ইনসাইড পলিটিক্স

কুখ্যাত রাজনীতিবিদদের বংশধররা কে কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২৬ মে, ২০১৯


Thumbnail

১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে দেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের মত দেশের ক্রান্তিকালে কিছু রাজনীতিবিদ হেটেছেন বাঙালিদের বিপক্ষে। শুধু হাটেইনি, নি:শেষ করে দেওয়ার জন্য গঠন করেছে রাজাকার, আলবদর, আল শামসের মত বাহিনী। সেইসব রাজনীতিবিদদের বলা হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের কলংকিত মানুষ। সেই ১৯৭১ সালের পর বাঙ্গালি জাতির জন্য আরেক কলংকিত অধ্যায় শুরু হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুন করা হয়। দেশ শাষন শুরু করে এক কুচক্রী মহল। বাংলাদেশের ইতিহাসের এই দুই অধ্যায়ে পাওয়া যায় এক শ্রেনীর রাজনীতিবিদকে। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কলংকিত করেছেন দেশকে। যাদের জাতি কখনো ক্ষমা করবে না। সেইসব নেতাদের আজ অনেকেই বেঁচে নেই। কিন্তু তার পরিবার আছে। বহাল তবিয়তে দেশে বিদেশে বেশ ভালো অবস্থানেও আছে। থাকবেই না কেন, যুগে যুগে তারা ঠিকই মদদ পেয়েছে এক শ্রেনীর স্বার্থান্বেষী মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। তবে বেশিরভাগের পরিবারেরই তেমন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের বংশধররা জাতির সামনে কখনো মাথা উচু করে দাড়াতে পারেননি। অর্থ প্রতিপত্তিতে হয়তো তারা বড় হয়েছেন। কিন্তু সেটা তাদেগর করতে হয়েছে মুখোশের আড়ালে। জেনে নেয়া যাক সেইসব কুখ্যাত রাজনীতিবিদদের বংশধররা কে কোথায় আছেন। 

পঁচাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:

খন্দকার মোশতাক আহমেদের বংশধর...

খন্দকার মোশতাক আহমদ বঙ্গবন্ধুর অতিভক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তোষামোদী করে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রীর পদটিও বাগিয়ে নেন। তিনি ছিলেন, বাকশালের তৃতীয় শীর্ষ নেতা। সব সময় মাথায় থাকত জিন্নাহ-ক্যাপ, হাতে ধূমপানের পাইপ। অতিবিনয়ী ভদ্রতার মুখোশপরা মুখচোরা হাসিতে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতেন। ১৫ আগস্টের পরিকল্পনাকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি।

মীর জাফরী কায়দায় রাষ্ট্রপতির পদে ক্ষমতায় মাত্র ৮৩ দিন অবস্থান করতে পারলেও পরে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের চালে ক্ষমতাচ্যুত হতে বাধ্য হন। আশ্রয় নেন পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের বাড়িতে। চারতলার বাড়িটির তিনতলার সুরক্ষিত একটি কক্ষে বাস করতেন। তার শাসনামলেই চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (ওই বছরের ৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।

মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন। ১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্রেটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ মোশতাক মৃত্যুবরণ করেন। ফলে হত্যার দায় থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। জনগণের ক্ষোভ আর ঘৃণার মুখে পুলিশ প্রহরায় দাউদকান্দির দশপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। বর্তমানে সেখানে সীমানা প্রাচীরে ঘেরা তার বাড়িতে দোতলা একটি ভবন রয়েছে। এছাড়াও একটি মসজিদ ও পারিবারিক কবরস্থানও রয়েছে। অন্য কবরে নামফলক থাকলেও মোশতাকের কবরে তা নেই। প্রথমে থাকলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।

মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, মেয়ে খন্দকার শিরিন সুলতানা ও ডা. খন্দকার নাজনীন সুলতানা লন্ডনে থাকেন।

মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ আগে মাঝে মধ্যে পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত করতে বাড়ি এলেও গত ৭-৮ বছর যাবৎ জনরোষের ভয়ে বাড়িতে আসেন না। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আলোচিত বাড়িটি।

শুধু মোশতাক নয়, তারাও...  

মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের প্রথম ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদউল্লাহকে ১৯৭৩ সালে প্রথম রাষ্ট্রপতিও করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পরে ১৯৭৫-এর শুরুর দিকে মোহাম্মদউল্লাহকে মন্ত্রী হিসেবে নিজের মন্ত্রিসভায় স্থান দেন বঙ্গবন্ধু। সেই মোহাম্মদউল্লাহ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরপরই খন্দকার মোশতাকের সরকারে যোগ দেন। ছিলেন মন্ত্রী জিয়ার সরকারেও। এমনকি জিয়া হত্যাকাণ্ডের পর সাত্তার সরকারের একদিনের উপ-রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন মোহাম্মদউল্লাহ। একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্র পাঠ করা অধ্যাপক ইউসুফ আলী বঙ্গবন্ধু সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ১৫ আগস্টের পর তিনিই আবার খুশি মনে যোগ দিয়েছেন খুনি মোশতাকের সরকারে। ইউসুফ আলী পরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া কে এম ওবায়দুর রহমান দলীয় এমপি ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মোশতাক সরকারের ক্ষমতাধর মন্ত্রী হিসেবে দেখা দেন। মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রথম সংসদে আওয়ামী লীগের হুইপ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও মাহবুব আলম চাষী একইভাবে বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ পাওয়া সত্ত্বেও পল্টি দিয়েছেন রাতারাতি। পরবর্তীতে এদের পরিবারের তেমন কাউকে রাজনীতিতে দেখা যায়নি। বাবার পরিচয়ে তারা বাংলাদেশে বড় কোন স্থানে যেতে পারেননি বলে নাম ঠিকানাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী কেএম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।

একাত্তরের বিতর্কিত রাজনীতিবিদ:

সালাউদ্দীন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বংশধর...

গভীর সংকট অতিক্রম করছে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া চট্টগ্রামের সাবেক বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পরিবার। সাকা না থাকায় এলাকার রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। বড় ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী এখন সিঙ্গাপুরে, সাকার আরেক ছেলে ফায়েজ কাদের চৌধুরী লন্ডনে, মেয়ে ফারজিন কাদের চৌধুরী কানাডায় এবং স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী ঘুরেফিরে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বিদেশে থাকছেন। সাকার ছেলে মেয়েরা দেশের বাইরে পড়াশুনা করলেও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত। বিদেশে এখন তাদের একমাত্র কাজ সরকারের ক্ষতি করা।  

গোলাম আযমের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমির গোলাম আযমের ছয় ছেলে। কোন কন্যা সন্তান নেই। নিজে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হলেও সন্তানদের তিনি ইংরেজি ও আধুনিক শিক্ষা দিয়েছেন। তার একটি ছেলেকেও মাদ্রাসায় পড়াননি।

গোলাম আযমের বড় ছেলের নাম মামুন আল আযমী। দীর্ঘদিন তিনি ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের জেদ্দায় স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।

দ্বিতীয় ছেলে আমিন আল আযমী লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন। তৃতীয় ছেলে আবদুল্লাহিল মোমেন আযমী। বর্তমানে ম্যানচেস্টার সিটিতে পরিবারসহ বাস করছেন। চতুর্থ ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমী। নটরডেম কলেজে পড়ালেখা শেষ করে এরশাদ সরকারের প্রথম দিকে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। সর্বশেষ সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি বরখাস্ত হন। পঞ্চম ছেলে নোমান আল আযমী। লন্ডনে পড়ালেখা শেষ করে সেখানেই ব্যবসা ও বসবাস করছেন।

ছোট ছেলে সালমান আল আযমী ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি লিভারপুল হোপ ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। গোলাম আযমের এই ছয় ছেলের ঘরে ২০ জন নাতি-নাতনি রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই লন্ডনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছেন।

মতিউর রহমান নিজামীর বংশধর...

যুদ্ধাপরাধের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামী চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ মোট ছয় সন্তানের জনক। বড় মেয়ে মোহসিনা ফাতেমা বর্তমানে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার স্বামী সাইফুল্লাহ মানসুর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিটিভির সংবাদ পাঠক ছিলেন। তবে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আর সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারী কলেজে শিক্ষকতা করছেন। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান মালেয়শিয়াতে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। দ্বিতীয় ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাবেয়া ভূঁইয়া একাডেমিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে লন্ডন গিয়ে বার-এ্যাট- ল’ ডিগ্রী অর্জন করেছেন তিনি। ছেলেদের মধ্যে কেবল নাজিব মোমেনই দেশে অবস্থান করছেন। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত। নিজামীর তৃতীয় ছেলে ডাঃ নাইমুর রহমান খালেদ পাকিস্তানে পড়াশুনা করে অস্ট্রেলিয়ার এক মেডিকেলে চিকিৎসক হিসেব কর্মরত আছেন। নিজামীর ছোট ছেলে এখনো ছাত্র। মালেয়শিয়ায় পড়াশুনা করেন। আর বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলেন।

ছোট মেয়ে খাদিজা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। ছোট মেয়ের স্বামী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম। তিনি এক সময় শিবির সেক্রেটারি ছিলেন। নজরুল ইসলাম বর্তমানে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত।

নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামী গুলশানে একটি ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি জামাতের নারী শাখার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবাই আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় ছেলে আলী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে সেখানেই আছেন। দ্বিতীয় ছেলে আহমেদ আহকিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা নেন। আরেক ছেলে আহমেদ মাবরুর দিগন্ত টিভিতে হেড অব নিউজ ছিলেন। একমাত্র মেয়ে তামরিনা আল মানারাত ইউনিভার্সিটির ইংলিশের প্রভাষক।

কাদের মোল্লার বংশধর...

শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর চার মেয়ে ও দুই ছেলে। তারাও সবাই দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বংশধর...

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তার ৫ ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে হাসান ইকবাল ওয়ামী বর্তমানে বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। বাকি ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি। দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলে পড়ছেন তারা।

মীর কাশেম আলীর বংশধর...

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসিতে ঝোলা জামায়াতের অর্থ যোগানদাতার শীর্ষনেতা ধনকুবের মীর কাশেম আলী। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম (সালমান) আল মানারাত ইংরেজী মিডিয়াম থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছেন। এরপর পাকিস্তান ডেন্টাল কলেজে পড়েছেন। আরেক ছেলে মীর আহমেদ বিন কাশেম (আরমান) আল মানারাত থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর লন্ডনে বার এট ল’সম্পন্ন করেছেন। মেয়ে হাসিনা তাইয়্যেবা অনার্স এবং মাস্টার্স করেছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। অপর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া আল মানারাতে স্কুল ও কলেজ থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছেন। আরেক মেয়ে তাহেরা হাসনিন আলও পড়াশুনা করেছেন মানারতে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ

প্রকাশ: ০৭:৪৩ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে আপনার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং এতে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর দায়ভার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই বহন করবে না।

‘এমতাবস্থায়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (৯) ধারা মোতাবেক উপযুক্ত ও যথার্থ যুক্তিযুক্ত কারণসহ আগামী ১৫ মে’র মধ্যে লিখিত জবাব প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো।’

এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রিয়াজকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সে সময় তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি এবং একটি স্কুলের তহবিল তসরুপের অভিযোগ ওঠে।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের (নারী শিক্ষা মন্দির) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের বিরুদ্ধে।

এবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং একটি ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরের অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে পড়লে টাকার বিনিময়ে তাকে বাঁচানো সংক্রান্ত রিয়াজের একটি বক্তব্যের অডিও প্রকাশ হয়।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ   মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশ নেওয়া উচিত ছিল: নুর

প্রকাশ: ০৬:৪৪ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরকারবিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন নুর। স্থানীয় টাউন ক্লাব মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিপি নুর বলেন, উপজেলা নির্বাচন উপহাসে পরিণত হয়েছে। যদিও আমি মনে করি বিরোধী দলগুলোর সম্মিলিতভাবে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। নির্বাচন বর্জন করায় বিনাযুদ্ধে রাজ্য দখল করে নিচ্ছে তারা।

নুর আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন মুহূর্তের মধ্যে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষার জন্য তরুণ-যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। এতদিন অনেক রথি-মহরথিরা জোট গঠন করেছেন, ফ্রন্ট গঠন করে জাতির সর্বনাশ করেছেন। তারা দেশ ও জনগণের মুক্তি এনে দিতে পারেননি।

গণঅধিকার পরিষদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক আলমগীর কবীর শিফতির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আল আমীনসহ অন্যরা। 

উপজেলা নির্বাচন   নুরুল হক নুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেকের পাঁচ ‘না’

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপিতে তারেক জিয়ার নাম হয়েছে ‘মি. না’। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন সব কিছুতেই ‘না’ বলছেন। কোন আলোচনা ‘না’ কোন সমঝোতা ‘না’। নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তাও ‘না’। তার কোনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়েও তিনি ‘না’ সূচক বক্তব্য দিচ্ছেন। আর এই ‘না’ এর অত্যাচারে বিএনপি এখন অতিষ্ঠ। 

বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন, সাম্প্রতিক সময় একাধিক স্পর্শকাতর বিষয়ে তারেক জিয়ার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আর তারেক জিয়ার এই নেতিবাচক মনোভাবের কারণেই বিএনপি এখন আরও স্থবির হয়ে পড়েছে। 

যে সমস্ত বিষয়ে তারেক জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ‘না’ বলেছেন, তার মধ্যে রয়েছে;

১. নেতৃত্ব ছাড়া: গত কিছুদিন ধরে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। যেহেতু তিনি লন্ডনে থাকেন সেজন্য নির্বাহী দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে তিনি যদি কোন আলঙ্কারিক দায়িত্ব যেমন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে দলে যারা নেতৃত্বে থাকবেন তারা দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই বিবেচনা থেকে আন্তর্জাতিক মহল এবং দেশেও তারেকের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু তারেক জিয়া এটিকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, কোন অবস্থাতেই তিনি নেতৃত্ব ছাড়বেন না। অর্থাৎ আপাতত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। 

২. ফখরুলের পরিবর্তনে ‘না’: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এবং তার স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। তার স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। তিনি নানা রোগে আক্রান্ত। এর জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলে মহাসচিবের পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু তারেক জিয়া তাকেও ‘না’ করে দিয়েছেন। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের পরিবর্তন করা যাবে না। 

৩. কাউন্সিল ‘না’: বিএনপির অনেকে দলকে চাঙ্গা করার জন্য, সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য দ্রুত একটি কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠানের জন্য তাগাদ দিচ্ছিলেন। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বলা হচ্ছিল যে, অনেক নেতাই এখন অসুস্থ, অনেক পদ শূন্য। এই কারণে দলের নতুন নেতৃত্বের সামনে আনা দরকার, আনা দরকার দলের গতিশীলতা। আর এ কারণেই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠান করা জরুরি। কিন্তু তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। 

৪. স্থায়ী কমিটির শূন্যপদ পূরণ: বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে পাঁচটি শূন্যপদ রয়েছে। স্থায়ী কমিটি এমনিতেই কার্যকর, যারা অকার্যকর, যারা স্থায়ী কমিটিতে আছেন তাদের অনেকে অসুস্থ, বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। সে কারণে স্থায়ী কমিটির পুনর্গঠন ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের সময়ের দাবি। কিন্তু আপাতত স্থায়ী কমিটির শূণ্যপদ পূরণ করার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। কারণ তিনি ব্যাখ্যা করেননি বটে, তবে আপাতত বিএনপির স্থায়ী কমিটির শুন্যপদ গুলো পূরণ হচ্ছে না।

৫. জোটে ‘না’: বিএনপি চেয়েছিল ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে। বিশেষ করে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে। আর এ কারণে বিএনপি অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল, তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তারা একটি অভিন্ন বা যৌথ কর্মসূচি ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে সে জোট হয়নি। এখন আবার বিএনপি শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে। এটি তারেক জিয়ার নির্দেশে করা হচ্ছে। তারেক জিয়া অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। আর এ কারণে তিনি জোটগত ভাবে আন্দোলনের ব্যাপারেও ‘না’ সূচক বার্তা দিয়েছেন। 

আর এ সব ‘না’ এর কারণে বিএনপি এখন নেতিয়ে পড়েছে।


তারেক জিয়া   বিএনপি   আন্দোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে যারা বেশি পেয়েছে তারাই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে

প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত পেয়েছেন তারাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বাস্তবতা। 

খন্দকার মোশতাক কখনোই আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা হওয়ার কথা ছিল না। যোগ্যতার বাইরে বঙ্গবন্ধু তাকে সামনের দিকে এনেছিলেন এবং খুনি মোশতাক তার চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, অযোগ্যরা সবসময় বিশ্বাসঘাতক হয়। সবাই মোশতাকের মতো বড় মাপের বিশ্বাসঘাতক না হলেও বিভিন্ন সঙ্কট দেখা গেছে, আওয়ামী লীগে যারা অযোগ্য, আওয়ামী লীগ যারা যত বেশি পেয়েছে তারাই দলের শৃঙ্খলার প্রতি ততটা বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। 

এক এগোরোর সময় হঠাৎ করে বড় হয়ে যাওয়া নেতারাই আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ কারণ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন সেই সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছে তাদের একটি বড় অংশই হলো অনেক বেশি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা। 

আমরা যদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের হিসাব খতিয়ে দেখি তাহলে দেখব যে, বেশির ভাগই আছেন যারা অনেক বেশি আওয়ামী লীগ থেকে পেয়েছেন। এদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ২০০০ সালের দিকে। যোগদান করেই তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, নির্বাচন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পেয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবেও তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগে এত কিছু পেয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর এই সৌভাগ্যের প্রতিদান তিনি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে তার খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

শাজাহান খান আরেকজন যিনি আওয়ামী লীগে এসে প্রাপ্তির ঝুড়ি পূর্ণ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা হিসেবে তিনি পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য  দখল করেছেন। আর এবার নির্বাচনে তিনি তার ছেলে আসিফুর রহমান খানকে প্রার্থী করেছেন। 

একরামুল করিম চৌধুরী সেই বিরল ভাগ্যবান আওয়ামী লীগের নেতা যিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং স্থানীয় এলাকা দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত্য স্নেহের কারণে এখনও রাজনীতিতে টিকে আছেন। আর তার প্রতিদান তিনি দিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে শাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে।

সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী। কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এক এগোরার সময় সংস্কারপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের পচাঁত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যাদেরকে টেনে তুলে পাদপ্রদীপে এনেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান অন্যতম। আর ২০০৬ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পরও শেখ হাসিনা তাকে বগুড়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগে তিনি কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। বরং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। আর সেই সহানুভূতির পুরস্কার হল সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদি সৌভাগ্যবান কোন আওয়ামী লীগার থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছেন। তবু শেখ হাসিনা তার সব অত্যাচার সহ্য করেছেন। অর্থনীতির বারোটা বাজানোর পরও আ হ ম মোস্তফা কামালকে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। আর তার পুরস্কার তিনি দিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। তার আপন ছোট ভাই এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

জাহিদ মালেক হলেন আওয়ামী লীগের ভাগ্যবান এক ব্যক্তি, যিনি রাজনীতিতে কোনো রকম ত্যাগ তিতিক্ষা না করেই অনেক কিছু পেয়ে গেছেন। বিশেষ করে তার বাবা ছিলেন স্বৈরাচারের দোসর এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কর্নেল মালিকের মতো স্বৈরাচারের দোসরদেরকে ছাত্র জনতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল সেই কর্নেল মালেক পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং তার সূত্র ধরে জাহিদ মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মানিকগঞ্জ থেকে। তিনি ২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিরও সদস্য। অথচ তিনি কিনা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী আ কম মোজাম্মেল হক। তিনি এতোই ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনা তাকে দুবার দলের জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হিসেবে অলঙ্কৃত করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল হয়েছেন সেটি সাধারণ জনগণ ভালো মতোই জানেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পর একজন জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হয়েও তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাতিজা মুরাদ কবীরকে কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রার্থী করেছেন। 

এরকম তালিকা অনেকে দীর্ঘ। যারাই যত বেশি সুযোগ পেয়েছেন তারাই তত বেশি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এটাই আওয়ামী লীগের একটি বড় ট্রাজেডি।

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।


বিএনপি   আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন   মির্জা ফখরুল   ড. মঈন খান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন