নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তার ভাই প্যারোলের আবেদন করেছেন। জানা গেছে যে, যেহেতু জেল কর্তৃপক্ষ বলেছে এই আবেদনটি সরাসরি বেগম জিয়াকেই করতে হবে। সেহেতু বেগম জিয়ার কাছে এই আবেদনটি স্বাক্ষরের জন্য নেওয়া হচ্ছে। বিএনপির নেতারা বলেছেন যে, তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার বিএনপিকে আড়াল করেই এই প্যারোলের দরকষাকষি করছে। তবে একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চত করেছেন, প্যারোলের মধ্যস্থতা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতার কথা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্যারোলের শর্ত এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে কামাল হোসেনই যোগাযোগ করছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, গতকাল কামাল হোসেনের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার সাক্ষাৎ করেন। সেখানেই প্যারোলের এই ড্রাফটটি তৈরী করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. কামাল হোসেন প্যারোল নিয়ে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করবেন। একটি সূত্র বলছে, প্যারোলের অন্যতম শর্ত হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি থেকে অবসরের একটি চিঠি বিএনপির মহাসচিব এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি এই চিঠির ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। বিএনপির নেতারা বলেছেন, এ ধরণের প্যারোল,রাজনীতি থেকে অবসর কিংবা বিদেশ যাওয়ার বিষয় তারা কিছুই জানেন না। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি থেকে অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। তার জায়গায় দলে নতুন কাউকে পূর্ণাঙ্গ চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব করেছেন।
জানা যাচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে এই চিঠিটি দিয়েছেন শামীম ইস্কান্দার। সেই চিঠিতে শামীম ইস্কান্দার উল্লেখ করেছেন তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেই সাক্ষাতে বেগম খালেদা জিয়ার মতামতের ভিত্তিতেই এটি করা হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন বলেছেন, এমনিতেই এখন রাজনীতি করার মতো অবস্থায় নেই বেগম জিয়া। তার ফাস্টিং ব্লাড সুগার ১৪/১৫। তার বা হাত পুরো বেঁকে গেছে। এছাড়া তিনি একা দাঁড়ানো বা হাঁটতেও পারেন না। আর গত কয়েকদিন ধরে তার তীব্র জ্বর।
অবশ্য বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তার ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনের জন্য যে উচ্চতর চিকিৎসা দরকার। সেই উচ্চতর চিকিৎসা গ্রহণে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে না জানলেও তারা জানেন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকারের সঙ্গে একটি দরকষাকষি চলছে। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার এবং ড. কামাল হোসেন এর সঙ্গে যুক্ত। তবে বেগম খালেদা জিয়া যদি শেষ পর্যন্ত এই প্যারোল নেন তাহলে তাতে বিএনপির অনেক ক্ষতি হবে বলেই তারা মনে করছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়া বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বিএনপি নেতারা এড়িয়ে যান। তবে একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার এই বার্তাটা পেয়েছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।