নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
পাপিয়াকে নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। বলা হচ্ছে, এরা যদি নারী নেতৃত্ব হয় তাহলে নারী নেতৃত্বের ভবিষ্যত কি? বিশেষ করে শুধুমাত্র পাপিয়া নয়, পাপিয়ার সঙ্গে সচিবালয়সহ বিভিন্ন আভিজাত এলাকায় রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে যারা নানারকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের কারণে নারীদের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গন দুরহ হয়ে উঠছে বলে অনেকে মনে করছেন। অনেকে মনে করছেন যে, রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে অনেক নারীই এখন নানারকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে এবং পদপদবী হাতিয়ে নিয়ে দলের বদনাম করছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরা নারী নেতৃত্বের প্রতীক নয়, নারী নেতৃত্বের আদর্শও নয়, বরং এরা মূলধারাও নয়। বরং বাংলাদেশের নারী নেতৃত্ব স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। বাংলাদেশের উল্লেখ করার মতোন নারী নেতৃত্ব রয়েছে এবং যারা এই বাংলাদেশের নারী নেতৃত্বের আদর্শ। এদের মধ্যে রয়েছেন;
শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শুধু একজন রাষ্ট্রনায়ক নন, বর্তমানে তিনি বিশ্বনেতা। শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে নারী নেতৃত্বের আদর্শ তিনি। তার ব্যক্তিত্ব, প্রাজ্ঞতা এবং প্রত্যুৎপন্নমতিত্বর কারণে তিনি আজ সারাবিশ্বের অনুকরণীয় নেতৃত্ব। শেখ হাসিনার কারণেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্ভব হয়েছে। যাদের কথা আলোচিত হয় না, নীরবে নিভৃতে কাজ করছেন। এরকম অনেক নারীর আদর্শের উৎস শেখ হাসিনা।
প্রয়াত সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন
আওয়ামী লীগের কঠিন সময়ে জোহরা তাজউদ্দীন ছিলেন নারী নেতৃত্বের এক অনুকরণীয় উদাহরণ। তার হাত দিয়ে আওয়ামী লীগ পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে পুনর্জন্ম লাভ করেছিল। তিনিও একজন প্রাজ্ঞ, দক্ষ এবং দু:সময়ের হাল ধরার মতো শক্তিমান নারী নেত্রী। তিনি নারী সমাজের আদর্শ। তার মেয়েও এখন আওয়ামী লীগের এমপি। তারা টেন্ডারবাজি বা কোন অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু নীরবে তারা জনগনের মধ্যে নারী জাগরণে কাজ করছেন।
বেগম সাজেদা চৌধুরী
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন, এখন সংসদ উপনেতা। ব্যক্তিত্ববান, নির্লোভ, সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বেগম সাজেদা চৌধুরি।
প্রয়াত আইভী রহমান
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভী রহমান নারী নেতৃত্বের এক আকর্ষণীয় উদাহরণ। একদিকে তিনি যেমন দলের আদর্শ এবং নীতির প্রশ্নে ছিলেন অবিচল, অন্যদিকে তার ব্যক্তিত্ব, রুচিবোধ ছিল সকলের কাছে অনুকরণীয়।
মতিয়া চৌধুরী
উনসত্তরের অগ্নিকন্যা বেগম মতিয়া চৌধুরী নির্লোভ, সাদামাটা জীবন কিন্তু দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। নারীর সৌন্দর্য যে তার ব্যক্তিত্বে, এটাই হলো মতিয়া চৌধুরীর প্রভাব।
ডা. দীপু মনি
আওয়ামী লীগ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি। আদর্শ নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তিনিও একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরাই বাংলাদেশের নারী নেতৃত্বের অনুকরণীয় এবং পূজনীয় দৃষ্টান্ত, পাপিয়ারা নয়। পাপিয়ারা হলো বিচ্ছিন্ন, এবং কিছু রাজনৈতিক অপভ্রংশ। যাদের কারণে রাজনীতি কলুষিত হয়েছে। যত বেশি পাপিয়াদের সরিয়ে শেখ হাসিনা, জোহরা তাজউদ্দীন, সাজেদা চৌধুরীদের মতো নেতৃত্বের আদর্শকে অনুসরণ করবেন নারী সমাজ, তত বেশি নারী নেতৃত্ব বিকশিত হবে বাংলাদেশে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি এভারকেয়ার হাসপাতাল তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গটি আলোচনাই হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে কেবল সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনার জন্য নির্দেশনা দেন। ফলে আওয়ামী লীগের কোন নেতাই আর উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আলোচনায় নিয়ে আসেনি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে, আগামী ২৩ জুন দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কীভাবে জাকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায় ও ২১ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা করা এবং শেষদিনে বড় সমাবেশ করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। এবার আওয়ামী লীগ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করবে। সেই প্রসঙ্গটি সামনে নিয়ে আসা হয়।
আর আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছে করেই উপজেলা নির্বাচনের প্রসঙ্গটি আনেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলা নির্বাচনে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছে, দলের নির্দেশনা অমান্য করে আত্মীয় স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন, তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে মনে করলে ভুল হবে।
বিএনপিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হটকারী ভাবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদেরকে বহিষ্কার করে সবকিছু শেষ করে দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাজনৈতিক প্রজ্ঞায়, ধীরস্থিরভাবে, আস্তে আস্তে।
জাতীয় সংসদে একবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন যে, বাঘে ধরলেও ছাড়ে, কিন্তু শেখ হাসিনা যাকে ধরে তাকে ছাড়ে না। যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে স্বজনদেরকে প্রার্থী করেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদি প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করবেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তারা শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো ডায়েরিতে নাম লেখালে রাজনৈতিক পরিণতি কী হয় তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়।
এক এগারোর সময় যারা শেখ হাসিনাকে মাইনাস করতে চেয়েছিলেন সেই সমস্ত ডাকসাইটে নেতাদের কাউকেই তিনি দল থেকে বহিষ্কার করেননি। কিন্তু দলে তাদের অকার্য করেছেন, নিষ্ক্রিয় করেছেন। তাদের প্রায়শ্চিত্ত উপলব্ধি করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশল।
শেখ হাসিনা এক এগারোর পর সংস্কারপন্থিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করেছিলেন। যারা কম সংস্কারপন্থী ছিলেন, কম ষড়যন্ত্র করেছেন- তাদেরকে তিনি নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ দিয়েছেন। তাদের অনেক হেভিওয়েট নেতাকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আলঙ্কারিক পদ দিয়ে শাস্তি দিয়েছেন। এই শাস্তি দল থেকে বহিষ্কারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তিনি রাজনীতিতে নতুন করে বিদ্রোহী এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার সুযোগ দেননি। বরং দলে তাদেরকে শাস্তি দিয়ে দলের ঐক্য অটুট রেখেছেন।
আর দ্বিতীয় প্রকার যারা ছিল এক এগারোর সংস্কারপন্থীর মূল হোতা তাদেরকে তিনি মনোনয়ন দেননি। মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে দলে নিষ্ক্রিয় করেছেন। এদের মধ্যে অনেকে মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে নতুন দল করেছে। কিন্তু রাজনীতিতে জীর্ণ শীর্ণ ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার কৌশল।
কাজেই এবার যারা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে, তারা আসলে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেনি, তারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে। শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তবে তারা কবে কীভাবে পাবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের কী হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
কারণ যারা আত্মীয়স্বজনদেরকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী করেছেন তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগ সভাপতির কালো খাতায় নাম লিখিয়েছেন। শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে কী হয় তা অতীতে অনেক নেতাই উপলব্ধি করেছেন। অনেকের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে।
বহিষ্কার হলে একজন রাজনৈতিক নেতা পরিত্রাণ পায়, নির্বাণ লাভ করে। তিনি নতুন সুযোগ পান অন্য কিছু করার। কিন্তু একজন রাজনৈতিক নেতা যখন দলেই উপেক্ষিত হন, অনাহূত হন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হন- তখন তার রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে। আর শেখ হাসিনার কালো খাতায় নাম লেখালে রাজনৈতিক জীবন দুর্বিষহ হতে বাধ্য।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তৃণমূল উপজেলা নির্বাচন রাজনীতি ড. আব্দুর রাজ্জাক শাজাহান খান জাহিদ মালেক মোস্তফা কামাল
মন্তব্য করুন
এভারকেয়ার হাসপাতাল খালেদা জিয়া বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন