নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯
শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাহসী এবং দ্রুত গতিতে তিনি সিদ্ধান্ত নেন এমন খবর রাজনৈতিক মহলে কারো অজানা নয়। যেকোন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ একজন রাজনীতিবিদের সবচেয়ে বড় গুন। সেই গুনে তিনি ভালোই রপ্ত করেছেন। তিনি যে সমস্ত সিদ্ধান্ত দেন তার অধিকাংশ সিদ্ধান্তই সঠিক হয় এবং জনগনের স্বার্থে হয়। প্রশ্ন হলো শেখ হাসিনা সিদ্ধান্তগুলো নেন কিভাবে। তিনি কি একাই সিদ্ধান্ত নেন নাকি কেউ তাকে পরামর্শ দেন। পরামর্শ দিলে তার পরামর্শ কে?
রাষ্ট্র পরিচালনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা অবশ্যই তার পছন্দের কিছু আমলা এবং উর্ধ্বতন রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করেন কিন্তু সিদ্ধান্তটা শেষ বিচারে তিনিই নেন।
সরকারি কাজের ক্ষেত্রে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তিনি পরামর্শ দেন তেমনি রাজনীতি এবং সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি কিছু রাজনীতিবিদদের কথা শোনেন এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চান বা তাদের মতামতগুলো নট নেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ কারা কারা তাকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করেন, পরামর্শ দেন বা সুপারিশ করেন। এই ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অবশ্যই তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা একজন, তাঁর ছেলে এবং সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় একজন, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও কোন কোন বিষয়ে- বিশেষ করে স্বাস্থ্য সমাজ কল্যান বিষয়ক পরামর্শ দেন। কিন্তু এর বাইরেও দলের মধ্যে কিছু ব্যক্তি আছেন যারা নিরবে পরামর্শ দেন এবং সেসব পরামর্শগুলো শেখ হাসিনা গভীর গুরুত্ব এবং মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর সবথেকে আস্থাভাজন হচ্ছে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী। শিরিন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে প্রায়ই বিভিন্ন দেশের রাজনীতি, সরকার-প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেন এবং পরামর্শ নেন। বিশেষ করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে শিরিন শারমিন চৌধুরীর পরামর্শ অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ন হয়ে ওঠে বলে আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামীলীগের এমপি এবং শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় শেখ হেলালও অনেক বিষয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করেন এবং বিশেষ করে রাজনৈতিক অনেক বিষয়ে শেখ হেলালের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন, জানতে চান বলে আওয়ামীলীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বর্তমানে সরকারি দলের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন অনেক বিষয়েই শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করেন। প্রধানমন্ত্রীও অনেক রাজনৈতিক বিষয় তার কাছে জানতে চান। এর বাইরে আওয়ামী লীগ সভাপতির একটা উপদেষ্টামণ্ডলী রয়েছে। সেই উপদেষ্টামণ্ডলীর সালমান এফ রহমান এখন ব্যবসা বাণিজ্য এবং অর্থনীতির অন্যতম পরামর্শক বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি তার মতামত জানতে চান এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তার কাছে থেকে সংগ্রহ করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর যে উপদেষ্টামণ্ডলী রয়েছে তাদের মধ্যে প্রশাসনের অনেক বিষয়ে এইচ টি ইমাম, তারেক সিদ্দিকির সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ভাণ্ডার হলো তৃণমূল। তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। এই সমস্ত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাধ্যমেই বিভিন্ন এলাকায় ঘটা ঘটনার আসল তথ্য পান তিনি। এমন অনেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন যারা হয়তো দলীয় পদমর্যাদায় খুবই নগন্য এমনকি অপরিচিতও বটে। কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের একটা সেতু বন্ধন তৈরি হয়েছে। যারা শেখ হাসিনাকে নিয়মিত তথ্য দেন।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, একটি এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দলীয় কোন্দল হয়েছে। আর যিনি কোন্দন করেছেন তিনি যখন আওয়ামী সভাপতির কাছে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে পুরো ঘটনাটি বলেন। ঘটনার জন্য যিনি অভিযোগ করছেন তিনিই যে দায়ী সেটাও বলে দেন। অর্থাৎ কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য পাওয়ার যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি তিনি চালু করছেন। তথ্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেই তিনি দল এবং সরকারের মধ্যে পূণ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এমনকি সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। যাদের কাছে থেকে তিনি নিভুল, সঠিক এবং পক্ষপাতহীন তথ্য পান। আর একারণেই শেখ হাসিনা সব সিদ্ধান্ত নিজের মতো করে নিতে পারেন। আর তার অধিকাংশ সিদ্ধান্তই সঠিক হয়।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।