নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০১ পিএম, ২২ এপ্রিল, ২০১৯
শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার ঘটনা সারা বিশ্বকে আলোড়িত করেছে। সারা বিশ্ব এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। বিশ্ববাসী শোকে স্তব্ধ। বাংলাদেশেও এই শোকের ঢেউে এসে লেগেছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরী নিহত হয়। যে শোক বাংলাদেশে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। পুরো দেশ শোকাহত। কিন্তু দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে দাবিদার বিএনপির এই বিষয় নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। এ বিষয় নিয়ে তারা একেবারে নীরব। আজ এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিএনপি এ ব্যাপারে কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানায়নি। এ ঘটনার জন্য শোক বা নিন্দা প্রকাশ করেনি। এমনকি একটি শিশু মারা গেছে, তার জন্য যে সমবেধনা জানানো বা সেই শিশুর শোক সন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাড়ানোর সৌজন্যতা পর্যন্ত দেখায়নি। এটাই বিএনপির রাজনীতির অবস্থা।
গত এক বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি খালেদা জিয়ার মুক্তি আর তারেক জিয়ার দেশে ফেরার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এছাড়া জনগনের কল্যান, জনগনের দাবি দাওয়া নিয়ে কোন ইস্যুতেই তাদের স্বোচ্ছার দেখা যায়নি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো যে, বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক জিয়ার বিষয় ছাড়া গত এক বছরে তেমন বক্তৃতা বিবৃতিও দেয়নি। যদি দিয়েও থাকে কোন ইস্যু নিয়ে বক্তৃতা বিবৃতি, সেটা অন্য দল শুরু করেছে সেটার সমর্থন জানিয়ে।
একটি রাজনৈতিক দল জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটায়। একটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে জনগণ তাঁদের ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে চায়। যখন একটি রাজনৈতিক দল দেউলিয়া হয়ে পরে, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরে, জনগণের সঙ্গে যখন সম্পর্কহীন হয়ে পরে তখন সেই রাজনৈতিক দল জনগণের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিইয়ে কথা বলতে পারে না। আজকের বিএনপির বাস্তবতা হলো সেটাই। বিএনপির নেতারা অবিরল ধারায় খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তিনি কবে মারা যাবেন তাঁর ফিরিস্তি দিচ্ছেন কিন্তু সারা বিশ্বে মানবতার যখন বিপর্যয় ঘটছে তখন তারা নিরব। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ বা আদর্শিক বিরোধ থাকতেই পারে কিন্তু যখন জায়ান মারা গেলো সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা যখন ওই শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাড়িয়েছে তখন বিএনপি আলাদা। ঠিক যেভাবে বিএনপি আলাদা জনগণ থেকে।
জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলের কি পরিণতি হতে পারে সেটা বিএনপিকে দেখলেই বুঝা যায়। বিএনপি কেন শিশুটি নিহত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে শোক জানায়নি সেটা জানতে চেয়ে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ‘হ্যাঁ আমরা বুঝেছি। এটা আমাদের মনে ছিল না। আমরা হয়তো খুব শীঘ্রই যাবো। আগামীকাল আমরা শোক প্রকাশ করবো। ইত্যাদি।‘ অর্থাৎ রাজনীতির যে ন্যুনতম সৌজন্যতাটুকুও বিএনপির মধ্যে লোপ পেয়েছে। তারা এসব বিষয় নিয়ে ভাবার মতো অবস্থায় নেই বলেই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।