নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ১৪ মে, ২০১৯
তারেক জিয়ার জন্যই বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়া ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন। এরকম ভবিষ্যৎবাণী যারা করেছিলেন, তারা আজ নেই। কিন্তু তাদের ভবিষ্যৎবাণীগুলো আজ অক্ষরে অক্ষরে সত্য হয়ে গেছে। তারেক জিয়ার কারণেই আজ বিএনপি ডুবতে বসেছে, দল হিসেবে বিএনপি অস্তীত্বের সংকটের মুখে। তারেক জিয়ার কারণেই বিএনপির চেয়ারপারসন এবং তারেক জিয়ার মা বেগম খালেদা জিয়া আজ কারা প্রকোষ্টে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। তারেক জিয়ার রাজনীতিতে উথান ২০০১ সালে। যখন জামাত বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসে, সেই সময় বিএনপি-জামাতকে ক্ষমতায় আনার পেছনে তারেক জিয়ার অনেক অবদান ছিলো বলে অনেকে মনে করে। ভারতের সঙ্গে নানা রকম দেন দরবার করে তারেক জিয়া বিএনপি জামাত-জোটকে ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত করেছিলেন। ২০০১ এর আক্টোবরে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পরই তারেক জিয়ার প্রভাব প্রতিপত্তি এবং দলের উপর কর্তৃত্ব বাড়তে থাকে। দলের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত এবং সিনিয়র নেতাদেরকে ইচ্ছেমতো শাষন করা এবং তাদের উপর নানা রকম বিধি নিষেধ আরোপ করা এবং তারা কি করতে পারবেন না করতে পারবেন। সে ব্যাপারে সতর্কবার্তা জারি করে সমলোচিত এবং বিতর্কিত হয়ে উঠেন তারেক জিয়া। সেই সময় দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা তারেক জিয়ার ব্যাপারে স্বোচ্ছার ছিলেন। তারা তারেক জিয়ার বারাবারি থামানোর জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, এই ছেলে আপনাকে ডোবাবে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া তখন সেই বিষয়গুলোতে কর্ণপাত করেননি। এই সমস্ত ব্যক্তিরা তারেক জিয়া এবং বিএনপি সম্বন্ধে কি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন আসুন একটু দেখে নেওয়া যাক:
সাইফুর রহমান: তিনি ছিলেন বিএনপির আমলে অর্থমন্ত্রী। বিএনপি জামাত জোট ২০০১ সালে যখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। তখন বিএনপি জামাত জোটের অর্থমন্ত্রী হিসেবে সাইফুর রহমান দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সাইফুর রহমানকে বিএনপিতে বেগম খালেদা জিয়ার পর সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ১৯৯১ সালে বিএনপি যখন অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতায় আসে, তখন ধরেই নেওয়া হয়েছিল সরকার পরিচালনায় অনভিজ্ঞ বেগম খালেদা জিয়াকে সমস্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে সাইফুর রহমান। পর্দার আড়ালে বেগম খালেদা জিয়াকে সাইফুর রহমান চালাতেন বলেও প্রচলিত আছে। ঘটনাটি ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। সাইফুর রহমান অর্থনৈতিক সংক্রান্ত বৈঠক করছিলেন। সেই বৈঠকে ঢুকে পড়েন তারেক জিয়া। ঢুকে পড়েই তিনি সাইফুর রহমানকে তার কক্ষে আসতে বলেন। সাইফুর রহমান তারেকের এই আচরণ দেখে হতবাক হয়ে যান। তিনি বলেন যে, এটা একটা সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মিটিং চলছে। আপনি বাইরে যান, আমি পরে কথা বলবো। কিন্তু তারেক জিয়া বলেন, মিটিং স্থগিত রেখে আপনি বাইরে আসুন আপনার সঙ্গে আমার কথা আছে। এটাতে হতবাক হয়ে যান সাইফুর রহমান। মিটিং মূলতবি ঘোষণা করতে বাধ্য হন সাইফুর রহমান। সাইফুর রহমানের কাছে একটি বিষয়ে তদ্বির করতে গিয়েছিলেন। ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে একটা ক্রয় বিবেচনায় ছিলো, সে বিষয়ে তারেক জিয়ার একটি নিজস্ব পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সাইফুর রহমানের উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি ওই ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে গিয়ে। সাইফুর রহমান এর পরপরই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং বলেন যে, আপনার তারেক জিয়াকে সামলাতে হবে। তারেক জিয়া যদি রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে এমন হস্তক্ষেপ করে সেক্ষেত্রে সরকার চালানো খুবই দু:সাধ্য হয়ে পড়বে এবং এরফলে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যাবে। সাইফুর রহমান বেগম জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি নিজেও ডুববেন ও তার কারণে দরও ডুববে। সে সময় সাইফুর রহমানের এই কথা আমলে নেননি তারেক জিয়া। কিন্তু প্রয়াত সাইফুর রহমানের এই বানী আজ অমরবানী হিসেবে পরিনত হয়েছে। অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্য।
মান্নান ভুইয়া: ২০০১ সালে বিএনপির মহাসচিব ছিলেন আবদুল মান্নান ভুইয়া। তিনিও দুর্দান্ত ক্ষমতাবান এবং বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত কাছের মানুষ। নির্বাচনের পর মান্নান ভুইয়াকে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও দল পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তিনিও দলের মধ্যে অত্যন্ত ক্ষমতাবান ব্যক্তিতে পরিণত হন। কিন্তু তার ক্ষমতার বেলুন চুপসে দিতে তারেক জিয়ার সময় নেন মাত্র ছয় মাস। ২০০২ সালের মার্চে তারেক জিয়া আকস্মিকভাবে মান্নান ভুইয়ার কার্যালয়ে যানে। সে সময় মান্নান ভুইয়া মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন। সে বৈঠকেই উপস্থিত হয়ে তারেক জিয়া গিয়াস উদ্দীন আল মামুনকে দেখিয়ে বলেন, মামুন যেভাবে চাইবে এখানকার কাজগুলো সেভাবেই যেন হয়। উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান খাত। সারাদেশে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বড় বড় টেন্ডারগুলো এই মন্ত্রণালয়ে হয়ে থাকে। আবদুল মান্নান ভুইয়া পদত্যাগ করেছিলেন। রাতে তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তারেক জিয়ার ঔদ্বত্বের কথা জানান। তিনি বলেন যে, আমাকে মন্ত্রীত্ব থেকে বাদ দিয়ে দেন। আমি শুধু মহাসচিব হিসেবে থাকবো। সে সময় বেগম জিয়া কোন প্রতিকার করেননি। সেই সময় মান্নান ভুইয়া বলেছিলেন, তারেক সাহেবকে যদি সামলানো না যায়। তাহলে আমাদের কোন শত্রুর অভাব হবে না। বিএনপিকে ডুবানোর জন্য একজনই যথেষ্ঠ। বেগম খালেদা জিয়া মান্নান ভুইয়াকে ধমক দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, নিজের কাজে মনোযোগ দিতে। আজ মান্না ভুইয়া বেচে নেই।কিন্তু তার বানী কতটা সত্যি হয়েছে তা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অজানা নয়।
তরিকুল ইসলাম: বেগম জিয়ার আরেকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন তিনি। বেগম খালেদা জিয়া যে দুদফা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। সেই দুদফায়ই তাকে মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। যদিও ৯১ সালে তরিকুল নির্বাচনে পরাজিত হবার পরও বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন হওয়ার কারণে মন্ত্রীত্ব পান। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি ছিলেন সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী। তরিকুল ইসলামের কাছে তারেক জিয়া পাঠিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে। তরিকুল ইসলাম তাকে বলেছিলেন, মন্ত্রণালয় না আসার জন্য। তিনি যেন তার কোন কোন বিষয়ে বক্তব্য থাকলে তা দলীয় কার্যালয়ে বলেন। এত তারেক জিয়াও অত্যন্ত ক্ষদ্ব হয়েছিলেন। তিনি টেলিফোন করে তরিকুল ইসলামকে শাষিয়েছিলেন। তরিকুল ইসলাম তখন ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিলো। বেগম জিয়ার সঙ্গে তিনি দেখা করে বলেন, তারেক জিয়া যদি রাজনীতি করেন তাহলে আমাদের রাজনীতি করার দরকার নেই। তিনি বেগম জিয়াকে বলেছিলেন, রাজনীতিতে আমার বয়স অনেক বেশি। আমি জানি কিভাবে একটা দলকে এগুলো সর্বনাশ করে। ম্যাডাম আপনি অনুগ্রহ করে তারেক সাহেবকে থামান। না হয় কিন্তু বিএনপির সর্বনাশ ঘটবে। বেগম খালেদা জিয়াকে তরিকুল ইসলামকে বুঝিয়ে শুনিয়ে পাঠিয়েছিলেন। তার কথা আমলে নেননি। তারেকের বিরুদ্দে কোন ব্যবস্থাও নেননি। আজ এত বছর পর তরিকুল ইসলামের সেই বক্তব্য অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমানিত হয়েছে।
এরকম বিএনপির অনেকেই তারেক জিয়ার সম্পর্কে সতর্কবার্তা উচ্চারন করেছিলেন। তারা বলেছিলেন তারেক জিয়া যদি দলের নীতি নির্ধারক হন, তাহলে বিএনপির পতনের সময় লাগবে না। আজ তারা অনেকেই নেই। অনেকেই দলচ্যুত হয়েছেন। অনেকেই দলে অপাংক্তেও হয়ে আছেন। কিন্তু তাদের কথাই আজ সত্য। বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে সেসব কথা অযৌক্তিক মনে হবে না নিশ্চয়ই।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।