নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক টানাপোড়েন থেকে উত্তরনের জন্য এবং ভারতের মনোভাব কি তা জানার জন্য ভারতের সঙ্গে কথা বলবে আওয়ামী লীগ। নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিক বিল নিয়ে বাংলাদেশের কোন সমস্যা হবে কিনা তা বোঝার জন্য আওয়ামী লীগের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমটি তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে ভারতের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করবে। প্রকৃত বাস্তব অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলবেন। তবে কখন কিভাবে দুই প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন এ ব্যাপারে এখনো কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও যারা ভারতের বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তার মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক মহলের একটি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। এই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি ভারতের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন। বিশেষত নাগরিকত্ব বিল বাংলাদেশের ওপর কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা। আসামের নাগরিকপঞ্জীর কারণে বাংলাদেশের ওপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা সে সম্পর্কে তারা অবহিত করবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রবীণ দুই নেতা আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আমির হোসেন আমুর সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। শুধু কংগ্রেস নয়, বিজেপিরও অনেক নেতার সঙ্গে আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে ভারতের মনোভাব জানতে চাইবেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময় চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, চীন থেকে সাবমেরিন কেনা এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের ফলে ভারতের মধ্যে কোন অসন্তোষ তৈরী হয়েছে কিনা এ বিষয় সম্বন্ধে তিনি খোঁজ খবর নেবেন।
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা তোফায়েল আহমেদও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এবং ভারতের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময় ভারতের ঘটনাবলি বাংলাদেশের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কোন ঘটনা ঘটায়নি। তবে অদূর ভবিষ্যতে এই বিষয়গুলো বাংলাদেশ- ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি টানাপোড়েনের সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে আসামের নাগরিকপঞ্জীর ফলে কিছু মুসলমানকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। ভারতের বিজেপি সরকারের নেতৃবৃন্দর এমন বক্তব্যের ফলে কোন সমস্যা হতে পারে বলে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে।
পাশাপাশি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নীপিড়নের ক্ষেত্রে যে বক্তব্য দিয়েছে তা নিয়েও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। এই সমস্ত বিবেচনা থেকেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার মনে করছে যে পানি বেশিদূর গড়ানোর আগেই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। আর এজন্যই এই নেতারা খুব শীঘ্রই যার যার অবস্থান থেকে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্কের অবনতি হলে দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক একটা নতুন মাত্রায় উন্নতি হয়েছে। বিভিন্নক্ষেত্রে সম্পর্কর ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। সেই অগ্রগতির ধারা বিনা কারণে যদি বাধাগ্রস্থ হয় তাহলে সেটা হবে একটা কূটনৈতিক বিপর্যয়। সেই বিপর্যয় যেন না হয় সেজন্য বাংলাদেশ তৎপর এখন থেকে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে তারা মনে করছে ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক রয়েছে। এনিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক যে বিশ্বস্ততার ওপর দাঁড়িয়ে আছে সেই বিশ্বস্ততায় চিড় ধরা সহজসাধ্য হবে না।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।