নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৪ এপ্রিল, ২০২০
২৫ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বিএনপির নেতারা এতদিন যে বলেছিলেন যে, তিনি অসম্ভব অসুস্থ, তিনি মৃত্যু পথযাত্রী, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে যতটা অসুস্থ খালেদাকে বলা হয়েছিল, ততটা অসুস্থ তিনি নন। কারাগার থেকে মুক্তির ৭দিনের মাথায় বেগম খালেদা জিয়া খোলস থেকে বেরিয়ে এসেছেন।
ইতিমধ্যে তিনি তার চিকিৎসকদের করোনা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছেন। তার নির্দেশেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন এবং সমালোচনা করেছেন। যখন করোনা মোকাবেলায় সকলের একত্রিত হওয়া প্রয়োজন, সেসময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই ধরনের সংবাদ সম্মেলন হতাশাজনক এবং এটি জাতিকে স্তম্ভিত করেছে।
জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশেই মির্জা ফখরুল এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে আক্রমণ করেছে। করোনার মধ্যেই বেগম জিয়া তার নিজের খোলস ছেড়ে বের হচ্ছেন এবং করোনা পরিস্থিতিকে ঘিরে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছেন।
বেগম খালেদা জিয়াকে গত ২৫ মার্চ ফৌজাদারি কার্যবিধির ৪০১ এর ১ ধারা অনুযায়ী ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এসময়ে তার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী এসময়ে খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন, দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের জিম্মায় এই মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়। এর আগে তার ভাই শামীম ইস্কান্দার বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেন।
অথচ খালেদা জিয়ার মুক্তির পর কোথায় চিকিৎসক, কোথায় তার উন্নত চিকিৎসা? এগুলো কিছুরই হদিস নেই। উল্টো তিনি এখন বসে বসে রাজনৈতিক ছক আঁকছেন। সরকারকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা যায়, নতুন করে কীভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করা যায়, সেই প্রক্রিয়া করছেন তিনি।
জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া নিয়মিতভাবে তার চিকিৎসকদের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন উস্কে দেওয়ার জন্য নানারকম পরামর্শ দিচ্ছেন। বিএনপির একটি দায়িত্বশীল বলছে, খালেদা জিয়া মনে করছে যে করোনা নিয়ে দেশে একটি অর্থনৈতিক টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে, অসহায় দরিদ্রদের মাঝে এক ধরনের হতাশা এবং অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। সাধারণ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারের প্রতি এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। এগুলোকেই কাজে লাগাতে চাইছেন বেগম জিয়া।
অনেকেই মনে করেছিলেন যে, বেগম খালেদা জিয়া হয়ত জেল থেকে বেরিয়ে নতুন জীবন শুরু করবেন, কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়াবেন না। কিন্তু তার সাম্প্রতিক তৎপরতায় দেখা গেছে যে তিনি আবার সরকারের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলন সূচনা করার প্রক্রিয়া তৈরি করছেন। অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মনে করছেন যে, বেগম জিয়ার এখন আর আগের শক্তি নেই।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, যে দল গত ২ মাসে তার নেতাকে মুক্ত করতে পারে না, সেই দল আন্দোলন করবে- সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিএনপি বিরোধীদল হিসেবে সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তারা তাদের নিজের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারেনি। কাজেই বিএনপি যে নতুন করে আন্দোলন করতে পারবে না, সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। তাছাড়া আওয়ামী লীগের একজন নেতা মনে করছেন যে, যখন করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে সকল দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা প্রয়োজন, তখন বেগম জিয়ার এই ষড়যন্ত্র প্রমাণ করে যে তিনি সবসময় ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেছেন। শেখ হাসিনার যে ক্ষমা, উদারতা, সেই উদারতার পরিবর্তে বিশ্বাসঘাতকতার রাজনীতির নতুন প্রকাশ ঘটাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।