নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৯
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে বলা হতো আওয়ামী লীগের লাঠি। শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী যুবলীগ প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সক্রিয় ক্রিয়াশীল এবং শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম, মাঠে লোক জমায়েত করা কিংবা প্রতিপক্ষেকে ঘায়েল করার কাজেই ব্যবহার করা হতো যুবলীগকে। এই চরিত্রের কারণে যুবলীগের মধ্যে অনিবার্যভাবেই ক্যাডার রাজনীতি প্রবেশ করেছিল। আন্দোলন লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজপথ দখলের রাজনীতিতে থাকার জন্য যুবলীগই ছিল ক্যাডারদের অভয়ারণ্য বা নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেভাবেই গড়ে উঠেছে যুবলীগ। এর ফলও আওয়ামী লীগ পেয়েছে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগই প্রথম এর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ করেছিল। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর যুবলীগই তার নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্ব পালন করেছিল।
জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের স্বৈরশাসনামলে আওয়ামী লীগের জন্য যখন জনসভা করা কঠিন ছিল, যখন প্রতিপক্ষরা অস্ত্র উচিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা ভণ্ডুল করতে সবসময় সচেষ্ট থাকতো, সে সময় এই যুবলীগকেই রাজপথ দখলের জন্য ব্যবহার করা হতো। এখন সময় বদলেছে, কিন্তু যুবলীগের সেই চরিত্রটি এখনও রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের জনসভা করতে হবে মানেই যুবলীগ লাগবে। আওয়ামী লীগকে রাজপথ দখল করতে হবে, যুবলীগ লাগবে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্য লড়াই করতে হবে, সেখানেও যুবলীগকে লাগবে।
আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংকরা মনে করছেন যে, যুবলীগের এই বিন্যাস এবং এই বিকাশের কারণেই সংগঠনটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যাডারের জন্ম হয়েছে। এ সমস্ত ক্যাডাররা পরবর্তীকালে দলের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে। যারা এক সময় দলের আস্থার প্রতীক ছিল, তারাই হয়ে গেছে দলের আপদ। এ অবস্থার পরিবর্তন চান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, যুবলীগকে কীভাবে ঢেলে সাজানো যায় এবং কীভাবে এই সংগঠনটিকে একটা নতুন অবয়ব দেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া বের করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই থিংক ট্যাংক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট হস্তান্তর করেছে। এ রিপোর্ট যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বদলে যাবে যুবলীগ। নতুন অবয়বে যে যুবলীগ আসবে, সেটা শুধুমাত্র একটা সহযোগী সংগঠন হয়ে থাকবে। নতুন যুবলীগ হবে মেধাবী তরুণ যুবকদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা আওয়ামী লীগের একটা শোভাবর্ধনকারী সংগঠন হিসেবে পরিচিত হবে।
থিংক ট্যাংকদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ হবে মেধাবী, তরুণ এবং সম্ভাবনাময়দের জন্য একটা প্ল্যাটফরম, যেখান থেকে তরুণদের পেশাগত এবং ক্যারিয়ার বিকাশের জন্য কাজ করা হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণ আইকনদের যুবলীগে নিয়ে এসে সংগঠনের ক্যাডার চরিত্র পাল্টে মূলত একটি আলংকারিক সংগঠন করার প্রস্তাব করেছে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংকরা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নিজস্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সারা দেশে ‘কেমন যুবলীগ চাই’ এ নিয়ে গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, যুবসমাজ যুবলীগকে তরুণ মেধাবীদের একটা প্ল্যাটফরম হিসেবে দেখতে চায়, যেন অন্য তরুণরাও তাদের মতো হতে উজ্জীবিত হয় এবং তাদের মতো হওয়ার পথ খুঁজে পায়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা প্রতিষ্ঠিত যেমন, ক্রীড়াক্ষেত্রে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম; মিডিয়াজগতের মাহফুজ, রিয়াজ, ফেরদৌস; সংগীত জগতের তাপস, বাপ্পা মজুমদার, ইমরান মাহমুদুল, এবং তরুণ লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে একত্রিত করা হবে যুবলীগে। ঠিক একইভাবে যুব মহিলা লীগেও তারিন, শমী কায়সার, আফসানা মিমিদের মতো তারকাদের সামনে নিয়ে আসা হবে। এর ফলে যুবলীগ আগের মতো আওয়ামী লীগের লোক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হবে না। যুবলীগ হবে তরুণদের মেধামনন চর্চার একটা প্রতিষ্ঠান। যুবলীগ হবে তরুণদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা দেখে অন্য তরুণরা উজ্জীবিত ও উদ্বুদ্ধ হবে। এটা করতে গেলে যুবলীগের বর্তমান গঠনতন্ত্র এবং কার্যক্রমের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক থিংক ট্যাংক জানিয়েছে্ন। সে লক্ষ্যে কাজও হচ্ছে বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। তবে পুরোপুরিভাবে যুবলীগকে একটা আলঙ্কারিক তরুণ-যুবকদের প্ল্যাটফরম করা হবে নাকি এর রাজনৈতিক শক্তিকেও বজায় রাখা হবে, সেটা নিশ্চিত নয়।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এখনও এ ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেসের মাধ্যমে যে যুবলীগের নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন হবে তা বলাই বাহুল্য। সেই পরিবর্তনে যুবলীগের বর্তমান বাজে ইমেজ কাটিয়ে তোলার জন্য স্ব স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতিমানদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।
ধারণা করা হচ্ছে যে, কোনো রাজনৈতিক নেতার যুবলীগের নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে জনপ্রিয় কোনও যুবক তরুণ, যিনি তার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এরকম একগুচ্ছ মুখকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ, রিয়াজ, ফেরদৌসের মতো ব্যক্তিদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাশারাফি বিন মর্তুজা ইতিমধ্যে এমপি হয়েছেন। রিয়াজ এবং ফেরদৌসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদেরকে নিয়ে তিনি গতবছর নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি মাহফুজ, মীর সাব্বিরদেরকে নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এরকম তারকাখ্যাতিসম্পন্ন কিছু মানুষকে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন। তাদের তত্ত্বাবধানে তরুণ প্রতিভাবান এবং ছাত্রলীগ থেকে সদ্যবিদায়ীদেরকে যুবলীগের সদস্য করা হবে, যেন যুবলীগ তার বর্তমান বাজে ইমেজ থেকে বের হতে পারে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা সে প্রশ্ন করছেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন