নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৯ জানুয়ারী, ২০২০
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা সিটি কর্পোরেশন নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত। তিনি প্রশ্ন করেছেন যে এই নির্বাচন করে কার কি লাভ হবে? বিএনপি থেকে মেয়র হলেই বা কি উদ্ধার হবে? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক এবং কর্মকর্তাদের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আজ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ডের তিনজন সদস্য তার সঙ্গে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ দেখা করেন। দীর্ঘক্ষণ পর তাদেরকে ডেকে নেন বেগম জিয়া। এরপর তার ব্লাড সুগার পরিমাপ করা হয়, ব্লাড প্রেসার মাপা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা জানান, খালেদার স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখন স্থিতিশীল, তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এসময় বেগম খালেদা জিয়া নিজেই উপযাজক হয়ে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং বিরক্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে সিটি নির্বাচন করে কি হবে? এই নির্বাচন কি সরকার পরিবর্তন করবে? এই নির্বাচনের ফলাফল তো আগে থেকেই নির্ধারিত, ওরা কেন নির্বাচনে যাচ্ছে?
অবশ্য বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা এসময়ে নিরব ছিলেন। তিনি জানতে চান যে নির্বাচনের প্রচারণা কেমন হচ্ছে? উত্তরে একজন চিকিৎসক বলেন যে, নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। দুইপক্ষই প্রচারণা চালাচ্ছে। এরপর খালেদা বলেন, প্রচারণা করে কি হবে, যে জিতবে সেই তো আওয়ামী লীগার হয়ে যাবে। এতে বিএনপির কোনো লাভ হবে না। বিএনপি কেন নির্বাচনে যাচ্ছে, এটা নিয়েও বেগম খালেদা জিয়া প্রশ্ন করেন।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি। উত্তরে তাবিথ আউয়াল এবং দক্ষিণে ইশরাক হোসেন দলটির হয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু জিয়ার পারিবারিক সূত্র বলছে, বেগম খালেদা জিয়ার মতামত ছাড়াই এই নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা এই নির্বাচনে যাওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়ার মতামত নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছিল। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তারই ঘনিষ্ঠ নেতৃবৃন্দ সিটি নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মতামত ছাড়াই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যে নির্বাচনে প্রথমদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলা হলেও পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি উহ্য রয়ে যাচ্ছে। বিএনপির মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থীর কেউই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি তাদের নির্বাচনের প্রচারণায় আনছেন না।
অবশ্য বিএনপির নেতারা বলছেন, কৌশলগত কারণেই তারা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি আনছেন না। কারণ ভোটাররা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হামলা এই বিষয়গুলো নিয়ে আগ্রহী না। বরং মেয়র নির্বাচিত হলে বিএনপির প্রার্থীরা এলাকার জনগণকে কি ধরণের সুযোগ সুবিধা দেবেন বা নগরের উন্নয়নে কি ধরণের কাজ করবে সে ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী।
উল্লেখ্য, বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী মনোনয়র পাওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজকে পর্যন্ত তাবিথ আউয়াল কিংবা ইশরাক হোসেনের পক্ষ থেকে কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আবেদন পত্র স্বারাষ্ট্রমন্ত্রণালয় কিংবা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়নি।
অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি ছিল শুধুমাত্র কথার কথা। বেগম জিয়া মনে করছেন তার মুক্তির বিষয়টিকে আড়াল করার জন্যই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনটি আয়োজন করা হয়েছে। বিএনপিতে সরকারের একটি তল্পিবাহক অংশ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার জন্য এবং সরকারকে একটা অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার জন্য সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।