নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২২ এপ্রিল, ২০১৯
শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুরো বিশ্ব শোকে বিহ্বল। পুরো বিশ্ব যেন শোকের চাদরে ঢেকে গেছে। এরকম একটি বর্বোরচিত ঘটনা শ্রীলঙ্কায় যে ঘটবে তা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। শুধু শ্রীলংকা নয়, কয়েকদিন আগে নিউজিল্যান্ডের ঘটনাও পুরো বিশ্বকে একাট্টা করেছিল।
কূটনৈতিক বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরণের ঘটনার পর যেভাবে বিশ্ব মানবতা সোচ্চার হয়েছে, যেভাবে ওই দেশগুলো তৎপর হয়েছে, ঘটনার আগে সতর্কতা অবলম্বনের ক্ষেত্রে তারা ততটাই ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার ঘটনার ক্ষেত্রে বলা যায় দশ দিন আগে সেখানকার পুলিশ প্রধান এক সতর্কবার্তা দিয়ে এরকম একটি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সতর্কবার্তা পাওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকার কোনো কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারেনি। ঘটনাটি যদি আমরা আমরা বিশ্লেষণ করি তাহলে আমরা দেখতে পাবো যে, ৮ টি স্থানে বোমা হামলার ঘটনা আলাদা আলাদা ঘটেছে এবং তারপরও আইন প্রণয়নকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শ্রীলঙ্কার চেয়েও বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশী ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গিবাদ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করেছিল এবং বিভিন্ন মহল থেকে সন্ত্রাসীদেরকে মদদ দেয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। এরকম নজির থাকার পরও বাংলাদেশ আজ বিশ্বে অন্যতম নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ক্রমশ বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। দেখা যায় যে, শ্রীলঙ্কার ঘটনার পর বিভিন্ন আলোচনায় বাংলাদেশের কথা উঠেছে। বাংলাদেশ যেভাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করেছে সেটা অনুকরণীয় উদ্যোগ। বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, তাঁর দূরদৃষ্টি এবং তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কারণেই বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের থাবা থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পেরেছে এবং জঙ্গিবাদমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে সারাবিশ্বে রোল মডেলে নিজেদেরকে উদ্ভাসিত করেছে। শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ নিরাপদ। কী কী পদক্ষেপ শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছেন যে কারণে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমন করা গেছে? জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেনি? বাংলাদেশ কোনো সন্ত্রাসবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়নি?
১. গণজাগরণ তৈরি: বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্বতস্ফুর্ত একটা গণজাগরণ তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ জঙ্গিবাদকে অপছন্দ করে, সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে ঘৃণা করে। হলি আর্টিজানের পর দেখা গেছে যে সমস্ত সন্তানরা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তাঁদের লাশ গ্রহণে পর্যন্ত তাঁদের পরিবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সামাজিকভাবে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা তৈরি করা হয়েছে যেটি একটি অনুকরণীয় উদাহরণ। যে কারণে সাধারণ মানুষ থেকে সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এটা বাংলাদেশে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনে একটা প্রধান উপাদান বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করে।
২. আগাম সংকেতকে মূল্যায়ণ করা: রাষ্টনায়ক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলি আর্টিজান ঘটনার পর থেকে গোয়েন্দা তথ্য আদান প্রদান এবং গোয়েন্দা নেটওয়ার্ককে উন্নত করার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে দইফায় দফায় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। তাঁদেরকে তথ্য নেটঅয়ার্ক উন্নত করা, তথ্য আদান প্রদান এবং যেকোনো তথ্য পেলে তা দ্রুত যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এই নির্দেশনাগুলো যথেষ্ট কাজে দিয়েছে এবং সেজন্যই দেখা য্যা যে হলি আর্টিজানের ঘটনার পর বাংলাদেশে কোনো জঙ্গিবাদের বড় ধরণের ঘটনা ঘটনা ঘটতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে কোনো তথ্যকে ক্ষুদ্র করে দেখা নয় কোন তথ্যকেই অবিশ্বাস করা না। এই নীতি নিয়েই বাংলাদেশ এগুচ্ছে। যেটার ফল বাংলাদেশ পাচ্ছে।
৩. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আধুনিক এবং এ বিষয়ে আলাদা সেল করা: বাংলাদেশ হলি আর্টিজনের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাস দমনের জন্য আলাদা সেল এবং আলাদা নেটওয়ার্ক গড়েছে। জঙ্গিদের কার্যক্রম কেমন হতে পারে, জঙ্গিরা সন্ত্রাসীরা কিভাবে কাজ করতে পারে সে বিষয়গুলো নিয়ে উন্নত প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে। জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পৃথক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। যার ফলে যে কোন জঙ্গি তৎপরতার অঙ্কুরেই তার মূল উৎপাটন করা সম্ভবপর হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষে। এটা বাংলাদেশের একটা বিরাট অর্জন। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনা এবং বিচক্ষণতার কারণেই এটা সম্ভবপর হয়েছে বলে জানা গেছে।
৪. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি: বাংলাদেশ একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা অনন্য উদাহরণ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এখানে যেকোন ধর্মের লোকরা তাদের ধর্ম ও অনুশাষন সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারেন। তা রাষ্ট্র এবং সরকার নিশ্চিত করেছে। যার ফলে কোন ধর্মই নিষ্পেষিত নয়, কোন ধর্মই উপেক্ষিত নয়। ধর্ম বিরোধী প্রচারণা যেন না করা যায়, সে ব্যাপারেও সরকার সচেতন। যার ফলে বহু মত বহু ধর্মের চিন্তাকে এক সূত্রে গেথে একটি দেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধনে রাখার একটি দৃষ্টান্ত হলো বাংলাদেশ। যে কারণে বাংলাদেশে ধর্মের নামে হানাহানি সন্ত্রাস, সহিংসতা বন্ধ হয়ে গেছে।
৫. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: একটি দেশে যখন অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিপ্লব ঘটে। তখন সেই দেশের মানুষ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে না। তরুণ সমাজকে ডিজিটাল উদ্ভাবনের দিকে নিয়ে যাওয়া। তরুণদের কর্মসংস্থান এবং তাদের সামনে স্বপ্ন তুলে ধরা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। এটার ফলে তরুনরা হতাশ হয় না। তারা রাষ্ট্রের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে নিজেদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে।
এই বাস্তবতার দৃশ্যপট দেখা গেছে বাংলাদেশে। যে কারণে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি থাকা সত্বেও বাংলাদেশই একটি নিরাপরাধ রাষ্ট্র হিসেবে আভির্ভূত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ নব্বই এবং ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে তথাকথিত জিহাদ এবং জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে ছিল। সেই বাংলাদেশই এখন বিশ্বে নিরাপরাধ রাষ্ট্র। বিশ্বে জঙ্গি মুক্ত এবং সন্ত্রাস মুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে রোল মডেল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতারই ফল এটি বিশ্লেষকরা মনে করে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোর্ড সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।