নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০৮ নভেম্বর, ২০১৯
আগামী ২০ এবং ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এই কাউন্সিল অধিবেশনকে ঘিরে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে এবার আলোচনা এবং জল্পনা কল্পনা অনেক বেশি হচ্ছে।
বিশেষ করে আওয়ামী লীগে যখন শুদ্ধি অভিযান চলছে। দলের সুবিধাবাদী এবং বহিরাগতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে তখন অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে এবার কাউন্সিল নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের বাইরে মানুষের মধ্যে আগ্রহ অনেকবেশি। কিন্তু এর মধ্যে একটা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, তিনি আর দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে চান না।
উল্লেখ্য যে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ সরকার মন্ত্রিসভা গঠন করে। এ সরকার গঠনের পরপরই আল জাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এবারই শেষ মেয়াদ এরপর আর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ নেবেন না। সেই হিসাবে ২০২৩ সালে পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগ করবেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির একান্ত ঘনিষ্ঠরা বলেছেন যে, শেখ হাসিনা তার সেই অবস্থান থেকে একবিন্দুও সরে আসেননি, বরং তিনি বিভিন্ন আলাপ আলোচনায় বার বার ঐ একই আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, পরবর্তী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন না এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
সেই থেকেই বিবেচনা থেকেই ধারণা করা হচ্ছিলো যে, ২০২৩ পর্যন্ত হয়ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব শেখ হাসিনা রাখবেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেই তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিনি তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছেন যে, তিনি চান দলে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হোক, সরকার এবং দল আলাদা থাকুক। এ বিবেচনা থেকেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে চান। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের নেতাকর্মীরা যেন অন্য কাউকে বেছে নেয় তিনি কাউন্সিলে অনুরোধ রাখবেন বলেই তার ঘনিষ্ঠদেরকে বলেছেন।
উল্লেখ্য, দলের সভাপতির পদ ছাড়ার বিষয়টি নতুন নয়। এর আগেও অন্তত তিনটি কাউন্সিলে তিনি বলেছেন যে তিনি দায়িত্ব পালন করতে চান না। কিন্তু নেতাকর্মীদের আবেগের কাছে তাকে পরাজিত হতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা। ৩৮ বছর ধরে সভাপতির পদে থাকা অনেক দীর্ঘ সময় বলে দলের অনেক ঘনিষ্ঠ নেতাদের কাছে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা। তাই তিনি বলেছেন যে, আর তিনি এই পদে থাকতে চান না।
কিন্তু, ধারণা করা হচ্ছে যে এবারও তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধার মুখে পড়বেন। কারণ আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি। নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার বাইরে কাউকে চিন্তাও করতে পারে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনা হয়ত কাউন্সিলে এরকম একটি ঘোষণা দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ঘোষণা কর্মীদের চাপের মুখে টিকবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, যেকোনো সময়ের চেয়ে শেখ হাসিনা এবার আরও অনমনীয় অবস্থান নিয়েছেন। তিনি মনে করছেন যে, সভাপতির পদটি ছাড়ার এটাই উপযুক্ত সময়। সভাপতির পদ ছাড়লেও তিনি আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, এমন মনোভাবও তিনি ব্যক্ত করেছেন।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, আগামী বছর থেকে শুরু হচ্ছে মুজিব বর্ষ। ৮ ডিসেম্বর থেকে মুজিব বর্ষের কাউন্টডাউন শুরু হবে। সেই বিবেচনায় শেখ হাসিনা এখন দলের সভাপতির পদ ছাড়বেন, এমনটি মেনে নেওয়ার মতো নয়। পরবর্তী কাউন্সিলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, তখন নতুন নেতৃত্ব আসবে।
তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠরা বলছেন, শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, নতুন নেতৃত্ব ঠিক করবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া নেতৃত্ব কখনো দল বা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।