নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৩ পিএম, ১৮ জানুয়ারী, ২০২০
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া নির্বাচনী হলফনামায় সিঙ্গাপুরে ২০০৮ সালে যৌথ মালিকানায় নিবন্ধিত এনএফএম এনার্জি কোম্পানির তথ্য গোপন করেছেন।
এ কোম্পানিটি বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল) এর একটি বড় অংশের মালিক।
তাবিথ আউয়ালের ভাই তাজওয়ার আউয়াল বিপিসিএলের বোর্ডে সিঙ্গাপুরের এই কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করেন।
কিন্তু তাবিথ আউয়াল নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া নির্বাচনী হলফনামায় তার মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণাধীন যে ৩৭টি কোম্পানির তালিকাটি দিয়েছেন সেখানে বিপিসিএল ও এনএফএম এর নাম নেই।
সিঙ্গাপুরের ব্যবসা নিবন্ধক সংস্থার কিছু ডকুমেন্ট অনুযায়ী, এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সর্বমোট ১০০০ শেয়ারের মধ্যে তাবিথের শেয়ার ৩৪০ শতাংশ এবং বাকি শেয়ারের মালিক তাবিথ আউয়ালের দুই ভাই। তাবিথের দুই ভাই আমেরিকার সিটিজেন হিসেবে এই কম্পানিতে নিজেদের পরিচয় উল্লেখ করেছেন। তারা তিন ভাই ছাড়া একজন সিঙ্গাপুরের নাগরিকও আছেন এই কম্পানির শেয়ারে।
কিন্তু তাবিথ আউয়াল তার কোম্পানিটির নাম তার নির্বাচনী হলফনামায় অন্তর্ভুক্ত করেননি, যা বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন ও বিধির সম্ভাব্য লঙ্ঘন।
সিঙ্গাপুরের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড কর্পোরেট রেগুলেটরি অথরিটি (এসিআরএ) থেকে প্রাপ্ত নথি অনুসারে এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেড ‘পণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে বাণিজ্য’ এবং ‘বিভিন্ন জ্বালানী সম্পর্কিত কম্পানির বিনিয়োগ’’ জড়িত। সংস্থার সর্বশেষ আর্থিক বিবরণী দেখায়, যে এর মোট সম্পদ ২,২৪৩,২৬৭ মার্কিন ডলার এবং ২,৬২৭, ১৯৪ মার্কিন ডলার।
প্রমাণ মিলেছে কম্পানিটিতে বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের (বিপিসিএল) একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে, এবং তাজওয়ার আউয়াল বিপিসিএল বোর্ডে পরিচালক হিসাবে এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাবিথ আউয়াল ইসিকে তার ব্যবসায়িক আগ্রহ হিসাবে এই কম্পানির নাম কোথাও উল্লেখ করেননি।
এদিকে পানামার ব্যবসা নিবন্ধক সংস্থার নথি এবং প্যরাডাইজ পেপারসেও মাল্টিমোড ইন্টারন্যাশনাল নামের এই কোম্পানিটির সন্ধান পাওয়া গেছে যে, কোম্পানিটির ট্রেজারার (কোষাধ্যক্ষ) ও ডিরেক্টর হিসেবে তাবিথ আউয়ালের নাম আছে। মাল্টিমোড ইন্টারন্যাশনাল এসএ নামক এই কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাবিথের বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
এই কোম্পানিগুলোর নাম কেন নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া হয়নি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাবিথ আউয়াল জানান, যে তার আইনজীবীরাই প্রযোজ্য আইনকানুন ও বিধিবিধান দেখে হলফনামাটি প্রস্তুত করেছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের একটি বড় অংশের মালিক যে এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেড এই বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন। কোম্পানির মালিকানার বিষয়টি তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।
ইসি কমিশনার রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, প্রার্থীদের দেশের এবং দেশের বাইরে সমস্ত সম্পদ, দায়বদ্ধতা এবং ব্যবসায়িক আগ্রহ প্রকাশের বিধি রয়েছে নির্বাচনী বিধিমালায়। সেক্ষেত্রে তাবিথ আউয়ালের এই তথ্য গোপনের দায়ে মনোনয়ন বাতিলও হতে পারে।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।