নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯
সারাদেশে আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিজান শুরু হয়েছে। যারা ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তাদের মধ্যে যারা সন্দেহভাজন, তাদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ৫ টি বৈশিষ্ট্য চুড়ান্ত করেছে। এ বৈশিষ্ঠ যাদের মধ্যে রয়েছে তাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে বলে আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। এই ৫ টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে:
১. যারা ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে তারা যদি বিএনপি-জামাত থেকে যোগদান করেন তাহলে তারা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
২. যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাস, নাশকতা এবং অন্যকোন অপরাধ তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকে। তাহলে তারা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
৩. তারা যদি মাদক ব্যাবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকেন, তাহলে তারা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
৪. তারা যদি কোন জঙ্গি বা সন্ত্রাসীকে জামিন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখেন বা জামিনের জন্য তৎপরতা চালান তাহলে তারা সন্দেহভাজন হিসেবেই গৃহীত হবে।
৫. তারা যদি দলের স্বার্থের বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তাহলে তারা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এরকম সন্দেহভাজনের সংখ্যা অসংখ্য। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন যারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দলের মধ্যে ঢুকেছে তাদের অনেকেরই মতলব ভালো না। এরা অনেকেই দলের মধ্যে সুবিধা আদায়ের জন্য ঢুকেছে এবং দলের বিভিন্ন অপকর্ম করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার তৎপরতা চালাতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন। এই প্রেক্ষাপটেই তিনি এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন এবং নির্বাচনের আগেই তিনি সারাদেশে এ ব্যাপারে অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা প্রনয়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্বাচনের ব্যস্ততার জন্য এই তালিকা প্রনয়নের কাজ বিলম্বিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের আটজন সাংগঠনিক সম্পাদক যৌথভাবে সারাদেশে যারা যৌথভাবে ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে তাদের একটি তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং তাদের সম্বন্ধে কতগুলো সুনির্দিষ্ট তথ্য চান। এই তথ্যগুলোর ভিত্তিতেই যাচাই বাছাই করে এরকম দশ হাজার ব্যাক্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা আওয়ামী লীগের আপদ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই সাংগঠনিক রিপোর্টটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তারপরেই তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা দিবেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, ২০০৮ সাল থেকে ধরা হলেও সাংগঠনিক রিপোর্টে ধরা হয়েছে, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের পর আওয়ামী লীগে বিএনপি এবং জামাত থেকে ব্যাপক অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন জাযগায় আওয়ামী লীগ জামাতের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশের পেছনে মদদ দিয়েছেন স্থানীয় এমপি এবং প্রভাবশালীরা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় তিনহাজারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সন্ত্রাস সৃষ্টি, নাশকতা বিশেষকরে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী নির্বাচন প্রতিহত করা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর হরতালের নামে অগ্নি সংযোগ, গাড়ী ভাংচুর এবং মানুষ হত্যার অভিযোগ ছিলো। এই সমস্ত অভিযুক্তরাই নিজেদের মামলা থেকে বাচার জন্য আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগে যোগদানে অনেক সময়ই আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এরা আওয়ামী লীগে যোগদান করেই প্রথম যে কাজটি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাদের মামলাগুলো প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে বা তাদের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা ভূমিকা রেখেছে বলে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন। এছাড়াও তারা তাদের যে সঙ্গী, বিএনপি জামাতে যারা অভিযুক্ত ছিলেন তাদের মামলা থেকে বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগে ঢুকে তদবির করেছেন বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় যে প্রকার অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদেরকে সুবিধাবাদী হিসেবে বলা হচ্ছে। এরা ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে ঢুকেছে মূলত ব্যবসায়িক এবং অবৈধ সুযোগ সুবিধা নেওয়ার জন্য। এরা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেই দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মী এবং এমপিদের খুশি করে একটা প্রভাব বলয় বিস্তার করেছিল এবং তারা বিভিন্ন টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য এবং অন্যান্য আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলেছে এবং এরফলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছিল। কিন্তু এরা দলের মধ্যে দলের প্রভাবশালীদের আনূকুল্যে এত প্রতিপত্তির এত ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছে যে, তারাই এখন অনেক জায়গায় মূল আওয়ামী লীগকে কোনঠাসা করে ফেলেছে। কারণ আর্থিক দিক থেকে এরা অনেক সামর্থ্যবান এবং শক্তিশালী। তাদের অবৈধ ব্যবসা বাণিজ্যের একটি বড় অংশ প্রভাবশালীরা পাচ্ছে বলে সাংগঠনিকভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেনীর অনুপ্রবেশকারীর যে চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা একেবারেই সামাজিক অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা। এসব অপরাধ থেকে বাঁচার জন্য, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার থেকে রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে মাদক ব্যবসায়ী, অনেকে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এদের অনেকেই নানা রকম উপঢৌকন দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বলে সাংগঠনিক রিপোর্টে বলা হয়েছে।
মজার ব্যাপার হলো যারা আওয়ামী লীগে এভাবে অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের কারোই আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়টি কেন্দ্রে অভিহিত করা হয়নি। স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দই এই যোগদানের কার্যটি সম্পন্ন করেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের পূর্ব পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগে প্রবেশ করার পর দেখা হবে তারা কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা। যদি তারা দলের স্বার্থ বিরোধী কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এই সন্দেভাজন ব্যক্তিরা আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে কোন পর্যায়ে কোন রকম পদ যেন না পায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোর্ড সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।
ওবায়দুল কাদের গত তিন সপ্তাহ ধরে লাগাতার ভাবে দলের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা যেন নির্বাচনে না দাঁড়ায় সে জন্য আহ্বান জানাচ্ছিলেন। এ জন্য তিনি কঠোর হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছিলেন। তিনি বলছিলেন, যারা দলের নির্দেশনা লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু ব্যবস্থাগ্রহণ তো দূরের কথা তাদেরকে সতর্ক পর্যন্তও করা হয়নি। উল্টো ৩০ এপ্রিলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই বিষয় নিয়ে কোন আলোচনাই হয়নি।