন। এসব দিক থেকে ব্যতিক্রম এবং সম্পূর্ণ আলাদা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী কারো একক তথ্যের উপর নির্ভর করেন না। বরং বিভিন্ন উৎস থেকে প্রধানমন্ত্রী তথ্য গ্রহণ করেন এবং যাচাই বাছাই করেন। একারণেই অনেক গোয়েন্দা তথ্য তিনি চ্যালেঞ্জ করেন, জানিয়েছেন, এনিয়ে নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করতে। কিভাবে নির্ভুল তথ্য পান প্রধানমন্ত্রী? এব্যাপারে অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক প্রাপ্তির উৎস মোটামুটি ৫টি।
প্রথমত; একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য দেয়।
দ্বিতীয়ত; প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্টাফরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য দেন।
তৃতীয়ত; প্রধানমন্ত্রী প্রচুর বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে মেশেন, তাদের কাছ থেকে পান অনেক তথ্য।
চতুর্থত; তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতা কর্মীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। এরা প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করেন। ব্যস্ত না থাকলে তাদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চান। অনেক স্থানীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে নানা বিষয় ক্ষুদে বার্তাও পাঠান।
পঞ্চমত; তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর একান্ত একটি বিশেষ টিম আছে। যারা খুবই সাধারণ। এরা সাধারণ চাকরী করেন অথবা ছোট খাট ব্যবসায়ী কিংবা গবেষক। এরা বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানসহ নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, যে বিষয়ের তথ্য প্রধানমন্ত্রী জানতে চান। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, সবগুলো উৎসের তথ্য যাচাই বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেন শেখ হাসিনা। সে কারণেই তার সিদ্ধান্ত গুলো হয় বিচক্ষণ।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।
সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।
তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।
বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।
প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।
উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।
অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।
বিএনপি রাজনীতি মির্জা ফখরুল তারেক জিয়া ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।