নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০১৯
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটি সরকারের মেয়াদ হলো পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর জাতীয় নির্বাচন হয়, যার মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন হয়। জনগন যাকে ভোট দেয় তিনি বিজয়ী হয়ে সংসদে আসেন। এটা বিরল ঘটনা যে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ পরপর তিনবার নির্বাচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার তিনবার নির্বাচিত হলেও বারবারই কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভার রদবদল করেছে। যেন একটা পুরোনেতে অস্বস্তি না হয়। কাজেই আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা চিরস্থায়ী হয়নি। বরং বার বার রদবদলের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার মধ্যে একটি নতুনত্ব উম্মোচিত হয়েছে। অন্যদিকে টানা দশ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ব্যাপারেও কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। যদি না তার প্রয়োজন হয়। একই সঙ্গে প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তারা যেন যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি পান সেটাও বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু এরকম পরিস্থিতির মধ্যেও কয়েকজন রয়েছেন, যারা চিরস্থায়ী। যাদের কোন পরিবর্তন নেই। সরকারের মন্ত্রীরা পরিবর্তন কিংবা সচিবরা অবসরে গেলেও তারা চিরস্থায়ীভাবেই তাদের পদে বহাল রয়েছেন। এরকম কয়েকজনকে নিয়েই প্রতিবেদন:
সম্পদ বড়ুয়া: রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব সম্পদ বড়ুয়া দ্বিতীয়বারের মতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। ২০১৭ সালের ৪ মার্চ তার অবসারত্ব ছুটিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু অবসারত্ব ছুটির পর তিনি প্রথমে এক বছর, পরে আরো এক বছর দায়িত্ব পালন করছেন।
পবন চৌধুরী: বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান। তারও চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০১৭ সালের ৫জুলাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত দু-দফা চুক্তির মাধ্যমে তিনি তার দায়িত্বে বহাল রয়েছেন।
ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম আহমেদ খান: বর্তমান সরকার মেয়াদে তিনি সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি। ওয়াসার এমডি পদে তিনি ২০০৯ সালে নিয়োগ পান। টানা দশ বছর ধরে তিনি টানা ওয়সার এমডি পদে বহাল তবিয়তে আছেন। তাকে ঘিরে বহু বিতর্ক ও অভিযোগের পরও তিনি দুর্দান্ত ক্ষমতা নিয়ে ওই পদে আসীন আছেন।
সামন্তলাল সেন: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক। তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বহু আগে। তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নবায়ন যেন এখন একটা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিবারই তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।
যাদের নাম আলোচনা করা হয়েছে। এরা ছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন পদে অনেক ব্যক্তিরা রয়েছেন যারা দীর্ঘদিন ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বা একই পদে বহাল রয়েছেন। প্রশ্ন হলো তারা কি অপরিহার্য? সরকারী চাকরিতে বলা হয় তারা কেউই অপরিহার্য নয়। একজন অবসর গ্রহণ করলে নতুন একজন তার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন। একটা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে অনেকগুলো পদোন্নতি রহিত হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিপক্ষে একটা মতামত রয়েছে সরকারী কর্মকর্তাদের। সেখানে একই ব্যক্তি বারবার যখন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান তখন প্রশাসেনের মধ্যে ভুল বার্তা যায়। ওয়াসার এমডি বা বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কের পদে নতুন ব্যক্তি আসছেন না কেন, এ পদগুলো কেন চিরস্থায়ী হচ্ছে সে প্রশ্ন পেশাজীবিদের মধ্য থেকে উঠেছে। একইভাবে একই পদে তাদের দীর্ঘদিন থাকার কারণে তাদের মধ্যে কর্মস্পৃহা যেমন কমে যাচ্ছে কিন্তু উদ্ভাবন দেওয়ার ক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশিভাবে তারা অন্যদের তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশিমতো কাজ করার প্রবণতা তাদের মধ্যে বাড়ছে। এরকম বাস্তবতায় থেকেই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তদের খুটির জোর কোথায়, সেটাই প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মনে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।