নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ আজ এক আদেশে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যেখানে তিনি ৭ বছরের জন্য দণ্ডিত হয়েছিলেন সেই মামলায় তার জামিন চাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যগত কারণে। এই জামিনের আবেদন খারিজ করার আইনী প্রভাব সুদূর প্রসারী বলেই আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সেক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হওয়ার আপাতত সম্ভাবনা নেই।
জেলকোড এবং বিভিন্ন আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, এই রায়ের ফলে বেগম খালেদা জিয়াকে যদি কোন নাটকীয় পরিস্থিতি না হয় তাহলে স্বাভাবিক নিয়মে ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে। এটি হলো নূণ্যতম সাজার মেয়াদ।
উল্লেখ্য যে, বেগম খালেদা জিয়া দুটি মামলায় মোট ১৭ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। জিয়া অরফানেজ মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে প্রথমে ৫ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্ট তা বাড়িয়ে দশ বছর করেছে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার ৭ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট চাইলে আপিল শুনানি নিষ্পত্তিতে বেগম খালেদা জিয়া একটা প্রতিকার পেতে পারেন সেটা হলো দুটি মামলার সাজা একসঙ্গে গণণা করা। সেক্ষেত্রে বেগম খালেদা জিয়ার অন্তত দশ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। আবার জেল কোডের নিয়ম অনুযায়ী একজন দণ্ডিত ব্যক্তির বছর গননা হয় নয় মাসে। সরকারী ছুটি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো বিবেচনা করে জেলে এক বছর গননা করা হয় নয় মাসে। সেই হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার দুই মাস কমে সর্বোচ্চ সাজা দশ বছর হতে পারে (যদি আপিল বিভাগে তা কমানো না হয়)।
সর্বোচ্চ সাজা দশ বছর, সেখানে তিনি দুই বছর ৬ মাসের রেয়াত পাবেন। উল্লেখ্য যে, বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হন। সেদিন থেকে তার কারাগারের দণ্ড গননা শুরু হয়। সেই হিসেবে ২০২৫ সালের ৬ আগস্টের আগে তার মুক্তির কোন সম্ভাবনা নেই।
যদি বেগম খালেদা আদালতে রেয়াত না পান সেক্ষেত্রে তাকে সতেরো বছর দণ্ড ভোগ করতে হবে। অবশ্য সেখানে তিনি সাড়ে তিন বছর রেয়াত পাবেন। সাড়ে তিন বছর রেয়াত পেলেও তাকে প্রায় সাড়ে তেরো বছর কারাভোগ করতে হবে।
অবশ্য আইনজ্ঞরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া বয়স্ক মহিলা সেজন্য তার দুটো দণ্ড গণনা একসঙ্গে হওয়াই প্রত্যাশিত। আইনজ্ঞরা বলেছেন যদিও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতির মামলা এখনো আপিল বিভাগে শুনানি হয়নি। আপিল বিভাগ যদি শুনানি করে তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড কমাতে পারে, বাতিল করতে পারে আবার দণ্ড বহালও রাখতে পারে। এটা আপিল নিষ্পত্তির উপর নির্ভর করবে। কিন্তু আপিল বিভাগে যদি দণ্ড বহাল রাখে তাহলেই এই তত্ত্বটি প্রযোজ্য হবে। আর আপিল বিভাগ যদি পরিবর্তন করে তাহলে এই হিসাবটা পরিবর্তিত হবে।
তবে আইনজীবীরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার এই মামলাগুলো বারবার বিভিন্ন ‘অজুহাতে’ আপিল বিভাগে নিয়ে এসে মেরিট নষ্ট করা হয়েছে। এখন এই মামলাগুলো থেকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিত্রাণ বা নিষ্কৃতি লাভের জন্য সম্ভাবনা খুবই কম।
যেহেতু জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুটিই দূর্নীতির মামলা। কাজেই এটা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ। নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দণ্ডিত হওয়ার কারণে তিনি নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হবেন।
আমাদের সংবিধানের ৬৬ এর ২ (ঘ) ধারায় বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২ বছেরর কারাদণ্ডে যদি দণ্ডিত হয়। তাহলে তার মুক্তির পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকলে তিনি নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হবেন।
সেই বিবেচনায় যদি নূন্যতম সাজা ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত তিনি কারাগারে থাকেন তাহলে ২০৩০ সালের আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারবেন না বেগম খালেদা জিয়া।
পাসপোর্ট অনুযায়ী (যদিও তার একাধিক জন্ম তারিখ রয়েছে) বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার বয়স ৭৪ বছর। ২০২৫ সালে তার বয়স হবে ৮০ বছর। এরপর পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে রয়স হবে ৮৫ বছর। যখন খালেদা জিয়া রাজনীতির জন্য যোগ্য হবেন তখন তার বয়স হবে ৮৫ বছর। এই শারীরিক অবস্থা আর বাস্তবতা বিবেচনায় ৮৫ বছর বয়সে তিনি রাজনীতি আদৌও করতে পারবেন কিনা সে নিয়ে সকলেরই সন্দেহ রয়েছে।
কাজেই এই ছোট আদেশের মধ্যে দিয়ে কারাগার থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে গেলো। বেগম জিয়ার রাজনীতি অধ্যায় শেষ হয়ে গেল বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং আইনজ্ঞরা মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা আজ সোমবার বিকেল
৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক
কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে।
রবিবার (৫ মে) আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত
এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সৃভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে
অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফিলিস্তিনের পতাকা ছাত্রলীগ
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান
পদে প্রার্থী হওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল
কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুর ১২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা
ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র
বাতিল করেন।
জানা যায়, আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, সদর
ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানীগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে সেতুমন্ত্রীর
ভাইসহ চারজন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন-
১। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন
২। উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ
গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল
৩। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান
সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল
৪। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ওমর আলী
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি তিনজনের মনোনয়ন
বৈধ হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে হলফনামায় মামলা ও আয় বিবরণীর
তথ্য গোপন করায় চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সংশোধন
পূর্বক জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর আপিলের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেন বলেন, ‘আমার নামে যে মামলা
ছিল তা আমার জানা ছিল না। এ ছাড়া আয় বিবরণীর হিসাব দেওয়া হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা
তা খেয়াল করেননি। আপিল করার সুযোগ আছে। আমি আপিল করবো। আশা করি আমার মনোনয়ন বৈধ হবে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই মন্ত্রী। স্বজন বলতে সন্তান-স্ত্রীকে
বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটা ক্লিয়ার করেছেন। আমার ভাই ওবায়দুল কাদের সাহেবও সেটা
ক্লিয়ার করেছেন। আশা করি স্বজনের ভুল ব্যাখ্যা থেকে সবাই সরে আসবে’।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের তফসিল
অনুযায়ী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১২ মে, প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোটগ্রহণ হবে
আগামী ২৯ মে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান
পদে মোট ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন। একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহদাত হোসেন ছাড়া বাকি সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের শাহদাত হোসেন
মন্তব্য করুন
আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির
স্বজনদের বিরত রাখা আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এখানে আইনগত কোনো বিষয় নেই বলে
জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (৫ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির
ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশের
কর্তাব্যক্তিরা আমাদের দেশে মানবাধিকার যে চোখে দেখে, নিজের দেশে সেই দৃষ্টিতে দেখবে
না কেন?
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রের
সঙ্গে কোনো সংঘাতে নেই। তবে সত্য বললে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে তো কিছু করার নেই।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রতিবাদ দমনে যে আচরণ করা হয়েছিল, একই রকম নির্মম আচরণ এখন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের মানবাধিকার
নিয়ে তারা কথা বলে। আমরা কি এসব নিয়ে কথা বলতে পারবো না? আমাদের দেশে তারা যে দৃষ্টিতে
মানবাধিকার দেখে সে দৃষ্টিতে নিজের দেশে দেখবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব
নেই এমন কথাতো আমরা বলিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যুদ্ধের কারণে
বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে তা বাংলাদেশেও আছে। বাংলাদেশ এ প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।
যেমন, দ্রব্যমূল্যের যে চাপ তা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন
করলে নির্বাচনটি আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে—এ ভাবনা থেকে আওয়ামী
লীগ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ স্থগিত করেছে। এর মানে এই নয় যে অন্যান্য
দলগুলো নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ করতে পারবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ান আব্দুস সবুর, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ
দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি ওবায়দুল কাদের বিএনপি
মন্তব্য করুন