নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
এবার কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের মূল মন্ত্রই হলো শুদ্ধ আওয়ামী লীগ। দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত একটা আওয়ামী লীগ। যারা দলের ত্যাগি, পরীক্ষিত তাদেরকে মূল্যায়ন করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের নবযাত্রার সূচনা। এই পরিপ্রেক্ষিতেই আওয়ামী লীগ তার কাউন্সিল অধিবেশন করছে। এর মধ্যে জেলা পর্যায়ে যে সম্মেলনগুলো হচ্ছে সেই সম্মেলনগুলোতে দলের অনুপ্রবেশকারী এবং বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগে এরকম কিছু নেতা পাওয়া গেছে যাদের দলের বাইরে ইমেজ খুবই নেতিবাচক। দল তাদের জন্য প্রায় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে। কিন্তু নানা পারিপাশ্বিকতা এবং জটিলতার কারণে তাদেরকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগের জন্য তারা যেন একটা প্রয়োজনীয় ‘বিষফোঁড়া’। এই সমস্ত নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ কি করবে সে ব্যাপারে দলের মধ্যে রয়েছে নানা মত ও পদ। অনেকে মনে করেন, দুষ্টু গরুর চেয়ে শুন্য গোয়াল ভালো। আবার অনেকে মনে করেন, কৌশলগত কারণে এখনই তাদের বাদ দেওয়া শোভন এবং সমীচীন না। যাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ বিব্রত তাদের কয়েকজনের মধ্যে রয়েছেন;
শাজাহান খান
গত মেয়াদে মন্ত্রী ছিলেন। এই মেয়াদে মন্ত্রীত্ব না পেলেও এমপি আছেন। একের পর এক নানা রকম বিতর্কিত মন্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি দলের বাইরে ব্যাপক সমালোচিত। সাম্প্রতিক সময় তিনি পরিবহন ফেডারেশনের এক সভায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নেতা চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিরুদ্ধে নানা রকম অসত্য মন্তব্য করেছেন। এছাড়া তিনি ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়ে গেছেন। স্থানীয় পর্যায়ে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিমের বিরোধ অনেক পুরনো। পরিবহন শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট এবং নিরাপদ সড়কের পথে অন্যরকম বাধা মনে করে সাধারণ মানুষ। দলের মধ্যেও তাকে নিয়ে নানা রকম সমালোচনা আছে। তারপরেও শ্রমিক বেল্টে তার বিশাল প্রভাব বলয় থাকার কারণে বিব্রত হলেও আওয়ামী লীগ তাকে নিয়ে নিরব।
নিজাম হাজারী
ফেনীতে এক সময় জয়নাল হাজারীর একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। এখন ফেনীর রাজত্ব নিজাম হাজারীর হাতে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। তবে এই অভিযোগগুলোর কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা তা যাচাই করার মতো কেউ নেই। কারণ নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে কথা বলার মতো লোক ফেনীতে পাওয়া যাবে না। তবে গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে মাঝে মধ্যেই নানা রকম সংবাদ প্রকাশিত হয়। সাধারণ মানুষের মুখ দিয়ে নিজাম হাজারীর ইমেজ খুবই নেতিবাচত। তারপরেও ফেনীতে তার প্রভাব বলয় এবং রাজনীতিতে কৌশলগত কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।
হুইপ শামসুল হক
হুইপ শামসুল হক শুদ্ধি অভিযানের সময় বিতর্কিত হন। তাকে নিয়ে নানা রকম বিতর্ক আছে এবং তার ইমেজ নেতিবাচক। শুদ্ধি অভিযানের সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বার্তা শোনা গেলেও পরবর্তীতে তা মাঝ পথেই থেমে যায়। আওয়ামী লীগের এই হুইপ প্রভাবশালী হলেও চট্টগ্রামের বাইরে তার ইমেজ খুবই নেতিবাচক। রাজনীতিতে কৌশলগত কারণে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না আওয়ামী লীগ।
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন যুব লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অনৈতিক টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। শুদ্ধি অভিযানের শুরুতেই তার ব্যাংক হিসেব তলব করা হয়েছিল। এছাড়া আইনি প্রকিয়াও শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সেই আইনি প্রক্রিয়ার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর আগে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের চালকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনার রহস্য আজও উন্মোটিত হয়নি। নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন কি কারণে আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য তা নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে।
শামীম ওসমান
যদিও শামীম ওসমানকে নিয়ে এখন বিতর্ক অনেক কম। তবে নারায়নগঞ্জে শামীম ওসমান আর সেলিনা হায়াতের বিরোধ পুররো এবং চর্চিত। শামীম ওসমানের জন্য দুই ধরণের বক্তব্যই পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ তিনি। কিন্তু আওয়ামী লীগের বাইরে তার ইমেজ নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।
এই সমস্ত ব্যক্তি দলের জন্য অ্যাসেট না লিয়াবিলিটি সেই প্রশ্ন থাকতেই পারে। কারণ অনেকেই মনে করেন তারা দলের কাছে এক রকমের বোঝা হয়ে আছেন। কারণ তাদের ইমেজের কারণেই সারা দেশে আওয়ামী সম্পর্কে মানুষের কাছে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। আবার অনেকে মনে করেন দলের জন্য এরা ইতিবাচক কারণ এরা ছাড়া ঐ এলাকার সংগঠন ধরে রাখা অনেক কঠিন। ইতিবাচক না নেতিবাচক সেই বিতর্ক এড়িয়ে সবার দৃষ্টি আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর কাউন্সিলের দিকে। সেই কাউন্সিলে তাদের কি অবস্থান হয় সেটাই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।