নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৪ মে, ২০১৯
রাহুল গান্ধীর পরিণতির জন্যই এখনই জয় বা পুতুলকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আনতে চান না শেখ হাসিনা। উপর থেকে নেতৃত্ব নির্ধারণ করে দিলে জনগণ তা ঠিকমতো গ্রহণ করে না, এটার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এরকম একটি চিন্তা থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনই তার পুত্র-কন্যাকে রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত করতে চান না। আওয়ামী লীগ সভাপতি তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরাধিকার নির্ধারণ করবে জনগণ, দলের নেতাকর্মীরা আমি উত্তরাধিকার মনোনীত করার কে? সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী তার ঘনিষ্ঠদের রাহুল গান্ধীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ছেলেটাকে জনগণ নিচ্ছে না। একইভাবে সঞ্জয় গান্ধীকে যখন ইন্দিরা গান্ধী মনোনীত করেছিলেন, তা মানুষ গ্রহণ করেনি। আবার ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজীব গান্ধী ‘সময়ের প্রয়োজনে’ই স্বতস্ফূর্তভাবে নেতৃত্বে এসেছেন। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব গ্রহণ ছিল গণদাবী। কংগ্রেস নেতাকর্মীদের কাছে কোনো বিকল্প ছিল না। কংগ্রেসের হাল ধরার মতো অন্য কোনো প্রার্থীও ছিল না। সূত্রমতে, সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা হোসেন পুতুল কবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেবে, কোন পদে বসবে কিনা ইত্যাদি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রায়ই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসল কাজ হলো মানুষের জন্য কাজ করা। সেটা তো ওরা করছে। জয় তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লবের আসল কারিগর, অন্যদিকে পুতুলও অটিজম নিয়ে কাজ করে সারাবিশ্বে আলোচিত। ওরা যেটা করছে, ভালো কাজ। এখন ওদের জোর করে দলের পদে বসানোর দরকার কি? সূত্র মতে, তিনি এটাও স্বরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনা না ঘটলে , তিনিও হয়তো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসতেন না। আওয়ামী লীগ সভাপতি সবসময়ই মনে করেন, আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। এর নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই। জাতির পিতা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পরে সাধারণ সম্পাদক, তারপর সভাপতি। নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় তিনি অবিসংবাদী নেতা হয়েছেন, জাতির পিতা হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ছেলে আওয়ামী লীগের নেতা হননি, হয়েছেন বঙ্গবন্ধু। কারণ কাজ দিয়ে জাতির পিতা দলের মধ্যমণিতে পরিণত হয়েছিলেন। বাঙালির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন।
বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল নয় বিধায় নেতাকর্মীদের মতামত ছাড়া যে কাউকে নেতা বানিয়ে দেয়া হয়। জাতীয় পার্টিও তেমনই। তারেক রহমানকে বেগম জিয়া তার উত্তরাধিকার মনোনীত করেছেন। এগুলো হলো অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষাকে অবজ্ঞা করা। কিন্তু এভাবে নেতা হওয়া যায় না। জনগণ এদের গ্রহণ করেনি। নেতা হতে হলে কাজ করতে হবে। মানুষের কল্যাণের কথা ভাবতে হবে। মানুষের ভালোর জন্য ভাবতে হবে। এরকম ভাবনাগুলোই শেখ হাসিনা সর্বক্ষণ তার নেতাকর্মীদের বলেন। আর এটা তিনি বিশ্বাস করেন। একারণেই তিনি ঘোষণা দিয়ে তার পুত্র-কন্যাকে আগ্রহী নন।
ভারতে রাহুল গান্ধীর অবস্থা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতির সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক।
মন্তব্য করুন
ভারতের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে বাংলাদেশ
থেকে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বুধবার (০১ মে)
আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে সাতটি ধাপে জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি এই নির্বাচনে তাদের সার্বিক প্রস্তুতি ও
প্রচারণা দেখানোর জন্য বিদেশি কিছু রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে
একমাত্র আওয়ামী লীগকে তারা আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, ভারতে বিজেপি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। অন্যদিকে,
বাংলাদেশে পরপর চারটি জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে
জয়লাভ করে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে
যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে
শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ
গণতন্ত্র ভারত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যে আস্থাশীল এবং
আওয়ামী লীগকে যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৃত বন্ধু
মনে করে, এই আমন্ত্রণ সেই ইঙ্গিতই বহন করে।
বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতি ও প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ
আওয়ামী লীগকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি পাঠাতে
অনুরোধ করেছে।
এই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে দলের
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য ড. সেলিম মাহমুদকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ভারত সফরে
মনোনীত করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, এই সফরটি মূলত পাঁচ দিনের। ১
মে থেকে ৫ মে পর্যন্ত। সফরে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধির সঙ্গে বিজেপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের
বৈঠক রয়েছে। দিল্লির বাইরে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণা সরেজমিনে দেখানোর জন্য বিজেপি
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিকে ছত্রিশগড়ে নিয়ে যাবে।
ভারতের নির্বাচন ১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে যা ১ জুন পর্যন্ত চলবে।
৪ জুন ভোটের ফলাফল ঘোষিত হবে।
ভারত নির্বাচন বিজেপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন