নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
রাষ্ট্রভাষার জন্য বাঙালি জাতি জীবন দিয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের পটভূমি রচিত হয়েছিল ভাষার জন্য এই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু এই বাংলাদেশেই অনেক নেতৃত্ব এসেছে, অনেক সরকার এবং রাজনৈতিক নীতিনির্ধারক ছিলেন যাদের নিজের রাষ্ট্রভাষার কোনো দখল ছিল না। রাষ্ট্রভাষার চর্চা তারা করতেন না, বাংলা বলতেও তেমন একটা পারদর্শী ছিলেন না। তারপরেও তারা বাংলাদেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়েছেন নানাভাবে। এদের কয়জনকে নিয়েই আমাদের আজকের প্রতিবেদন।
জিয়াউর রহমান
৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রের অন্যতম চরিত্র ছিলেন জিয়াউর রহমান। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়েও অনেক প্রশ্ন এবং রহস্য রয়েছে। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমানকে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করা হয়। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের যেই ঘটনাপ্রবাহ, সেই ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জিয়াউর রহমান সবকিছু জানতেন। জানার পরেও তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ ছিল। তার নিরব সম্মতিতেই ষড়যন্ত্রকারীরা উৎসাহ পেয়েছিল। ৭ নভেম্বরের পট পরিবর্তনের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এই জিয়াউর রহমান বাংলা জানতেন না, বাংলায় কথাও বলতে পারতেন না। জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠরা জানান, ইংরেজিতে তাকে বাংলা লিখে দিতে হতো। আর তার বাংলা ছিল দূর্বোদ্ধ এবং ভুল উচ্চারণে ভরা। স্বৈরাচারী জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ড. কামাল হোসেন
ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান তাকে খুঁজে বের করেছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুকে যখন গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় সে সময় ড. কামাল হোসেনও পাকিস্তানে অবস্থান করেছিলেন। এরপর স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একসঙ্গে দেশে ফেরেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর তাকে আইনমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। যদিও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর কামাল হোসেনের ভূমিকা রহস্যময় ছিল। সেই কামাল হোসেন খুব ভালো বাংলা বলতে পারতেন না। প্রথম দিকে তো একদমই নয়। এখন তিনি নানা রকম চর্চার মাধ্যমে বাংলা বলতে পারলেও লিখতে পারেন না।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ছিলেন। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ক্ষেত্রে যে সমস্ত অর্থনীতিবিদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তাদের অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি এখনো বাংলা ভাষা ঠিকঠাক ভাবে বলতে পারেন না। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে তিনি পিছ পা হন না। তিনি বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অন্যতম প্রতিনিধি। কিন্তু তিনি বাংলা জানেন না বললেই চলে।
এরকম আরো অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যাদের বাংলা চর্চা নেই, যারা ঘরে উর্দু, হিন্দি বা ইংরেজিতে কথা বলেন। অথচ তারা বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছেন। আমরা যখন মাতৃভাষার সম্মানের কথা বলি, মাতৃভাষার মর্যাদার কথা বলি, তখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, বাংলা ভাষার অনাদার-অবহেলায় পড়ে থাকার জন্য এদের ভূমিকা রয়েছে কিনা? কারণ বাংলা এখনো গরীব মানুষের ভাষা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। কারণ যারা এখনো ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন না, তারা এখনো আমাদের দেশে একধরণের নিম্ন শ্রেনীর নাগরিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বাংলা ভাষার প্রতি এই অবক্ষা-অবহেলার কারনেই রাষ্ট্রভাষাকে মর্যাদার আসনে বসাতে পারিনি এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু করতে পারিনি।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।