ইনসাইড পলিটিক্স

‘শুধু শেখ হাসিনাকেই ম্যানেজ করতে পারিনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার রিমান্ডে পাপিয়া অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছেন। পাপিয়ার কাছ থেকে জব্দকৃত বিভিন্ন মোবাইল ফোনে দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগসহ সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে পাপিয়া ছবি তুলেছেন, সেলফি তুলেছেন, ফটোসেশনে পোজ দিয়েছেন। কিভাবে এটা সম্ভব হলো- যখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা পাপিয়ার কাছে জানতে চেয়েছেন তখন পাপিয়া বলেছেন, একমাত্র শেখ হাসিনাকেই তিনি ম্যানেজ করতে পারেননি। শেখ হাসিনা ছাড়া সবাইকেই ম্যানেজ করা যায়। সবার সঙ্গেই তার সম্পর্ক রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০২০ সালের শুরু থেকেই পাপিয়া টার্গেট করেছিল যেকোন মূল্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আর এজন্য বিপুল পরিমান টাকাও তিনি খরচ করেছিলেন। কিন্তু যারা তাকে সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে চেয়েছিল তারা কেউই শেষ পর্যন্ত তাতে সফলকাম হননি।

সূত্রগুলো বলছে, ২০১৯ এর ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পরপরই পাপিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। এই সময় তিনি একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে একটিবার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করেছিলেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক এক কর্মকর্তার কাছেও পাপিয়া ধর্ণা দিয়েছিলেন। ওই কর্মকর্তা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে তাকে সাক্ষাৎ করিয়ে দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পারেননি।

গোয়েন্দা হেফাজতে পাপিয়া এটাও বলেছেন, অনেকের সঙ্গে তার সু সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এখন তার বিপদে কেউ তার পাশে নেই। জানা গেছে, ওই সময় মহিলা সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য পাপিয়া চেষ্টা করেছিলেন। সে কারণে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি শেখ হাসিনা পর্যন্ত যেতে পারেননি। শেখ হাসিনাকে ম্যানেজ করতে পারেননি এজন্যই পাপিয়ার অনুশোচনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, পাপিয়া মনে করেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে বা প্রশাসনে একমাত্র শেখ হাসিনা ছাড়া সবাইকে ম্যানেজ করা যায়।

জানা গেছে যে, পাপিয়ার মোবাইলে সরকারের প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীদের নাম্বার সেইভ করা আছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন আমলাদের নাম্বারও আছে পাপিয়ার মোবাইলে। এছাড়া ঢাকার একজন এমপিসহ অন্তত ৫জন এমপির সঙ্গে পাপিয়ার অন্তরঙ্গ মেসেজ বিনিময়ের তথ্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পাপিয়া স্বীকার করেছেন যে, ৩জন এমপি নিয়মিত ওয়েস্টিনে তার অতিথি হতেন।

অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের ৩৩ এমপিকে পাপিয়া বিভিন্ন রকম অনৈতিক উপঢৌকন দিয়েছিলেন। এর বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে নানা রকম সুবিধা আদায় করেছিলেন। গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া এটাও স্বীকার করেছেন যে, রাজনীতিবিদদের চেয়ে আমলারা অনেক বেশি লোভী এবং তাদেরকে বশে আনা অনেক সহজতর কাজ। আমলাদের দিয়ে তিনি বিভিন্ন কাজ বাগিয়ে নিতেন বলেও জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পাপিয়া নেটওয়ার্ক বিস্তার করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যাংককে পাচার করেছেন। ব্যাংককে তার স্কট ব্যবসা, ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা রকম অবৈধ ব্যবসা রয়েছে বলে জানা গেছে। এই সমস্ত ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি নিয়মিত ব্যাংককে যেতেন বলেও জানা গেছে।

জানা গেছে, একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই পাপিয়ার এ সমস্ত অপকর্মের কথা জানতো। কিন্তু তারা পাপিয়ার প্রতি নানা কারণেই দুর্বল ছিলেন। যে কারণে তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে কোন অ্যাকশনে যাননি। পাপিয়ার উশৃঙ্খলতা, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্নীতি অনিয়ম যখন সীমাহীন পর্যায়ে চলে যায়, তখনই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর নজরে প্রথম আনেন। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে পাপিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে স্বজনদের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা: নেপথ্যে নোয়াখালীর রাজনীতি?

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনগুলোতে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না মর্মে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নির্দেশনাটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন ছাড়া অধিকাংশই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই নির্দেশনা শোনেননি।

এরপর গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আত্মীয় স্বজনের বিষয়টি ব্যাখ্যা দেন এবং এ ব্যাপারে তার অবস্থান তিনি জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় দেখা যায় যে, আত্মীয় স্বজন বলতে তিনি মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের কথাই বুঝিয়েছেন এবং তারা যেন একই পরিবার থেকে সবগুলো জায়গায় প্রার্থী না হন সেরকম একটি বার্তা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। এটি একটি সতর্কবার্তার মত, কোন নিষেধাজ্ঞা নয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কেন ইস্যুটিকে জমিয়ে তুলেছিলেন এবং এ নিয়ে তিনি কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এর পিছনে নোয়াখালীর রাজনীতি কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওবায়দুল কাদেরকে এই আত্মীয় স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না- এ বিষয়ে অত্যন্ত সরব এবং সক্রিয় দেখা গেছে। এটির নেপথ্যের কারণ জাতীয় রাজনীতির চেয়ে নোয়াখালীর রাজনীতি বেশি বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে তিনি অনেকটাই কোণঠাসা। নোয়াখালীর রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রভাবশালী একরামুল করিম চৌধুরী। একরামুল করিম চৌধুরী তার ছেলেকে এবার নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। তার ছেলে যদি উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাহলে একরামুল করিম চৌধুরীর পরিবারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা হবে নোয়াখালীতে। এরকম একটি শঙ্কা থেকে ওবায়দুল কাদের চাননি যে, একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হোক। তার প্রার্থীতার ঠেকানোর জন্যই কি আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী না করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উদ্যোগী হয়েছিলেন, অনেকেই এখন এই প্রশ্নটাই করছেন।

তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, বিষয়টি তেমন নয়। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন এবং বিভিন্ন স্থানে মাই ম্যানদেরকে প্রার্থী করছেন। আবার কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তাদের নিজের আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী করে এলাকায় নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এর বিরোধীতার জন্যই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

তবে নোয়াখালীর রাজনীতির জটিল সমীকরণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, একরামুল করিম চৌধুরী প্রার্থী হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই এবং তার আরেকজন নিকটতম আত্মীয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যদিও তার ভাইয়ের মনোনয়ন ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে।

কিন্তু নোয়াখালীর রাজনীতিতে ওবায়দুল কাদের এবং একরামুল করিম চৌধুরীর বিরোধ নতুন নয়। এর আগেও ২০০১ সালে এ বিরোধ প্রকাশ্য ছিল এবং সেই সময় একরামুল করিমের বিরোধীতার কারণে ২০০১ এর নির্বাচনে ওবায়দুল কাদের প্রয়াত ব্যারিস্টার মওদুদ আমাদের কাছে পরাজিত হন। এখনও ওবায়দুল কাদেরের জন্য একরামুল করিম একটা বড় ফ্যাক্টর।

তাহলে কি একরামুল করিমের নোয়াখালীতে আধিপত্য ঠেকানোর জন্যই আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে দাঁড়ানো যাবে না এমন একটা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছিল? অবশ্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোন ব্যক্তিকে ঠেকানোর জন্য নয়, এটি আওয়ামী লীগের একটি নৈতিক এবং নীতিগত অবস্থান।


ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি   সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী   আওয়ামী লীগ   একরামুল করিম চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

চেয়ারম্যান হয়ে অনেকে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

পঞ্চগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল ইসলাম গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে পৌনে চার লাখ টাকার সম্পদের মালিক ছিলেন। সদর উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে তিনি সাত কোটি ১৭ লাখ টাকার সম্পদের অধিকারী হয়েছেন। শুধু আমিরুল ইসলাম নন, দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ থেকে নির্বাচিত অনেক চেয়ারম্যানই গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁদের সম্পদ বেড়েছে শতগুণেরও বেশি।

চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রদর্শিত সম্পদের চেয়ে প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ আরো অনেক বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে। এই চেয়ারম্যানরা আবারও এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই নির্বাচন প্রভাবিত করতে অর্থ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যানদের অনেকে বলছেন, তাঁরা বৈধভাবে ব্যবসা করে এ সম্পদের মালিক হয়েছেন। চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁরা কোনো অন্যায় কাজে যুক্ত হননি।

জানতে চাইলে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, নির্বাচিত হলেই ধনী হওয়ার একটা সোপানে পা দেওয়া যায়। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান জনপ্রতিনিধিরা।

উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো এর প্রমাণ।

 আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ, রয়েছে দুদকের মামলা

কুষ্টিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। এবারও তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। গত পাঁচ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বিপুল হারে বেড়েছে।

হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে আতার নগদ টাকা ছিল পাঁচ লাখ এবং ব্যবসার জামানত ছিল ৭২ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

বর্তমানে তাঁর ব্যাংকে জমা ও নগদ অর্থের পরিমাণ সাত কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া এফডিআর রয়েছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে আতার অর্থ বেড়েছে ১৭৬ গুণ। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে তিনি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাইভেট কারের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তাঁর রয়েছে ৯০ লাখ টাকা মূল্যের একটি প্রাডো গাড়ি।

আতার অস্থাবর সম্পদের পাশাপাশি স্থাবর সম্পদও বেড়েছে। ২০১৯ সালে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল ৬৯ লাখ ৮২ হাজার টাকার। বর্তমানে তিনি সাত কোটি ১৪ লাখ ৬১ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক। গত ১১ মার্চ আতাউর রহমান ও তাঁর স্ত্রী সাম্মিয়া পারভীনের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে মামলা করেছে দুদক। ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা ওই মামলায় তাঁরা এখন জামিনে আছেন।

এ বিষয়ে আতাউর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চেয়ারম্যান হয়ে কোটিপতি আমিরুল

২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো পঞ্চগড় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন আমিরুল ইসলাম। ওই সময় দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা অনুসারে তাঁর স্থাবর সম্পদ ছিল তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকার। এর মধ্যে ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ২.৫ একর কৃষিজমি এবং একটি হাসকিং মিল ও সংলগ্ন বাড়ির মূল্য তিন লাখ টাকা। তিনি আবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুসারে বর্তমানে তাঁর স্থাবর সম্পদের পরিমান সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গত পাঁচ বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১৯১.২০ গুণ।

হলফনামা অনুসারে বর্তমানে আমিরুল ইসলামের পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের পঞ্চগড় পৌরসভার তেলিপাড়া ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় বিসিক শিল্পনগরীতে পরিবেশবান্ধব ইট তৈরির কারখানা, ৮৮ লাখ টাকা মূল্যের ৫৭ শতক বসতভিটা, এক কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি ডুপ্লেক্স ভবন, চার লাখ টাকা মূল্যের একটি টিনশেড ভবন এবং পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১.৩১ একর জমি রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদও বেড়েছে আমিরুল ইসলামের। ২০১৯ সালের হলফনামা অনুসারে তিনি ২০ লাখ ২০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক ছিলেন। বর্তমানে তিনি এক কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদের মালিক।

হলফনামা অনুসারে, ২০১৯ সালে আমিরুল ইসলামের বার্ষিক আয় ছিল দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংক থেকে আমার একটি বড় ঋণ নেওয়া আছে। এ ছাড়া গরুর খামার, অটো ব্রিকস ফ্যাক্টরি, রাইস মিল ইত্যাদির মাধ্যমে আমি এসব সম্পদ গড়েছি। আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।’

মুকুল ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান মুকুল এবারের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে মুকুলের নিজের ও স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ। ২০১৯ সালে মুকুলের নগদ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা থাকা টাকার পরিমাণ ছিল এক লাখের কিছু বেশি। বর্তমানে তা কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

হলফনামার তথ্যানুসারে, ২০১৯ সালে জিয়াউল হাসান মুকুলের নগদ অর্থ ছিল ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ছয় হাজার ৬৮৫ টাকা। ২০১৯ সালে তাঁর স্ত্রী রেখা আক্তার বানুর হাতে নগদ কোনো টাকা না থাকলেও বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে চার লাখ ২৬ হাজার ৩৪৪ টাকা। ২০১৯ সালে মুকুলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৮৫ হাজার ৭৫৩ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। সে হিসাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর টাকার পরিমাণ বেড়েছে ১০৫ গুণ।

জানতে চাইলে জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, ‘আইনজীবীর ভুলে ২০১৯ সালের সঙ্গে ২০২৪ সালের হলফনামার তথ্যে গরমিল দেখা দিয়েছে। আসলে আমার এত সম্পদ নেই।

সম্পদ বেড়েছে আরো যেসব উপজেলা চেয়ারম্যানের

হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অর্থ-সম্পদের পরিমাণ বিপুল বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামশুদ্দোহা চৌধুরী, সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ ফুলপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল করিম রাসেল, বগুড়া সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান, বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর এবং সিরাজগঞ্জের একাধিক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গত পাঁচ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।


হলফনামা   তথ্যা   চেয়ারম্যান   সম্পদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা আজ

প্রকাশ: ১০:২৫ এএম, ০৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা আজ সোমবার বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সভা ডাকা হয়েছে।

রবিবার (৫ মে) আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সৃভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।


আওয়ামী লীগ   সম্পাদকমণ্ডলী   সভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে সরকার

প্রকাশ: ০৯:০৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

২৬ এপ্রিল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। এরপর একই দিনে আওয়ামী লীগও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দেয়। তবে প্রকৃতির বৈরি আচরণের কারণে আপাতত পিছু হঠছে বিএনপি। চলমান তাপদাহ ও হিট অ্যালার্টের কারণে এই সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করেছে দলটি।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এর মধ্য দিয়ে আবার সরকার পতন আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনা ছিল দলটির। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পরও আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণার অংশ হিসেবেই এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। 

দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলমান তাপদাহ কমে এলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্থগিত হওয়া সমাবেশ কর্মসূচি করবে বিএনপি। একই সঙ্গে চলমান বিভিন্ন সংকট বিশেষ করে লোডশেডিং ইস্যুতে আন্দোলন করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে জাতীয় নির্বাচন বর্জনের মতো উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছে বিএনপি। এভাবে ধীরে ধীরে জনসংযোগ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে দলটি। তবে অতীতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনকে স্বাগত জানানো হলেও এবার তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বিশেষ করে লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্য, বিদ্যুতের দাম ইত্যাদি ইস্যুতে আন্দোলনে স্বাগত জানিয়েছিল সরকার। তবে এবার সরকার হয়তো কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে এমন ধারণা কারও কারও। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে এ ধারণা করা হচ্ছে।

সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর আমি পুলিশকে ধৈর্য ধরতে বলেছিলাম। অথচ ধৈর্য ধরতে গিয়ে তাদেরই মার খেতে হয়েছে। তাদের হাসপাতালে আক্রমণ করা হয়েছে, গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। তো আমার মনে হয় আমাদের পুলিশ এখন আমেরিকান স্টাইলে আন্দোলন দমানোর ব্যবস্থাটা চাইলে গ্রহণ করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের বদৌলতে দেশের বাইরে বসেও আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে, নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলন করে করুক, তাতে আমরা বাধা দিচ্ছি না। এখন আন্দোলন দমাতে আমেরিকান স্টাইল ফলো করা যেতে পারে। আমেরিকান পুলিশ যেভাবে আন্দোলন ও আন্দোলনকারীদের দমন করে, আমার মনে হয় আমাদের দেশের পুলিশ তা অনুসরণ করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে পারবে কিনা সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। এখন দেখার বিষয় বিরোধী দলগুলো সেরকম আন্দোলন গড়ে তুলতে পারে কিনা আর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলে সেক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কী হয়।

আন্দোলন   সরকার   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সোমবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান

প্রকাশ: ০৭:১৮ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশব্যাপী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে সোমবার (৬ মে) বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।  

রোববার (৫ মে) বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এ আহ্বান জানান।

বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।  

এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন, পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। এসব কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, কালকের (সোমবার) সমাবেশ বাংলাদেশের পাঁচ কোটি ছাত্র-জনতার সংহতি সমাবেশ। পৃথিবীর সব স্বাধীনতাকামী রাষ্ট্রের পক্ষে ও মানবতাবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কালকের সমাবেশ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হেনস্তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে, মারধর ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করার কারণে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। ছাত্রলীগ এসব অব্যাহতি ও হেনস্তার বিরুদ্ধে।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   ফিলিস্তিনের পতাকা   ছাত্রলীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন