ইনসাইড পলিটিক্স

তুমি কি তাঁদের ক্ষমা করিয়াছ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০১৯


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন সেসময় তার  প্রতিপক্ষ কেবল বিএনপি ছিল না। তার প্রতিপক্ষ কেবল স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠী ছিল না। দলের মধ্যেও তার প্রতিপক্ষের সংখ্যা কম ছিল না। দলে তার বিরুদ্ধে যারা প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে গড়ে উঠেছিল, যারা শেখ হাসিনাকে বশে আনার চেষ্টা করেছিল, তারাই এখন রাজনীতিতে বশীভূত। রাজনীতি থেকে পরিত্যাক্ত। কিংবা রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে। কিংবা আওয়ামী লীগের মূল ধারার রাজনীতি থেকে বিক্ষিপ্ত হয়েছে। তারা শেখ হাসিনার জীবনকে বিষিয়ে তুলেছিল। তার রাজনৈতিক জীবনকে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। শেখ হাসিনা রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত টিকতে পারবেন কিনা, এরকম সংশয়ও তৈরি করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা তার অমিত সাহস, রাজনৈতিক দৃঢ়তা এবং তার ধৈর্য দিয়ে দলের ভেতর যারা তার প্রতিপক্ষ ছিল তাদের তিনি প্রতিহত করেছেন।

রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা যতটা কঠিন তার চেয়ে কঠিন হলো দেলের ভেতরের প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করা। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে ঘরে বাইরে যুদ্ধ করতে হয়েছে। ঘরে যাদের সাথে তিনি যুদ্ধ করেছেন তাদের কয়েকজনকে নিয়েই আমাদের এই প্রতিবেদন-

ড. কামাল হোসেন: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন, তখন ড. কামাল হোসেন চেয়েছিলেন যে শেখ হাসিনা একজন পুতুল হিসেবে থাকবেন আর তিনিই দল পরিচালনা করবেন। দল পরিচালনায় তার কর্তৃত্বই সম্পুর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি দল পরিচালনা করবেন এবং দল পরিচালনায় তাঁর কর্তৃত্বই সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ড. কামাল হোসেন এটাও চেয়েছিলেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি তাঁর কথামতো তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন, রাজনীতিতে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি আস্তে আস্তে তৃণমূলের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দলের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব গ্রহণ করতে থাকেন। তখন তাঁর সংগে প্রথম যার বিরোধ তৈরি হয় তিনি হলেন ড. কামাল হোসেন। যদিও ১৯৮১ সালের ১৫ই নভেম্বর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. কামাল হোসেনকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। অস্থায়ী বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং পরাজিত হয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন যে তৃণমূলের আওয়ামী লীগের কর্মীদের মনের ভাষা বুঝেন না সেটা বুঝতে সময় লাগেনি। আস্তে আস্তে কামাল হোসেনের সংগে বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর মতবিরোধ গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ড. কামাল হোসেন যেহেতু জনগণের সংগে মিশতেন না, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পর্ক ছিল না এবং সাধারণ নেতাকর্মীদের প্রতি তাঁদের বিশ্বাস এবং আস্থা ছিল না। সেজন্যই তাঁরা একরকম জনবিচ্ছিন্ন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যই শেখ হাসিনার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের বিভিন্ন ইস্যুতে বিরোধ তৈরি হয়। এই বিরোধের জের হিসেবে ১৯৯১ সালে নির্বাচনের পর ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে সরে যান।

আব্দুর রাজ্জাক: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর জীবন যারা বিষিয়ে তুলেছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে বামঘেষা হিসেবে ছিলেন। ড. কামাল হোসেন যেমন ছিলেন অতি ডান, আবদুল রাজ্জাক ছিলেন তেমনি অতি বাম। আওয়ামী লীগ যখন তার অর্থনৈতিক নীতি এবং কৌশল পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি প্রক্রিয়াগুলো শুরু করে তখন আব্দুর রাজ্জাক তার বিরোধীতা করেছিলেন। এই বিরোধিতার জের হিসেবে ১৯৮৩ সালে আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ ছেড়ে বাকশালও গঠন করেন। সেই সময় তিনি আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা তার নেতৃত্বের দৃঢ়তা এবং তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কাছে আব্দুর রাজ্জাক পরাজিত হন। আব্দুর রাজ্জাককে বাকশাল থেকে আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসতে হয়। আমৃত্যু তিনি তিনি আওয়ামী লীগেরই সদস্য ছিলেন।

তোফায়েল আহমেদ: আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর যখন স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর শেখ হাসিনার অন্য যে কয়েকজন নেতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেও তোফায়েল আহমেদ। তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরাধিকার মনে করতেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন তিনি। সেহেতু বঙ্গবন্ধুর গড়া আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব তার হাতেই থাকা উচিত বলে মনে করতেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মনে করতেন, পচাত্তরের পনেরো আগস্টে যাদের ব্যার্থতা রয়েছে। যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি তাদের মধ্যে অন্যতম তোফায়েল আহমেদ। এই বিশ্বাস অবিশ্বাসের দ্বৈরথ শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন জুড়েই ছিল। তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে শুধু রাজনৈতিক অবিশ্বাস তা নয়, রাজনৈতিক আলোচনাগুলোতেও তারা একে অন্যের প্রতিপক্ষ ছিল। ২০০৮ সাল পর্যন্ত তোফায়েল আহমেদকে আওয়ামী লীগের সভাপতির অন্যতম প্রতিপক্ষ মনে করা হতো। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সংস্কারপন্থী এই নেতা পরবর্তীতে দলের কর্তৃত্ব হারান এবং শেখ হাসিনার দলের একক কর্তৃত্বই দলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এরকম আরো অনেক নেতাই আছেন, যারা আওয়ামী লীগ সভাপতির পথের কাটা হয়েছিলেন। যারা বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির কাজকর্মে। আজ কেউ কেউ দলে আছেন, কেউ কেউ দলে নেই। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আগে এই প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে আসতেই পারে, শেখ হাসিনা কি তাদের ক্ষমা করেছেন? শেখ হাসিনা কি তাদের ভালোবেসেছেন?

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হয়নি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে গণভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এ বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর হীরক জয়ন্তী জাঁকজমকভাবে আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, শেখ কামালের জন্মদিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। বৈঠকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।

আজ সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা শুরু হয়। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

উপজেলা নির্বাচন   কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের জনসভা বুধবার

প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বুধবার) বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে এই শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে দলের কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করবেন।

আওয়ামী লীগ   জনসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৪ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আরও চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানোনো হয়।


এতে বলা হয়, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঢাকা জেলাধীন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোসা. সাবিরা বেগম, সুনামগঞ্জ জেলাধীন শাল্লা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাজিরুল ইসলাম আজহার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ এবং যুবদলের সদস্য সাইফুর রহমানকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।


এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল ভোট বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

বহিষ্কারকৃতদের মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ২১ জন।

বিএনপি   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেককে নিয়ে টালমাটাল বিএনপি

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।

সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।

তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।

বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।

প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।

উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।

অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।


বিএনপি   রাজনীতি   মির্জা ফখরুল   তারেক জিয়া   ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কালো তালিকা ভুক্তরা যে শাস্তি পাবেন (ভিডিও)

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আজ সন্ধ্যা সাতটায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে উপজেলা নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। কিন্তু তারপরও এই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মাথাব্যথার অন্ত নেই।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুরোধে সাড়া দেওয়া মন্ত্রী, এমপির সংখ্যা নগণ্য। অধিকাংশ মন্ত্রী, এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত বা নির্দিষ্ট করে আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এবার উপজেলা নির্বাচনে তাদের স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে অংশগ্রহণ না করে। এক্ষেত্রেও নির্দেশনা মানা হয়নি। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

নির্বাচন কমিশন নিজেই বলেছে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবকে একটা বড় সমস্যা হিসেবে তারা মনে করছেন। এরকম বাস্তবতায় উপজেলা নির্বাচনে যারা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছে, যারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা নিয়ে আওয়ামী লীগের আজকে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা সুনির্দিষ্টভাবে তালিকা দেবেন, যে তালিকাতে দেখানো হবে দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কারা উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদেরকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। এই তালিকা প্রাপ্তদেরকে আওয়ামী লীগ কালো তালিকাভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করবে বলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন। তবে আজ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কী ধরনের শাস্তি নেওয়া হবে সে সম্পর্কে কারও স্পষ্ট ধারণা নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। 

একাধিক সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদের প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে বহিষ্কারের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হবে না। বরং তারা ধাপে ধাপে শাস্তি পাবে। তিল তিল করে তাদের শাস্তি কার্যকর করা হবে। যারা কালো তালিকাভুক্ত, তারা যে সমস্ত শাস্তি পাবে তাদের মধ্যে রয়েছে;

১. এই সমস্ত মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের স্বজনরা আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে থাকতে পারবেন না। তাদের কমিটিতে রাখা হবে না। 

২. ভবিষ্যতে এই সমস্ত ব্যক্তিরা মনোনয়নের জন্য বিবেচিত হবেন না। এ সমস্ত স্বজনরা এবার নির্বাচনে জিতুক বা হারুক যাই হোক না কেন ভবিষ্যতে তারা প্রার্থী হতে পারবেন না।

৩. কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাদেরকে নেওয়া হবে না।

৪. এদের মধ্যে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন তাদের পদ হারাতে হতে পারে। এবং 

৫. ভবিষ্যতে এ সমস্ত নেতারা আওয়ামী লীগ সভাপতির স্নেহ থেকে বঞ্চিত হবেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মনে করছে, এই ধরনের সিদ্ধান্তগুলো যদি নেওয়া হয় তাহলে পরে আস্তে আস্তে দলের ভেতর যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে সেই বিশৃঙ্খলা থেকে দলকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।


আওয়ামী লীগ   কার্যনির্বাহী কমিটির সভা   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন