নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৭ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সাধারণ কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। দুটি পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও দলীয় সমর্থন দেয়া হয়।
বুধবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায় এই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এতে সভাপতি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামী ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। আর আজ ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রার্থী দিলো আওয়ামী লীগ।
কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন পেলেন যারা:
ওয়ার্ড নং- ০১ (পাহাড়তলী): গাজী মো. শফিউল আজিম; সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ০২ (জালালবাদ): মোহাম্মদ ইব্রাহিম; সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ।
ওয়ার্ড নং- ০৩ (পাঁচলাইশ): কফিল উদ্দিন খান; বর্তমান কাউন্সিলর।
ওয়ার্ড নং- ০৪ (চান্দগাঁও): মো. সাইফুদ্দিন খালেদ; বর্তমান কাউন্সিলর ও যুগ্ম-আহ্বায়ক, চান্দগাঁও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ০৫ (মোহরা): মোহাম্মদ কাজী নুরুল আমিন; সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, মহানগর ছাত্রলীগ।
ওয়ার্ড নং- ০৬ (পূর্ব ষোলশহর): এম আশরাফুল আলম; বর্তমান কাউন্সিলর ও সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ০৭ (পশ্চিম ষোলশহর): মো. মোবারক আলী; বর্তমান কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।
ওয়ার্ড নং- ০৮ (শুলক বহর): মো. মোরশেদ আলম; বর্তমান কাউন্সিলর ও সদস্য, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ
ওয়ার্ড নং- ০৯ (উত্তর পাহাড়তলী): নুরুল আবছার মিয়া, সভাপতি, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১০ (উত্তর কাট্টলী): নিছার উদ্দিন আহমেদ; বর্তমান কাউন্সিলর ও সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১১ (দক্ষিণ কাট্টলী): মো. ইসমাইল; সভাপতি, ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১২ (সরাইপাড়া): মো. নুরুল আমিন; আহ্বায়ক, ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৩ (পাহাড়তলী): মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী; সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, মহানগর যুবলীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৪ (লালখান বাজার): আবুল হাসনাত মো. বেলাল; সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৫ (বাগমনিরাম): মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন; বর্তমান কাউন্সিলর ও সভাপতি, ১৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৬ (চকবাজার): সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু; বর্তমান কাউন্সিলর ও উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৭ (পশ্চিম বাকলিয়া): মোহাম্মদ শহিদুল আলম; উপ-প্রচার সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৮ (পূর্ব বাকলিয়া): মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ; বর্তমান কাউন্সিলর ও সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৯ (দক্ষিণ বাকলিয়া): মো. নূরুল আলম সভাপতি, ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগ।
ওয়ার্ড নং- ২০ (দেওয়ান বাজার): চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী বর্তমান কাউন্সিলর ও সাংগঠনিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২১ (জামালখান): শৈবাল দাশ সুমন; বতর্মান কাউন্সিলর ও সদস্য, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২২ (এনায়েতবাজার): মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ; বর্তমান কাউন্সিলর ও সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৩ (উত্তর পাঠানটুলি): মোহাম্মদ জাবেদ; বর্তমান কাউন্সিলর ও সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৪ (উত্তর আগ্রাবাদ): নাজমুল হক; বর্তমান কাউন্সিলর ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৫ (রামপুর): আব্দুস সবুর লিটন; যুগ্ম আহ্বায়ক, ২১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৬ (উত্তর হালিশহর): মোহাম্মদ হোসেন; ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৭ (দক্ষিণ আগ্রাবাদ): মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী; যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৮ (পাঠানটুলি): নজরুল ইসলাম বাহাদুর; সভাপতি, ২৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৯ (পশ্চিম মাদারবাড়ী): গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের; বর্তমান কাউন্সিলর ও
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩০ (পূর্ব মাদারবাড়ী): আতাউল্লাহ চৌধুরী; যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক,
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩১ (আলকরণ): মো. আবদুস সালাম; সদস্য, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ
ওয়ার্ড নং- ৩২ (আন্দরকিল্লা): জহর লাল হাজারী; বর্তমান কাউন্সিলর ও
উপ-দপ্তর সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৩ (ফিরিঙ্গী বাজার): মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন; সাবেক সাধারণ সম্পাদক,
মহানগর ছাত্রলীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৪ (পাথরঘাটা): পুলক খাস্তগীর; সদস্য, আহ্বায়ক কমিটি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৫ (বক্সির হাট): হাজী নুরুল হক; উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৬ (গোসাইল ডাঙ্গা): হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; বর্তমান কাউন্সিলর ও
সভাপতি, মহানগর জাতীয় শ্রমিক লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৭ (উঃ মঃ হালিশহর): মো. হোসেন মুরাদ; ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৮ (দঃ মঃ হালিশহর): গোলাম মো. চৌধুরী; বর্তমান কাউন্সিলর ও
সদস্য, মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৩৯ (দক্ষিণ হালিশহর): জিয়াউল হক সুমন; বর্তমান কাউন্সিলর ও
সদস্য, ইপিজেড থানা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৪০ (উত্তর পতেঙ্গা): আবদুল বারেক; সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৪১ (দক্ষিণ পতেঙ্গা): ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী; বর্তমান কাউন্সিলর ও
সভাপতি, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন পেলেন যারা।
ওয়ার্ড নং- ১, ২, ৩: সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন; বর্তমান কাউন্সিল।
ওয়ার্ড নং- ৪, ৫, ৬: জোবাইরা নার্গিস খান; বর্তমান কাউন্সিলর।
ওয়ার্ড নং- ৭ ও ৮: জোহরা বেগম; সভাপতি, ৪২নং সাংগঠনিক ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ৯, ১০ ও ১৩: তছলিমা বেগম (নুরজাহান); সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৪, ১৫ ও ২১: শিউলি দে; সদস্য, ২১নং ওয়ার্ড মহিলা লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৭, ১৮ ও ১৯: শাহীন আকতার রোজী; সদস্য, ১৯নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বাকলিয়া মহিলা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১৬, ২০ ও ৩২: রুমকি সেনগুপ্ত; মহিলা সম্পাদিকা, ৩২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২২, ৩০ ও ৩১: নীলু নাগ; বর্তমান কাউন্সিলর।
ওয়ার্ড নং- ১২, ২৩ ও ২৪: মিসেস নুর আক্তার (প্রমা); সদস্য, ২৪নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ১১, ২৫ ও ২৬: হুরে আরা বেগম; শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৮, ২৯ ও ৩৬: জিন্নাত আরা বেগম; মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা, ৩৬নং ওয়ার্ড ৩নং ইউনিট আওয়ামী লীগ।
ওয়ার্ড নং- ২৭, ৩৭ ও ৩৮: আফরোজা জহুর (আফরোজা কালাম); বর্তমান কাউন্সিলর।
ওয়ার্ড নং- ৩৩, ৩৪ ও ৩৫: লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী; বর্তমান কাউন্সিলর।
ওয়ার্ড নং- ৩৯, ৪০ ও ৪১: শাহানুর বেগম; বর্তমান কাউন্সিলর।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।
তবে সৌদি আরবের প্রবাসী বিএনপির নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন যে, যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরব সফরে গেছেন এবং যেহেতু তিনি মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠ পূর্বপরিচিত ও রাজনৈতিক সহকর্মী, সে কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সপরিবারে নৈশভোজে দাওয়াত দিয়েছিলেন। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ফালুর বৈঠক লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। তারেক জিয়ার সঙ্গে ফালুর বিরোধের খবর বিএনপিতে অজানা নয়। বিশেষ করে তারেক জিয়ার অনাগ্রহ এবং আপত্তির কারণেই মোসাদ্দেক আলী ফালু রাজনীতি ছেড়েছেন বলেই অনেকে মনে করেন।
মোসাদ্দেক আলী ফালু ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার দেহরক্ষী। পরে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় এবং সেই ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ১৯৯১ সালে বেগম জিয়া ক্ষমতায় আসার পর তাকে একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেন। একান্ত সচিব হলেও ক্ষমতাকেন্দ্রে মোসাদ্দেক আলী ফালু তখন থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন।
অনেকেরই ধারণা যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে অবৈধ সম্পদ তার একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে মোসাদ্দেক আলী ফালু। মোসাদ্দেক আলী ফালু বাংলাদেশে এনটিভির মালিক। আইএফআইসি ব্যাংকে তার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু শিল্প কলকারখানায় তার বিনিয়োগ রয়েছে। এই সমস্ত বিনিয়োগের অর্থ বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বলে একাধিক সূত্র দাবি করে। যদিও এ ব্যাপারে মোসাদ্দেক আলী ফালু সবসময় অস্বীকার করে আসছিলেন।
এক এগারোর সময় দুর্নীতির অভিযোগে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং এই মামলাগুলো যখন বিচারিক আদালতে ওঠে তখন ফালু পালিয়ে সৌদি আরবে যান। এখনও তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
এর মধ্যে বিএনপিতেও তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়। তারেক জিয়া যখন বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী হন, তখন মোসাদ্দেক আলী ফালুকে অপাংক্তেয় করা হয়। তাকে একটি অসম্মানজনক পদ দেওয়া হয়েছিল সর্বশেষ কাউন্সিলে। এই পদ প্রাপ্তির পর মোসাদ্দেক আলী ফালু অভিমান করেন এবং তিনি বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদত্যাগ করেন। যদিও ফালুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখনও খালেদা জিয়ার সমর্থকরা এবং তারেক জিয়া বিরোধীরা নিয়মিত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিভিন্ন নেতা কর্মীদের বিপদে আপদে তিনি সহযোগিতা করেন বলেও জানা গেছে।
ফালুর একটি আলাদা প্রভাব বলয় রয়েছে বিএনপিতে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যখন বিএনপির অনেকেই সোচ্চার, বিশেষ করে তার অদূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করছেন, তখন অনেকেই নতুন করে ফালুর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয় ছাড়াও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ মোসাদ্দেক আলী ফালুই করে থাকেন বলে বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করে।
আর এই কারণেই বিএনপিতে ফালু না থেকেও আছেন। ফালু এখনও বিএনপিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই অনেকে মনে করেন। আর এ কারণেই তারেক জিয়ার চক্ষুশূল মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠক নতুন করে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন তারেক জিয়ার উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। আর একারণেই ফালুর সঙ্গে একটি ঘনিষ্ঠতা তিনি ঝালাই করে নিলেন।
তবে অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি স্রেফ সৌজন্য সাক্ষাৎ। বিদেশে গেলে নিকটজনের সাথে সাক্ষাৎ করলে একটা অন্যরকম আমেজ পাওয়া যায়। সেজন্যই ফালুর সঙ্গে নৈশভোজে মিলিত হয়েছিলেন মির্জা ফখরুল।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।
এরপর গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আত্মীয় স্বজনের বিষয়টি ব্যাখ্যা দেন এবং এ ব্যাপারে তার অবস্থান তিনি জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় দেখা যায় যে, আত্মীয় স্বজন বলতে তিনি মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের কথাই বুঝিয়েছেন এবং তারা যেন একই পরিবার থেকে সবগুলো জায়গায় প্রার্থী না হন সেরকম একটি বার্তা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এটি একটি সতর্কবার্তার মত, কোন নিষেধাজ্ঞা নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কেন ইস্যুটিকে জমিয়ে তুলেছিলেন এবং এ নিয়ে তিনি কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছিলেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এর পিছনে নোয়াখালীর রাজনীতি কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরকে এই আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এ বিষয়ে অত্যন্ত সরব এবং সক্রিয় দেখা গেছে। এটির নেপথ্যের কারণ জাতীয় রাজনীতির চেয়ে নোয়াখালীর রাজনীতি বেশি বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই কোণঠাসা। নোয়াখালীর রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী একরামুল করিম চৌধুরী। একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে এবার নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। তার ছেলে যদি উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে একরামুল করিম চৌধুরীর পরিবারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে নোয়াখালীতে। এরকম একটি শঙ্কা থেকে ওবায়দুল কাদের চাননি যে, একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হোক। তার প্রার্থীতার ঠেকানোর জন্যই কি আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী না করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উদ্যোগী হয়েছিলেন, অনেকেই এখন এই প্রশ্নটাই করছেন।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, বিষয়টি তেমন নয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে মাই ম্যানদেরকে প্রার্থী করছেন। আবার কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নিজের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করে এলাকায় নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এর বিরোধীতার জন্যই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।
তবে নোয়াখালীর রাজনীতির জটিল সমীকরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, একরামুল করিম চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং তার আরেকজন নিকটতম আত্মীয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যদিও তার ভাইয়ের মনোনয়ন ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে।
কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদের এবং একরামুল করিম চৌধুরীর বিরোধ নতুন নয়। এর আগেও ২০০১ সালে এ বিরোধ প্রকাশ্য ছিল এবং সেই সময় একরামুল করিমের বিরোধীতার কারণে ২০০১ এর নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আমাদের কাছে পরাজিত হন। এখনও ওবায়দুল কাদেরের জন্য একরামুল করিম একটা বড় ফ্যাক্টর।
তাহলে কি একরামুল করিমের নোয়াখালীতে আধিপত্য ঠেকানোর জন্যই আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে দাঁড়ানো যাবে না এমন একটা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছিল? অবশ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন ব্যক্তিকে ঠেকানোর জন্য নয়, এটি আওয়ামী লীগের একটি নৈতিক এবং নীতিগত অবস্থান।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগ একরামুল করিম চৌধুরী
মন্তব্য করুন
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে তিনি ওমরাহ পালন করার জন্য গেছেন বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আগামী ৮ মে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবে ওমরাহ’র ফাঁকে বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে এক সময়ের বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং বেগম জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি মোসাদ্দেক আলী ফালুর বৈঠক নিয়ে বিএনপিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সৌদি আরবে অবস্থানরত মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সেই বৈঠকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্ত্রীও ছিলেন।
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।