নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯
রাজনীতিতে এক চরম সংকটে রয়েছে বিএনপি। দলের মধ্যে সিদ্ধান্তহীনতা, দ্বিধা দ্বন্দ্ব এবং করণীয় নিয়ে বিভক্তি একে অপরের প্রতি অবিশ্বাস এবং সর্বপরি দল পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে বিএনপি তার প্রতিষ্ঠালগ্নের পর থেকে সবচেয়ে ক্রান্তিকাল সময় অতিবাহিত করছে। আর এই ক্রান্তিকালে বিএনপিতে সরব দেখা যেত যে সমস্ত বুদ্ধিজীবিদেরকে তাদের একটি বড় অংশ এখন নিরব। তারা প্রায় লোক চক্ষুর অন্তরালে এবং অনেক হারিয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের খবর পত্র নেই। এদের কয়েক জনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন।
শফিক রেহমান
শফিক রেহমান বিএনপির অন্যতম প্রধান থিঙ্কট্যাঙ্ক ছিলেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। চার্টার্ড একাউন্ট থেকে সাংবাদিক শফিক রেহমান দীর্ঘ দিন ধরেই দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে নেই। বর্তমান সরকার আসার পর প্রথমে তাকে বেশকিছু দিন উদ্যোগী দেখা গেলেও, বর্তমানে তার কোন খোঁজ নেই। বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ লেখক হিসেবেও তার পরিচিতি ছিল। কিন্ত প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় হত্যা প্রচেষ্টার ষড়ষন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গ্রেপ্তার থেকে মুক্ত হওয়ার পর তিনি প্রায় লোক চক্ষুর অন্তরালে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে দৃশ্যমান নন।
মাহমুদুর রহমান
মাহমুদুর রহমান ছিলেন বিএনপির আরেক থিঙ্কট্যাঙ্ক। বিএনপিতে যারা দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে সক্রীয় ছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন এই মাহমুদুর রহমান। দৈনিক আমার দেশের এই ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এখন মুখে কুলুপ এটেছেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রয়েছেন। এবং এই গণপদত্যাগসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার মতামত প্রতিক্রিয়া ইত্যাদিও কেউ জানে না। তিনি এক রকম বিএনপিকে বর্জন করে আছেন। তার ঘনিষ্ঠরা বলেন, মাহমুদুর রহমান কখনোই বিএনপির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। কিন্তু ২০০১-২০০৬ সালের জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান যে বিএনপির অন্যতম নীতি নির্ধারক ছিলেন এ ব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ নেই।
ফরহাদ মজহার
ফরহাদ মজহার একদা বামপন্থী থেকে মৌলবাদী বুদ্ধিজীবী হিসেবে আর্ভিভূত হয়ে বিএনপির একজন থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত পেয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াকে নানা হিত উপদেশ দেওয়ার জন্য তিনি আলোচনায় ছিলেন। কিন্তু নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে তিনি এখন লোক চক্ষুর অন্তরালে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই। এর পাশাপাশি বিএনপিকে তিনি কোনো হীত উপদেশ দেন এমন কোনো তথ্যও পাওয়া যায় না। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে তিনি একেবারে নিখোঁজ ব্যক্তি হিসেবেই চিহ্নিত হচ্ছেন।
ড. মাহবুব উল্লাহ
ড. মাহবুব উল্লাহ বিএনপির একজন বড় থিঙ্কট্যাঙ্ক ছিলেন। কিন্তু তার ছোট ভাই মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি একজন নিবৃতচারী জীবন যাপন করছেন। তার ঘনিষ্ঠজনরা অবশ্য বলছেন, বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে ত্যক্ত বিরক্ত হয়েই ড. মাহবুব উল্লাহ নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন। এমনকি বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই বলেই দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে।
ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ
ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বিএনপির সরব বুদ্ধিজীবিদের অন্যতম ছিলেন। কিন্তু সেই এমাজউদ্দীন আহমেদও এখন নিরব। শুধুমাত্র বিভিন্ন দিবসে কিছু লেখালেখি ছাড়া কোনো কার্যক্রমে নেই। অবশ্য তার ঘনিষ্ঠজনরা অবশ্য বলছেন, বার্ধক্যজনিত কারণেই তিনি নানা রকম অসুস্থতায় আক্রান্ত সেই জন্যই তাকে এখন দৃশ্যমান দেখা যায় না।
যার ফলে এই সমস্ত বুদ্ধিজীবিদের অভাবেই বিএনপির পক্ষে কথা বলার মতো সুশীল এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না এবং বিএনপির দেউলিয়াত্বের এটি আরেকটি দিক বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।