নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৪ পিএম, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯
শেষ পর্যন্ত বিএনপি বেগম খালেদা জিয়া প্যারোলের জন্য আবেদন করবেন। বিএনপি নেতারা বলছেন, তারা প্যারোল বলবেন না। তারা সরকারের কাছে একটি আবেদন করবেন যে খালেদা জিয়া অসুস্থ তার উন্নততর চিকিৎসা প্রয়োজন। তার যে অসুস্থতা তার জন্য বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন।
অর্থাৎ সরাসরি প্যারোলের আবেদন না করে তারা পরোক্ষভাবে প্যারোলের আবেদন করবে। তবে আইনজীবিরা বলছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বলতে কিছু নেই। আবেদন করলে প্যারোলের কথা উল্লেখ করতে হবে।
আজ সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি সভায় বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য শেষ পর্যন্ত প্যারোলের আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও বিএনপি এর আগেও বলছিল যে, তারা খালেদা জিয়াকে আন্দোলন অথবা জামিনের মাধ্যমে মুক্ত করবে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ারাধীন বিষয়। এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরী হয়। বেগম খালেদা জিয়ার জেষ্ঠ্য পুত্র তারেক জিয়া হঠাৎ করেই প্যারোলের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। বিএনপির নেতাদেরকে বোঝাতে শুরু করেন যে প্যারোলে মুক্তি পেলে তার রাজনীতির কোন অসুবিধা হবে না।
যদিও বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্রথমদিকে এর তীব্র বিরোধীতা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারেকেরই জয় হলো। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন যে, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতারা আড়ালে আবডালে কথা বললেও প্রকাশ্যে তারেক জিয়ার মুখের ওপর কথা বলার মত এখনো অবস্থান তৈরী হয়নি। তারেক জিয়ার কথাই বিএনপিতে শেষ কথা। আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও তারেক জিয়া স্কাইপিতে যোগ দেন। তিনি তখন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
এছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পেঁয়াজের লাগামহীন উর্ধ্বগতি, ট্রেন দূর্ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং এ ব্যপারে বিবৃত্তি প্রদান করেন। তবে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বৈঠকের মূল আলোচ্য ছিল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়। তবে সেক্ষেত্রে তারা জামিনের আবেদন করবেন।
তবে বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, জামিনের আবেদনটি বেগম খালেদা জিয়ার কোনো আত্মীয় করবেন। এটা দলের পক্ষ থেকে করা হবে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির ঐ নেতা বলেছেন, দলের পক্ষ থেকে আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্যারোলের আবেদন বা মুক্তির আবেদন করবে তার পরিবারের সদস্যরাই। সেক্ষেত্রে তার ভাই বোন আবেদন করতে পারেন বলে বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।