নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ০১ জুলাই, ২০২০
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন ধর্ম নিরপেক্ষ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক দেশ গড়ার জন্য। আর এই স্বপ্ন নিয়েই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের যে সংবিধান, সেই সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতাকে মৌলিক চারটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হিসেবে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর বাংলাদেশে উল্টো হাওয়া বইতে থাকে এবং বাংলাদেশে আস্তে আস্তে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। এই জঙ্গিবাদকে যারা বিভিন্ন সময়ে মদদ দিয়েছেন এবং জঙ্গিবাদকে যারা বিভিন্ন সময়ে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিলেন তাঁরা গণতন্ত্রের লেবাসে রাজনীতি করে কিন্তু আসলে তাঁরা জঙ্গিবাদের গডফাদার। এদের কারণেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ডালপালা মেলেছে এবং এখনো বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা সক্রিয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে ২০১৬ সালে হয়ে যাওয়া হলি আর্টিজেন ঘটনার পর বড় কোন ঘটনা ঘটাতে পারেনি তবে জঙ্গিদের তৎপরতা বাংলাদেশে অব্যহত রয়েছে। কারণ জঙ্গিদের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক গডফাদাররা এবং আমরা যদি দেখি যে-
জিয়াউর রহমান
জিয়াউর রহমান ছিলেন জঙ্গিদের সবথেকে বড় গডফাদার। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে উপড়ে ফেলেছিলেন। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে শুরু করার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতকে তিনি রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। এখান থেকেই বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের উত্থান পর্ব বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ
এরশাদ ছিলেন জঙ্গিবাদের আরেক গডফাদার এবং এরশাদের আমলে বাংলাদেশের মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলো ডালপালা মেলার সুযোগ পায়। এরশাদের সময় ৭৫ এর আত্মস্বীকৃত খুনীরা রাজনৈতিক দল করে, রাজনীতিতে জঙ্গিদের প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তর ঘটে।
বেগম খালেদা জিয়া
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের আরেক গডমাদার এবং তিনি জঙ্গিদের লালনপালন করেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক মসনদ পাকাপোক্ত করার জন্য। বিভিন্ন জঙ্গিসংগঠনের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক গড়েছিলেন এবং ২০০১ সালের আগে এসেই সম্পর্ক প্রকাশ্য হয়ে যায়। একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বিএনপির প্রকাশ্য সম্পর্ক ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ২০ ট্রাক অস্ত্র আসা বা একুশে আগস্টের গ্রেণেড হামলা- সবই জঙ্গি যোগসাজশে হয়েছে বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়। বাংলাদেশে মূলধারার রাজনীতিতে জঙ্গিবাদকে ঠাঁই দেওয়ার মূল কাজটি করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।
তারেক জিয়া
বাংলাদেশে এখনো যে জঙ্গি তৎপরতা চলছে এবং জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে তাঁর সবথেকে বড় গডফাদার তারেক জিয়া। তারেক জিয়া নিজে সরাসরিভাবে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত এরকম বহু তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে, একাধিক জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে তাঁর সংযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে যতগুলো জঙ্গি সংগঠন আছে তাঁদেরকে অর্থ সাহায্য দেওয়া এবং তাঁদেরকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তারেক জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষ করে একুশে আগস্ট গ্রেণেড হামলার সময় তিনি পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনকে ব্যবহার করেছিলেন। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া এবং তাঁদেরকে বাংলাদেশে কাজ করতে দেওয়ার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রেও লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাজ করতেন। এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তারেক জিয়ার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের মাধ্যমে একটি সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করেছেন বলে একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা
বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তিনি ২০০৮ এ যে নির্বাচনী অঙ্গীকার করেন তা বাস্তবায়ন করেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে। এই বিচার বাংলাদেশকে ইতিহাসের দায়মুক্তি দেয়। কিন্তু এই বিচারের পর ৭১ এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং এরা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনকে পৃষ্ঠপোষকতা আর নেতৃত্ব দিচ্ছে। গোলাম আযমের পুত্র, মীর কাশেমের পুত্র, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র, মতিউর রহমান নিজামীর সন্তানরা- প্রত্যেকেই জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে তাঁদের প্রকাশ্য সম্পর্ক রয়েছে। আর এই সমস্ত গডফাদারদের কারণে সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করার পরেও জঙ্গিবাদের শেকড় উৎপাটন করতে পারেনি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।