নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ছাত্রলীগের সভাপতি, সেক্রেটারী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যেভাবে তিন দফায় গোয়েন্দা অনুসন্ধান হয়েছিল, যাদের অন্তত তিন প্রজন্ম অন্তত আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত তাদেরকেই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে নেওয়া হয়েছিল, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের চার নেতাকে কমিটি গঠনের জন্য নাম সুপারিশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ তারিখ থেকে প্রধানমন্ত্রী তিনদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ব্রুনাই থাকবেন। ব্রুনাই থেকে ফিরে এসে তিনি ৩০শে এপ্রিলের মধ্যেই কমিটি চূড়ান্ত করবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে ৩০শে এপ্রিলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে হবে। যে চারজন নেতাকে কমিটি গঠনের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। তারা এটা নিয়ে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্ব এবং প্রাক্তন নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
অন্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে ইতিমধ্যেই ছাত্রলীগের সম্ভাব্য কমিটিতে যারা থাকতে পারেন বা যারা পদলাভে ইচ্ছুক তাঁদের ব্যাপারে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি নিজস্ব টিম যারা মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক তাঁদের তাঁদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে রিপোর্ট দিচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, যারা ছাত্রলীগের পদলাভের জন্য এর আগে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছিল তাঁদের মধ্য থেকে বেশ কয়েকজন এই ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকবে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী এবার নিজেই এই কমিটি করছেন। যাতে কমিটি কোন্দল মুক্ত ও বদনাম না করে। ছাত্রলীগের এবারের নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী গোয়েন্দা অনুসন্ধান করেছিলেন। যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই, তাদেরকে কমিটিতে রাখা হবে। যেসমস্ত বিষয়গুলো কমিটি গঠনের ব্যাপারে বিবেচনা করা হবে:
১. ছাত্রলীগের কমিটিতে যারা থাকবেন তারা অবশ্যই মূলত ছাত্রলীগ করতে হবে। অন্যদল থেকে আসা কেউ কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারবে না।
২. পৈত্রিক সূত্রে তার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে। পরিবারের কেউ অন্য রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে ছাত্রলীগে নেওয়া হবে না।
৩. তাদের বিরুদ্ধে কোন চাদাবাজি সন্ত্রাস বা টেন্ডারবাজির মামলা থাকতে পারবে না।
৪. ছাত্রলীগের কমিটিতে অপেক্ষাকৃত মেধাবী এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৫. যারা বিভিন্ন সময় এই সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন। ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু কোন পদ পদবি পাননি। তাদেরকেও এই সংগঠনের নেতৃত্বে আনার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
একটি সূত্র বলছে যে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটির হাতে একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এই তালিকা নিয়েই চার সদস্যের কমিটি খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার সঙ্গে বৈঠক করে সুপারিশ দিবেন এবং এর পরই ছাত্রলীগের কমিটি চুড়ান্ত করা হবে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন