নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দর সিদ্ধান্তহীনতা, পলায়নকর মনোবৃত্তি এবং আপোষকামীতায় ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আপামর তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন গণদুশমনে পরিণত হয়েছে। আজ বিএনপির কার্যালয়ে দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা জমায়েত হন এবং বিএনপির নেতৃবৃন্দর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা মনে করছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য গত দুই বছর বিএনপির নেতৃবৃন্দ কিছুই করেননি। তার ব্যাপারে চরম অবহেলা করেছেন। খালেদা জিয়াকে তারা বন্দি রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে। খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকারের চেয়ে তারা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বেশি দায়ী করছে।
গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচী ছিল। এই বিক্ষোভ কর্মসূচীর অনুমতি দেয়নি সরকার। পরবর্তীতে পুলিশের সঙ্গে দেনদরবার করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করার অনুমতি পায় বিএনপি। সেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর বিএনপির কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা মনে করেন যে, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যেই দল একটা নূন্যতম বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করতে পারেনা, সেই দল খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা কিভাবে বলে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে বিএনপি নেতারা কেন বহাল তবিয়তে থাকে, কেন তারা রাজনৈতিক কর্মসূচী দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ইত্যাদি প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সারাদেশে তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ বেগম খালেদা জিয়া কেন্দ্রীক রাজনীতিতে তাদের ক্ষোভের কারণ মূলত পাঁচটি।
প্রথমত, বেগম খালেদা জিয়া যখন গ্রেপ্তার হলেন, তখন থেকেই কেন বিএনপি লাগাতার আন্দোলন গড়ে তোলা হলো না? যেন আন্দোলনের চাপে সরকার বাধ্য হয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ২০১৮ সালের ৩০ শে ডিসেম্বরের আগে বিএনপি যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সমঝোতায় গেল, তখন কেন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি প্রধান দাবি হিসেবে উচ্চারিত হলো না।
তৃতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের সাথে দেন-দরবার করতে হলে সেটা আগে কেন করা হলো না?
চতুর্থত, বেগম খালেদা জিয়ার আইনি প্রক্রিয়া কেন দীর্ঘসূত্র হলো? এবং কেন আইনজীবিরা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলো?
পঞ্চমত, বিএনপি নেতৃবৃন্দ যে বলেছিলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে তারা গণ আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন বা নানা রকম কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। বিএনপি নেতারা বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে নিজেরা কিভাবে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন?
আর এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে যে কোনো কর্মসূচিতে বিএনপি কর্মীরা প্রতিরোধ করবেন এমন ঘোষণাও গতকাল দেওয়া হয়েছিল। আজ তার প্রতিফলন ঘটেছে। আজকেও বিএনপির অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে হুমকি দিয়েছেন তৃণমূলের কর্মীরা। বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা মনে করছেন, দলে খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের পর বিএনপিকে যেভাবে পরিচালিত করা উচিত ছিল, সংগঠিত করা উচিত ছিল এবং খালেদার মুক্তির জন্য সোচ্চার করার প্রয়োজন ছিল তা করতে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ব্যর্থ হয়েছেন।
আর এই ব্যর্থতার জন্য অবশ্যই বিএনপির নেতৃবৃন্দকে দায়ভার নিতে হবে। এই ব্যর্থতার দায়ভার নিয়েই বিএপির নেতৃবৃন্দকে সরে যেতে হবে। তারা মনে করছেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দ যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করতো। তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার এতদিন জেলে থাকার কোনো কারণ নেই। বরং বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করেন সরকারের সঙ্গে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দ নাটক করছেন। আর খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে তারা ফায়দা হাসিলের রাজনীতি করছেন।
আর তাই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি ক্রমশ বিএনপির ভেতর একটা গণবিক্ষোভের আকার ধারণ করছে। যে কারণে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এখন গণদুশমনে পরিণত হয়েছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।