নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৩ জুন, ২০২০
করোনা সঙ্কট মোকাবেলার শুরু থেকেই বাংলাদেশ ভিন্ন পথে হেঁটেছিল। অন্যান্য দেশগুলো যেমন সংক্রমণের পর অপেক্ষা করেছিল, বুঝতে চেয়েছিল সংক্রমণ কতদূর যাবে, বাংলাদেশ তা করেনি। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সব ধরণের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিল, গণজমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, এমনকি মুজিববর্ষের সকল কর্মসূচীও বাতিল করেছিল। অন্যান্য দেশগুলো করোনা সংক্রমণের শুরুতে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিকেও গুরুত্ব দিয়েছিল। প্রথম দিকে বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তগুলোর নানারকম সমালোচনা হলেও এখন দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ যে পথ দেখিয়েছে, সেই দেখানো পথেই হাঁটছে বিশ্ব। একটু দেখে নেই যে কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনুসরণ করেছে বিশ্ব-
১. অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা
বাংলাদেশ করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলাকে গুরুত্ব দিয়েছে। শুরু থেকেই অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সঙ্কট মোকাবেলার জন্য জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রথম ভাষণেই ৯২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। যেটা বিশ্বের কোন দেশই এত তাড়াতাড়ি ঘোষণা করেনি। বাংলাদেশের ঘোষণার ১ মাস পরে ভারত প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এখন ইউরোপের দেশগুলো অর্থনৈতিক প্রণোদনা কিভাবে দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে ভাবছে। এই দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে।
২. গরীব মানুষদের খাদ্য সহায়তা
করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই বাংলাদেশ গরীব মানুষের দিকে নজর দিয়েছে এবং গরীব মানুষদেরকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে। এটার সীমাবদ্ধতা ছিল, ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল- কিন্তু সহায়তার একটি কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেটা পাকিস্তান নিয়েছে করোনা সঙ্কট শুরু হওয়ার ৪৮ দিন পর, ভারত নিয়েছে ২৭ দিন পর এবং দুটি দেশেই বাংলাদেশের যে মডেল, সেই মডেলকে অনুসরণ করেছে। অর্থাৎ তিনটি পর্যায়ে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। অতি দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তা, নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ১০ টাকায় চাল প্রদান আর মধ্যবিত্তদের জন্য নাম প্রকাশ না করে বাড়িতে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। এই ত্রিমুখী উদ্যোগ সবার প্রথম বাংলাদেশ নিয়েছিল, যা এখন ভারত-পাকিস্তান অনুসরণ করছে।
৩. ঝুঁকি নিয়ে অর্থনীতিকে চালু করা
বাংলাদেশে যখন করোনার পিক সিজন, তখন ঈদের পর থেকে গত ৩১শে মে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশই আসলে বিশ্বকে সাহস দেখিয়েছে, বাংলাদেশ সবকিছু খুলে দেওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্য ধীরে ধীরে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, ইতালি, স্পেনও সবকিছু চালু করেছে। বাংলাদেশ গত এপ্রিলে গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেই আলোকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো অর্থনীতির চাকা সচল করতে উদ্যোগ নেয়।
৪. করোনার সঙ্গে বসবাসের মডেল
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম রাষ্ট্রনায়ক যিনি করোনার সঙ্গে বসবাসের মডেল উপস্থাপন করেন। কোন মেডিসিন বা চিকিৎসাপদ্ধতি দিয়ে করোনাকে হটিয়ে দেওয়ার নীতির পরিবর্তে ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত করোনার সঙ্গে বসবাসের কৌশল গ্রহণ করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি, ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করে জীবনযাত্রা চালু করার পদ্ধতি গ্রহণ করে। আর এখন বিশ্বের সবগুলো দেশই স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যেদিক থেকে বাংলাদেশ রোল মডেল।
৫. খাদ্য নিরাপত্তা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই খাদ্য নিরাপত্তার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যে কারণে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিশ্বের সবথেকে ভালো দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থান অধিকার করেছে এবং এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্যের কোন সঙ্কট নেই। যেটা বিশ্বের অনেকগুলো দেশেই হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশ করোনা সঙ্কটে হিমশিম খেয়ে খাদ্য উৎপাদনে মনোযোগ দিতে পারেনি, যার সবথেকে বড় উদাহরণ হলো ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছে, করোনার আতঙ্কে ধান কাটতে না পারার ঘটনা ঘটেছে। ভারতে কৃষি পণ্য উৎপাদন ভয়াবহ সমস্যার মুখে পড়েছে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে কৃষিপণ্য উৎপাদন করার ক্ষেত্রে সুষ্ঠভাবে কাজগুলো করেছে। শেষ পর্যন্ত করোনার লড়াই দীর্ঘমেয়াদী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে অনেকগুলো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
বিএনপি ধর্মঘট রাজনীতির খবর তারেক জিয়া
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের বেশ কদিন ধরে দাপটে ছিলেন। তিনি প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করতেন এবং উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করতেন। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনরা যেন প্রার্থী না হয় সে ব্যাপারে তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন এবং যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি এখন দিশেহারা দিগ্বিদিকহীন একটি রাজনৈতিক দল। দলটি কী করছে, কী বলছে সে সম্পর্কে তাদের নিজেদেরই যেন কোন হিসেব নেই। গত ২ দিন ধরে বিএনপির নেতারা এক নৈব্যক্তিক অবস্থায় আছেন। তারা কেউই কোন কথা বলছেন না। দলের রুটিন কার্যক্রম অর্থাৎ সভা সমাবেশ ছাড়া দলের নেতাদেরকে আগ্রহ নিয়ে কোনো তৎপরতা চালাতে দেখা যাচ্ছে না।
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।