নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২২ মে, ২০২০
টানা তিন মেয়াদসহ মোট চার মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার মেয়াদের মন্ত্রিসভার মধ্যে গত বছরের ৭ জানুয়ারি যে মন্ত্রীসভা গঠন করা হয়েছে সেই মন্ত্রিসভা নিয়ে সবথেকে বেশি সমালোচনা হচ্ছে। সরকার দেড় বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে, এই সময়ে নানা ধরণের সঙ্কট মোকাবেলায় মন্ত্রীদের অনেককেই অস্থির, অযোগ্য এবং দায়িত্বহীন মনে হচ্ছে। এ নিয়ে সরকারের ভেতরে-বাহিরে সমালোচনা হচ্ছে। এবার মন্ত্রিসভা গঠন করে সবথেকে বড় চমকটি দিয়েছিলেন। অধিকাংশ সিনিয়র নেতাদেরকে তিনি বসিয়ে রেখেছেন, মন্ত্রিসভায় স্থান দেননি। মন্ত্রিসভায় এনেছেন একাধিক নতুন মুখ, যাদেরকে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় সুযোগ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুর্ভাগ্য হলো, শেখ হাসিনা অনেককেই সুযোগ দেন, কিন্তু তারা সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে পারেন না। এবারের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ নতুন মন্ত্রী সুযোগগুলোকে হেলায় নষ্ট করছেন। তারা মনে করছেন মন্ত্রিত্ব মানে শুধু একটি গাড়ি, একটি বাড়ি এবং মন্ত্রণালয়ে বসে কিছু ফাইল দেখা। মন্ত্রিত্ব যে একটি নীতিনির্ধারক অবস্থা সেটাই অনেকে বুঝতে পারছেন না। তবে এই ব্যর্থতার ভিড়ে প্রথমবার হওয়া কয়েকজন মন্ত্রী নিজেদেরকে ক্রমশ উজ্জ্বল করছেন। বিশেষ করে করোনা সঙ্কটের সময় কয়েকজন মন্ত্রীর তৎপরতা জনগণের মধ্যে আশা জাগাচ্ছে এবং ব্যর্থতার ভিড়ে তারা কিছু একটা করার চেষ্টা করছেন, দায়িত্ব পালনের জন্য উদ্যম দেখাচ্ছেন। তাদের এই ভূমিকাটা সাধারণ মানুষ লক্ষ্য করছে এবং শেখ হাসিনা তাদের উপর যে আস্থা রেখেছিলেন, সেই আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন। ব্যর্থতার ভিড়ে কিছু আশার আলো দেখা যাচ্ছে। প্রথমবার হওয়া কয়েকজন মন্ত্রী, যারা ধীরে ধীরে নিজেদেরকে মেলে ধরছেন তাদের কয়েকজনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন-
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
তাজুল ইসলামের মন্ত্রী হওয়াটা ছিল এবারের সবথেকে বড় চমক। সাধারণত এই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়ার রীতি ছিল দলের সাধারণ সম্পাদককে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এই রীতি প্রথমবারের মতো ভাঙেন। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে হটিয়ে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। এবারও তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেননি, বরং আনকোরা তাজুল ইসলামকে এই দায়িত্ব দিয়ে সবাইকে রীতিমতো চমকে দেন। তাজুল ইসলাম প্রথমদিকে আনাড়িপনা করেছেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভুলত্রুটি করেছেন। কিন্তু ক্রমশ নিজেকে তিনি মেলে ধরছেন এবং তার মধ্যে পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং কাজ করার তীব্র স্পৃহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এবার তিনি শুরু থেকেই ডেঙ্গু মোকাবেলার জন্য কাজ করছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হিসেবে যে সমস্ত স্থানীয় প্রতিনিধিরা ত্রাণ আত্মসাৎ বা দুর্নীতি করছেন- তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ন্যূনতম কার্পণ্য করছেন না। একটু সচল এবং সদাতৎপর মন্ত্রী হিসেবে তিনি ইতিমধ্যে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের মন্ত্রিত্ব পাওয়াটা ছিল বিস্ময়কর। কিন্তু করোনা এবং সাম্প্রতিক সময়ে আম্ফানের দুর্যোগে তার ভূমিকা ছিল লক্ষ্যণীয়। তিনি আন্তরিকভাবে কাজ করছেন, যদিও ত্রাণ বণ্টন নিয়ে প্রচুর অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তবুও তার মন্ত্রণালয়কে তিনি দুর্নীতির বাইরে রেখেছেন এবং এই মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। ত্রাণ বন্টনে যে অভিযোগগুলো উঠেছে তা সবই বণ্টন পর্যায়ে এবং জনপ্রতিনিধি পর্যায়ে। মন্ত্রণালয় মোটামুটি সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করেছে এবং প্রথমবারের মতো প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে এনামুর রহমান নিজেকে দুর্নীতি থেকে দূরে রেখেছেন এবং আন্তরিকতার যে তার মাঝে কোন ঘাটতি নেই সেটা প্রমাণে সক্ষম করেছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম
শ ম রেজাউল করিম প্রথমবার মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন গৃহায়ন এবং গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়ের। এরপরে এক দমকা হাওয়ায় তিনি গৃহায়ন এবং গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়ের দায়িত্ব হারান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এই মন্ত্রণালয় যেন তার জন্যে শাপেবর হয়েছে। করোনা সঙ্কটের সময় ডেইরি শিল্প, পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচানোর জন্য তার যে বিভিন্ন উদ্যোগ, সেই উদ্যোগগুলো প্রশংসিত হয়েছে। কাটাবন এলাকায় পশু-পাখির দোকানগুলোতে বন্দি হয়ে থাকা পোষা পশু-পাখিদের নিয়ে যে একটি করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তখন তিনি নিজেই কাটাবন এলাকায় যান এবং সেই আটকে পড়া পশু-পাখিদের খাবার দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দেন। শ ম রেজাউল করিম তার সেক্টরে যেন করোনায় ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য সদা তৎপর। নিয়মিত কাজ করছেন এবং তার এই আন্তরিকতা এবং তৎপরতা সাধারণ মানুষকে আশান্বিত করেছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল
জাহিদ আহসান রাসেল দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করলেও তিনি এবারই প্রথম প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী হয়েই তিনি প্রত্যেকটি বিষয়ে তাকে শুরু থেকেই তৎপর দেখা যাচ্ছিল। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে তিনি একটি সচল মন্ত্রণালয় করার চেষ্টা করেছেন। করোনাকালে তাকে আরো উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত এবং কর্মতৎপর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেখা গেছে।
এভাবে এই প্রথমবারের মতো হওয়া কিছু মন্ত্রীরা নিজেদের মেলে ধরছেন। তারা ক্রমশ বুঝতে পারছেন যে, মন্ত্রিত্ব একটি দায়িত্ব এবং জনগণ তাদের বিচারক। শেখ হাসিনা তাদেরকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করা যে অত্যন্ত জরুরী সেটা তারা বুঝতে পেরেছেন। এজন্যই ক্রমশ তারা উজ্জ্বল হয়ে উঠছেন। ব্যর্থতার ভিড়ে এমন কয়েকজন মন্ত্রীর আন্তরিকতা, প্রচেষ্টা এবং নিষ্ঠা জনগণের প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলনে নামে বিএনপি। মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদফা দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যায় বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো। এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন করে বিএনপি। নানামুখী তৎপরতার পরও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা বিএনপির আন্দোলনে ভাটা পড়ে। সেই থেকে ধীরে চলছে বিএনপি। নেই রাজপথের কঠোর কোনো কর্মসূচি। সম্প্রতি দলীয় কিছু কর্মসূচিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজপথে জোরালো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজার ঘটনা দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলছে জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য হামলা-মামলা ও গুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এটা সবাই জানেন যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার কিন্তু বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা আজও শেষ হয়নি। এখনো প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। গভীর রাতেও গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মকবুল ইসলাম টিপু, ওমর নবি বাবু, মাহবুবুর রহমান টিপু, রফিকুল ইসলাম ময়না, মোহাম্মদ রবিন, মোহাম্মদ সালেহ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিনে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (ভিপি মিজান), জেলা বিএনপি নেতা মোহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর জুরাইন থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মনির মুন্সী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব বাবুসহ গাড়ি চালককে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক আটকের পরও অস্বীকার এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহেদকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
গত ২৪ এপ্রিল খুলনা জেলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা খান জুলফিকার আলী জুলু, রুপসার থানার মোল্লা সাইফুর রহমান, পাইকগাছার এনামুল হক, মো. সাহাবুদ্দিন ইজাদার, মো. সাইফুল ইসলাম পাইক, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. জাকির হোসেন তালুকদার, মো. লায়েকুজ্জামান লাকু, মো. কামাল উদ্দিন, মো. ফরহাদ হোসন, জাসাসের মো. খালিদ লস্কর, ছাত্রদলের জাকারিয়া, মো. তরিকুল ইসলাম রনি, মো. আলমগীর শেখ, যুবদলের ইমরান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সোহেল গাজী, মো. সোহেল গাজী, মো. ফারুক হোসেন, আমিনুল মল্লিক, মো. শিহাব সরদার, বাদশাহ সরকার, মো. আল আমিন শেখ প্রমুখ।
গত ২১ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ নেতাকর্মীর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গোলাম হোসেন, মো. মোরসালিন, আবদুল আজিজ, সাবের হোসেন, কালাম, হান্নান খান, আবু কাউসার ভূঁইয়া, হুমায়ুন, আনিসুর রহমান শিপলু, সানি ও ইয়াসিন, মোস্তাক আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন সিরাজ, সেন্টু আহমেদ সাকি, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, মোহাম্মদ মঈন, যুবদলের ওমর ফারুক, রাজু বল্লম রাজু, মো. রকি, বিএনপি নেতা মো. বিল্লাল, মো. ফালান, মোহাম্মদ রনি, মামুন, সাগর ও শাওন। ১৭ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ সালেম, কুতুব উদ্দিন এবং রেজাউর রহমান রাজুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য লতিফুল্লাহ জাফরু, বংশাল থানার মো. মাকসুদ হোসেন এবং মোহাম্মদ আরিফ হাসানের জামিন নামঞ্জুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলার আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদলের মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলার মো. মমিনুল ইসলাম, মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল মনছুর খান দিপক। এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর সদর ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির ৫২ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ মার্চ তারা ছাড়া পেয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। কারাগার যেন তাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘ তিন-চার মাস কারাগারে থেকে বেরোলেন। এখনো কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। তাদের জন্য দিনের আলো ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ যেন নিষিদ্ধ। এদের প্রায়ই কারাগারের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, গুম ও খুন করা এই কর্মসূচি যেন সরকারের শেষ হচ্ছে না। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। কারণ তিনি জানেন তার জনসমর্থন নেই। সরকার যতই বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন করুক না কেন, একদিন এর বিচার হবেই। সব অন্যায়ের রেকর্ড আছে। তাদের শেষ রক্ষা হবে না।
জানা গেছে, ঈদের আগে সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তফা কামাল হৃদয়, এসএ খোকন, উত্তরা থানার আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান আত্মসমর্পণের পর কিছুদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ অনেকে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় তার স্বামী খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত অনেক আসামির জামিন হলেও খোকনকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ খোকন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, পায়ে পানি ধরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। অবিলম্বে স্বামী খোকেনর মুক্তি দাবি করেন শিরিন সুলতানা।
সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমি তো ঘরে থাকি না। তবু কেউ কেউ আমার বাসার সামনে ও বিল্ডিংয়ের ছাদে, কেউ আবার ভাঙাড়ি সেজে, মনিটরিং করে। আমি তো চোর বা ডাকাত নই। আমার দল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং জুলুমের বিপক্ষে লড়ছে। আমি সেই দলেরই (বিএনপি) একজন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।