নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
পাপিয়া কেলেঙ্কারির পর আওয়ামী লীগ তার অঙ্গসহযোগি সংগঠনগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, স্থানীয় অঙ্গসহযোগি সংগঠনগুলো অর্থের বিনিময়ে এবং নানা রকম প্রভাবশালীদের তদবিরে যে কমিটিগুলো করছে, সেই কমিটিগুলোতে উপযুক্ত যাচাই বাছাই হচ্ছে না। এই যাচাই বাছাই না হওয়ার কারণে অনেক দুর্বৃত্ত, সুবিধাভোগী এবং অপকর্মকারীরা বিভিন্ন কমিটিতে ঢুকে পড়ছে। তারাই ওই কমিটির নাম পরিচয় ব্যবহার করে দুর্বৃত্তায়ন করছে, জড়িয়ে যাচ্ছে নানা রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। যার সর্বশেষ উদারহণ হলো পাপিয়া।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, সাধারণত অঙ্গ সহযোগি এবং ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিরে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ। এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ক্ষেত্রে অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের অনেককেই স্বাধীনতা দেওয়া হয়। তারা একটি কমিটির প্রস্তাব করে যেটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ অনুমোদন করেন। জেলা উপজেলা পর্যায়ে যে কমিটিগুলো হয় সেই কমিটিতে কেন্দ্রীয় কমিটির কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এই নিয়ন্ত্রণ না থাকার ফলেই এখানে অনেকেই ঢুকে পড়েন। অনেক স্বার্থান্বেষী, সুবিধাবাধী, সুযোগ সন্ধানীরা ঢুকে পড়েন। এই কমিটিগুলো গঠন করার ক্ষেত্রে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সংগঠনগুলোতে একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকে। তারাই এই কমিটিগুলো চূড়ান্ত করে। সে কারণেই যুব মহিলা লীগের নরসিংদী কমিটিতে পাপিয়া অন্তর্ভূক্ত হয়েছিলেন। শুধু যুব মহিলালীগ নয়, এর আগে ছাত্রলীগেও কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবলীগের কমিটি বাণিজ্যের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ এখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। পাপিয়ার ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দর টনক নড়েছে এবং তারা নড়েচড়ে বসেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরকম ঢালাওভাবে কমিটির অনুমোদন বন্ধের ক্ষেত্রে দলের সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশ দিয়েছেন। কমিটিগুলোতে থাকা নাম কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এইসব কমিটির গোয়েন্দা অনুসন্ধান করা হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমিটি গঠনে যদি বিলম্বও হয় অসুবিধা নেই, কিন্ত সুযোগসন্ধানী, সুবিধাভোগী এবং বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের যেন কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত না করা হয় তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কমিটিতে কার কি অবস্থা, কার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এই সম্পর্কিত রিপোর্ট যত শীঘ্রই সম্ভব আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনির সম্পাদকরা, যারা বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারা এ নিয়ে কাজ শুরু করছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও বলছে যে, পাপিয়ার এই ঘটনার পরে যুব মহিলা লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় নরসিংদীর কমিটি করলেন এবং অন্যান্য কমিটিতে কারা কারা রয়েছে, তাদের ব্যাপারেও তালিকা চাওয়া হবে। শুধু মহিলা যুবলীগই নয়, অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে কারা রয়েছে তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।