নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ মে, ২০১৯
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোটগ্রহণ হচ্ছে আগামীকাল। ২৩মে জানা যাবে নির্বাচনের ফলাফল। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে শুরুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিরুত্তাপ এবং উদ্বেগহীন পরিস্থিতি থাকলেও ফলাফলের সময় যত ঘনিয়ে আসছে,ততই বাংলাদেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা এবং চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই ভারতের এই নির্বাচন নিয়ে উদাসীন ছিল। ভারতের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোন রকম প্রভাব বিস্তার করবে না বলেই আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বাংলা ইনসাইডারের কাছে জানিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছিলেন, নির্বাচনে যারাই জিতুক না কেন, বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক রক্তঋণে বাধা এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে তৈরী। কাজেই আমাদের সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে মৈত্রী বন্ধনের সূচনা হয়েছে এবং সম্পর্কের যে নতুন দিগন্তের উম্মোচন হয়েছে সেই ধারা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগের এরকম অবস্থানের পেছনে যুক্তি ছিল সুস্পষ্ট। কারণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে কংগ্রেসের ঐতিহাসিকভাবেই অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক। একাত্তরে ইন্ধিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার বাংলাদেশকে যে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল তা অবিস্মরণীয়। আবার ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, তার ফলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা পায়। দু-দেশের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে দুই নেতাই আন্তরিকভাবে কাজ করেন। ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো বলে স্বীকার করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই বাস্তবতায় বিজেপির ফের ক্ষমতায় আসাও আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক হিসেবেই মনে করা হচ্ছিল। তাই আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছিলেন, কংগ্রেস কিংবা বিজেপি যেই আসুক না কেন, আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ধারাটা অটুট থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের যে নতুন দিগন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী সূচনা করেছিলেন তা নতুন মাত্রায় উপনীত হবে। সম্পর্কের ধারা আরো বেগমান হবে। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল যতই এগিয়ে আসছে, ততই একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে বিজেপি এবং কংগ্রেসের বাইরে তৃতীয় ধারার উত্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দিল্লীতে। কংগ্রেস প্রয়োজনে যে কোন আঞ্চলিক দলকে সমর্থন দিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে চান। এরকম একটা বাস্তবতায় নির্বাচনের আগে আঞ্চলিক দল বা ক্ষুদ্র দল বা কোয়ালিশন দল বা সংখ্যালঘু সরকার ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবলভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।
এরকম একটি পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, একটি অস্থিতিশীল কোয়ালিশন সরকার বা বিজেপি কংগ্রেসের বাইরে মূলধারার বাইরে একটি রাজনৈতিক দল থাকলে সেই রাজণোইতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক সময় সহজ হয়না। নানা রকম চাপে আমাদের দেশের অনেকগুলো ন্যায্য দাবিদাওয়া বা অগ্রগতিগুলো হয়েছিল তা ব্যহত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতারা উদাহরণ দেন মমতা ব্যানার্জীর ব্যাপারে। মমতা যদি বাধা না দিত তাহলে এতদিন তিস্তার পানিচুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হতো। আঞ্চলিক দলগুলো নিজেদের যতই উদার মনে করুক না কেন বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ দলগুলো অনেক কট্টর। তাঁরা ক্ষমতায় থাকার জন্য জাতীয়তাবাদ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের বিরোধীতা ইত্যাদিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে একটি নতুন সমীকরণ করার চেষ্টা করে। এ ধরণের সরকার দিল্লীতে থাকলে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশের সীমান্তের জন্য নানারকম হুমকি তৈরি করে। আবার এরকম একটি দুর্বল সরকার আসা নিয়ে বিএনপির মধ্যেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি মনে করছে যে, যেহেতু আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়েরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে সেজন্য ভারতে যদি একটি তৃতীয় শক্তি ক্ষমতায় আসে ভারতের সঙ্গে বিএনপি নতুন করে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এগুতে পারে। তাই হঠাৎ করে ভারতের নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
আসলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন পথে এগুবে তা বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের উপরই নির্ভর করে। কাজেই ভারতে যদি পট পরিবর্তন হয়ে বেওং একটি দুর্বল কোয়ালিশন সরকার গঠিত হয় বা তৃতীয় শক্তি গঠিত হয় তাহলে বাংলাদেশ-ভারত যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সেটাকে ধরে রাখা যাবে কিনা বা সেই ধারায় নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা সে নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পরছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।