নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৬ মে, ২০১৯
আগামীকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৩৮ বছর পূর্ণ হচ্ছে। রাজনীতিতে নানা প্রতিকূলতা এবং ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধতার মধ্য দিয়ে তিনি আজকের এই জায়গায় পৌঁছেছেন। আজকে তিনি যে অবস্থানে পৌঁছেছেন তা একদিনে হয়নি। কোন সহজ কাজ ছিল না এই লক্ষ্য অর্জন। এর জন্য তাকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। অনেক সময় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে বলেছিলেন, তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার এবং রাজনীতিতে তিনি তেমন কিছু দিতে পারবেন না। কেউ কেউ বিভিন্ন সময় তাকে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কেউ কেউ তাকে মাইনাস করারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সম্বন্ধে যে সমস্ত ভুল এবং অর্বাচীন ভবিষ্যৎবাণী ছিলো তার কয়েকটি নিয়েই এই প্রতিবেদন:
১৯৯১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। স্বৈরাচার পতনের পর এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল অনেকটা প্রত্যাশিত। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। বিএনপি জামাতের সগযোগিতা নিয়ে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। এই নির্বাচনের বিপর্যয়ের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা মুখর হয়ে উঠেন খোদ আওয়ামী লীগেরেই একাংশের নেতৃবৃন্দ। এই নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৎকালীন প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. কামাল হোসেন বলেছিলেন শেখ হাসিনাকে নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত, রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। ড. কামাল হোসেন এরপর আওয়ামী লীগ ছেড়ে বেরিয়ে যান এবং গণফোরাম গঠন করেন। গণফোরাম গঠন করার পরে এর প্রথম সভায় তিনি বলেছিলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ব্যর্থ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কখনও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ড. কামাল হোসেনের এই বক্তব্য যে কতবড় কৌতুক তা আজ নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
একানব্বইয়ের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপর্যয়ের পর বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম তালুকদার বলেছিল, ‘শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের যভাপতি যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ আওয়ামী লীগের কোনো শত্রুর দরকার নেই। শেখ হাসিনা একাই অয়ায়মী লীগের ক্ষতি করার যথেষ্ঠ।‘ ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার এখন জীবিত নেই। কিন্তু ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার যদি জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি বুঝতেন যে শেখ হাসিনাই আওয়ামী লীগকে চাঙ্গা করার জন্য বা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য যথেষ্ঠ।
একানব্বইয়ের নির্বাচনের পর আগস্টে তৎকালীন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আগে রাজনীতি শিখতে হবে। কীভাবে রাজনীতি করতে হয়, কীভাবে জনগণের মন জয় করতে হয় তা শিখতে হবে। তারপর তাঁকে রাজনীতিতে আসতে হবে।‘ আজ তরিকুল ইসলাম জীবিত নেই। তরিকুল ইসলাম জীবিত থাকলে তিনি বুঝতে পারতেন শেখ হাসিনা নিজে শুধু রাজনীতি শিখেননি অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে রাজনীতির নীতি এবং আদর্শ শেখাচ্ছেন।
২০০১ সালে নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরও আক্রান্ত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতিকে বেগম খালেদা জিয়া একটি ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনের জয়লাভের প্রথম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের ভাষনে তিনি বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আগামী ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ক্রমশ মুসলিম লীগে পরিণত হবে।‘ বেগম জিয়ার দুর্ভাগ্য যে আওয়ামী লীগ মুসলিম লীগে পরিণত হয়নি। বরং বিএনপিরই এখন মুসলিম লীগে পরিণত হওয়ার উপক্রম। সেই সময় বিএনপির আরেক ডাক সাইটে নেতা আবদুল মান্নান ভুইয়া বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগের নিঃশেষ হতে আর বেশী সময় লাগবে না। এবার নির্বাচনে তাঁরা ২৯ আসন পেয়েছে। আগামী নির্বাচনে তাঁরা হয়তো কোনো আসনই পাবে না। আওয়ামী লীগকে জনগন প্রত্যাখ্যান করেছে। খুব শীগগিরই এই দলটা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব তারেক জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নামে বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক দল থাকবে এরকম চিন্তাভাবনাও এখন জনগন করে না। শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে বিদেশে যাওয়া উচিত। সেটাই তার জন্য উত্তম। শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে অবসর বা বিদেশে যাননি। তারেক জিয়াই এখন রাজনীতি থেকে প্রায় বিতাড়িত হয়ে বিদেশে পলাতক জীবন যাপন করছেন।
রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এরকম আরো অনেক বক্তব্য এবং উক্তি করা হয়েছিল যা আজ ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাড় করালে বোঝা যায়, সেগুলো যে কতটা ভুল ছিল। রাজনৈতিকভাবে শেখ হাসিনা কেবল তার প্রতিপক্ষকে পরাজিতই করেননি। প্রতিপক্ষরা তাকে নিয়ে যেসসমস্ত ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, তা ভুল প্রমাণ করে তিনি আজ দেশের অবিসাংবিদিত নেতৃত্বে পরিনত হয়েছেন। যারা এ ধরনের মন্তব্য করেছিলেন, তারাই আজ ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। ইতিহাসে শেখ হাসিনাই অমরত্ব পেয়েছেন, তারা নয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ মনোনয়ন বোর্ড সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।