ইনসাইড পলিটিক্স

বদলে যাবে যুবলীগ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৩ অক্টোবর, ২০১৯


Thumbnail

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগকে বলা হতো আওয়ামী লীগের লাঠি। শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী যুবলীগ প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে সক্রিয় ক্রিয়াশীল এবং শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে। যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম, মাঠে লোক জমায়েত করা কিংবা প্রতিপক্ষেকে ঘায়েল করার কাজেই ব্যবহার করা হতো যুবলীগকে। এই চরিত্রের কারণে যুবলীগের মধ্যে অনিবার্যভাবেই ক্যাডার রাজনীতি প্রবেশ করেছিল। আন্দোলন লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজপথ দখলের রাজনীতিতে থাকার জন্য যুবলীগই ছিল ক্যাডারদের অভয়ারণ্য বা নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেভাবেই গড়ে উঠেছে যুবলীগ। এর ফলও আওয়ামী লীগ পেয়েছে।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগই প্রথম এর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ করেছিল। ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর যুবলীগই তার নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্ব পালন করেছিল।

জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের স্বৈরশাসনামলে আওয়ামী লীগের জন্য যখন জনসভা করা কঠিন ছিল, যখন প্রতিপক্ষরা অস্ত্র উচিয়ে আওয়ামী লীগের জনসভা ভণ্ডুল করতে সবসময় সচেষ্ট থাকতো, সে সময় এই যুবলীগকেই রাজপথ দখলের জন্য ব্যবহার করা হতো। এখন সময় বদলেছে, কিন্তু যুবলীগের সেই চরিত্রটি এখনও রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের জনসভা করতে হবে মানেই যুবলীগ লাগবে। আওয়ামী লীগকে রাজপথ দখল করতে হবে, যুবলীগ লাগবে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে প্রকাশ্য লড়াই করতে হবে, সেখানেও যুবলীগকে লাগবে।

আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংকরা মনে করছেন যে, যুবলীগের এই বিন্যাস এবং এই বিকাশের কারণেই সংগঠনটিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্যাডারের জন্ম হয়েছে। এ সমস্ত ক্যাডাররা পরবর্তীকালে দলের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে। যারা এক সময় দলের আস্থার প্রতীক ছিল, তারাই হয়ে গেছে দলের আপদ। এ অবস্থার পরিবর্তন চান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, যুবলীগকে কীভাবে ঢেলে সাজানো যায় এবং কীভাবে এই সংগঠনটিকে একটা নতুন অবয়ব দেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া বের করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই থিংক ট্যাংক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট হস্তান্তর করেছে। এ রিপোর্ট যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে বদলে যাবে যুবলীগ। নতুন অবয়বে যে যুবলীগ আসবে, সেটা শুধুমাত্র একটা সহযোগী সংগঠন হয়ে থাকবে। নতুন যুবলীগ হবে মেধাবী তরুণ যুবকদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা আওয়ামী লীগের একটা শোভাবর্ধনকারী সংগঠন হিসেবে পরিচিত হবে।  

থিংক ট্যাংকদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ হবে মেধাবী, তরুণ এবং সম্ভাবনাময়দের জন্য একটা প্ল্যাটফরম, যেখান থেকে তরুণদের পেশাগত এবং ক্যারিয়ার বিকাশের জন্য কাজ করা হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণ আইকনদের যুবলীগে নিয়ে এসে সংগঠনের ক্যাডার চরিত্র পাল্টে মূলত একটি আলংকারিক সংগঠন করার প্রস্তাব করেছে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব থিংক ট্যাংকরা।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নিজস্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে সারা দেশে ‘কেমন যুবলীগ চাই’ এ নিয়ে গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল। সেই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, যুবসমাজ যুবলীগকে তরুণ মেধাবীদের একটা প্ল্যাটফরম হিসেবে দেখতে চায়, যেন অন্য তরুণরাও তাদের মতো হতে উজ্জীবিত হয় এবং তাদের মতো হওয়ার পথ খুঁজে পায়।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা প্রতিষ্ঠিত যেমন, ক্রীড়াক্ষেত্রে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম; মিডিয়াজগতের মাহফুজ, রিয়াজ, ফেরদৌস; সংগীত জগতের তাপস, বাপ্পা মজুমদার, ইমরান মাহমুদুল, এবং তরুণ লেখক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে একত্রিত করা হবে যুবলীগে। ঠিক একইভাবে যুব মহিলা লীগেও তারিন, শমী কায়সার, আফসানা মিমিদের মতো তারকাদের সামনে নিয়ে আসা হবে। এর ফলে যুবলীগ আগের মতো আওয়ামী লীগের লোক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হবে না। যুবলীগ হবে তরুণদের মেধামনন চর্চার একটা প্রতিষ্ঠান। যুবলীগ হবে তরুণদের একটা প্ল্যাটফরম, যেটা দেখে অন্য তরুণরা উজ্জীবিত ও উদ্বুদ্ধ হবে। এটা করতে গেলে যুবলীগের বর্তমান গঠনতন্ত্র এবং কার্যক্রমের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক থিংক ট্যাংক জানিয়েছে্ন। সে লক্ষ্যে কাজও হচ্ছে বলে তারা নিশ্চিত করেছেন। তবে পুরোপুরিভাবে যুবলীগকে একটা আলঙ্কারিক তরুণ-যুবকদের প্ল্যাটফরম করা হবে নাকি এর রাজনৈতিক শক্তিকেও বজায় রাখা হবে, সেটা নিশ্চিত নয়।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এখনও এ ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি। তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেসের মাধ্যমে যে যুবলীগের নেতৃত্বের আমূল পরিবর্তন হবে তা বলাই বাহুল্য। সেই পরিবর্তনে যুবলীগের বর্তমান বাজে ইমেজ কাটিয়ে তোলার জন্য স্ব স্ব ক্ষেত্রে খ্যাতিমানদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।

ধারণা করা হচ্ছে যে, কোনো রাজনৈতিক নেতার যুবলীগের নেতৃত্বে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত দিয়েছেন তাতে জনপ্রিয় কোনও যুবক তরুণ, যিনি তার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এরকম একগুচ্ছ মুখকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনা হবে।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ, রিয়াজ, ফেরদৌসের মতো ব্যক্তিদেরকে যুবলীগের নেতৃত্বে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাশারাফি বিন মর্তুজা ইতিমধ্যে এমপি হয়েছেন। রিয়াজ এবং ফেরদৌসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদেরকে নিয়ে তিনি গতবছর নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি মাহফুজ, মীর সাব্বিরদেরকে নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এরকম তারকাখ্যাতিসম্পন্ন কিছু মানুষকে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগের নেতৃত্বে নিয়ে আসবেন। তাদের তত্ত্বাবধানে তরুণ প্রতিভাবান এবং ছাত্রলীগ থেকে সদ্যবিদায়ীদেরকে যুবলীগের সদস্য করা হবে, যেন যুবলীগ তার বর্তমান বাজে ইমেজ থেকে বের হতে পারে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা সে প্রশ্ন করছেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি ও শরবত বিতরণ

প্রকাশ: ০৯:১৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

তীব্র তাপদাহ বিপর্যস্থ জনজীবনে পরিশ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত জনসাধারণের মাঝে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু'র নেতৃত্বে সুপেয় পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্পট ঘুরে বেলা সাড়ে তিনটায় জিগাতলায় এসে শরবত ও সুপেয় পানি বিতরণ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ- সভাপতি কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ইসহাক মিয়া, কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক কেএম মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, প্রতিবন্ধী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ টিংকু, মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সহ সভাপতি শাহ আলম মিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এ হান্নান হাওলাদার শাওন প্রমুখ।


স্বেচ্ছাসেবক লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়া কি তারেকের ভুল কৌশলের শিকার?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে দলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। 

কয়েক দিন পর পর হাসপাতালে যেতে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে। তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই নড়বড়ে বলেই মনে করছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা। বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যে অসুখ, সেই অসুস্থতার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চিকিত্সা দরকার এবং সেই চিকিৎসা দেশের সম্ভব নয়। এজন্য তারা মনে করেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া দরকার। তবে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার ব্যাপারে তারেক জিয়ার আগ্রহ নেই। বরং তারেক জিয়ার অনাগ্রহের কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রলম্বিত হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথম উপায় হল, তিনি যদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তাহলে রাষ্ট্রপতি তার অপরাধের দণ্ড মওকুফ করতে পারে বা দণ্ড হ্রাস করতে পারে। সে ক্ষেত্রে তিনি একজন মুক্ত মানুষ হতে পারেন। তখন তার বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোন বাধা থাকবে না।

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই এই মতের বিরোধী। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা অর্থাৎ তার ভাই এবং বোন তার জীবনের প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করতে চান। তারা মনে করেন যে, বেগম জিয়ার এখন যে অবস্থা তাতে রাজনীতির চেয়ে তার চিকিত্সাই সবচেয়ে জরুরি। আর এই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন তাহলে এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তার তারেক জিয়া মনে করছে যদি বেগম জিয়া তার দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান তাহলে সেটি হবে রাজনৈতিক আত্মহত্যার সামিল। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারেক জিয়ার ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকার। নিজের স্বার্থে তিনি তার মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করছেন জিয়া পরিবারের দুই সদস্য। 

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার দ্বিতীয় উপায় হল আদালতের আশ্রয় নেওয়া। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেরকম তা নিয়ে যদি আদালতে আবেদন করা হয়, আদালত সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে যদি রায় দেয় যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে সরকার কোন বাধা হবে না। কারণ আদালতের রায় চূড়ান্ত। এভাবে বহুবার উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতের রায়ে বিদেশ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের। এটি কোন নতুন প্রক্রিয়া নয়। কিন্তু তারেক জিয়া বিএনপির আইনজীবীদেরকে এ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য বাধা দিচ্ছেন।

বিএনপি নেতারাও এই ধরনের বাধা বিস্মিত। তারা জানেন না তারেক জিয়া কেন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন না। এ নিয়ে বিএনপির কারোরই কোন ব্যাখ্যা নেই। 

বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, বেগম জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া তারেক জিয়ার নির্দেশে থমকে গেছে এবং সেই থমকে যাওয়ার কারণ অজানা। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় দেশের তিলে তিলে মৃত্যুবরণ করুক- এটিই হয়তো তারেক জিয়া চান। কারণ তারেক জিয়া যদি তার মার প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা দেখাতেন সে ক্ষেত্রে তিনি সরকারের সাথে সমঝোতা না করুন কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু সেটি তিনি গ্রহণ না করাতে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে,বেগম জিয়াকে এই অবস্থায় রেখে তারেক জিয়া পূর্ণ ক্ষমতা গ্রহণ করতে চান। 

অনেকে মনে করেন যে, বেগম জিয়া যদি না থাকেন, সে ক্ষেত্রে তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বেগম জিয়া সুস্থ হলে তারেক জিয়ার কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ কারণেই কি তিনি বেগম জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদেশে নিতে অনাগ্রহী? এই প্রশ্নটি এখন উঠেছে। 

বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়ার তৃতীয় পথ হলো সরকারের সাথে সমঝোতা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, সেটির কোন সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার মাধ্যমে জামিন নিয়েছেন। একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে সরকারের দুটি সুবিধা দেওয়ার কোন বিধান নেই। আর বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যদি বেগম জিয়াকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করানো যায় এবং তিনি যদি বিএনপি সঙ্গে সকল সম্পর্ক ত্যাগ করেন তাহলে হয়তো সরকারের সাথে একটা সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু সেটাতেও তারেক জিয়ার সায় নেই। তারেক জিয়ার কারণেই যেমন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তারেক জিয়ার কারণেই হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসাও বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।




খালেদা জিয়া   বিএনপি   এভারকেয়ার হাসপাতাল   তারেক জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয়?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।

আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।

বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।

জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।

এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।

শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।

আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।

কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।

কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।

বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।


শেখ   হাসিনা   আওয়ামী লীগ   তৃণমূল   উপজেলা নির্বাচন   রাজনীতি   ড. আব্দুর রাজ্জাক   শাজাহান খান   জাহিদ মালেক   মোস্তফা কামাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০৭:৩৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

জরুরি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হয়ে ৭টা ৫ মিনিটে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের অবস্থা আগের মতই। তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা কিছু পরীক্ষা দিয়েছেন সেটা করাতে নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে উনাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই দফায় তিনদিন হাসপাতাল থাকার পর গুলাশানের বাসায় ফেরেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়।

৭৯ বয়সী এই রাজনীতিবিদ লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুস জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছেন। গত কয়েক বছর ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে।

এভারকেয়ার হাসপাতাল   খালেদা জিয়া   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আরও ৬৬ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিএনপির

প্রকাশ: ০৭:২১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এবার একযোগে ৬৬ জন নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দু–এক দিনের মধ্যেই তাদের দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে দল থেকে নির্দেশনার পরও এ সব নেতারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। একই কারণে সম্প্রতি তৃণমূলের ৭৫ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দুই ধাপে বিএনপির নেতাদের বহিষ্কারের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৪১।

জানা গেছে, দ্বিতীয় দফায় বহিষ্কারের তালিকায় থাকা ৬৬ জনের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৯ জন। ২০ জন নেতা হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী; আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ১৭ জন। এর বাইরে দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া নেতাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদের ২ জন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, এবার কমবেশি ৪৮০ উপজেলা পরিষদে চার ধাপে ভোট হবে। প্রথম ধাপে ভোট হবে ৮ মে। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে সব ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

বহিষ্কার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন