নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ০৫ জুলাই, ২০২০
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নতুন সচিব দায়িত্ব নেওয়ার পর কাজের গতি ফিরেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। একের পর এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরাসরি তদারকি করছে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এখন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তিনটি। প্রথমত, করোনা মোকাবেলার জন্য গতিশীলভাবে কাজ করা এবং সারাদেশের খোঁজখবর রাখা, দ্বিতীয়ত দুর্নীতি বন্ধ করা এবং তৃতীয়ত সবগুলো মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করা। আর এটা করার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. আবদুল মান্নান। আর এই কাজ করতে গিয়ে প্রতি পদে পদে তিনি বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রত্যেকটি কাজের গতি থামিয়ে দেওয়া এবং বিলম্বিত করতে চাইছেন। এই নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নানারকম কথাবার্তা শোনা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর অসন্তোষের কথা গোপন রাখেননি, একটি ফাইলে লিখেছেন যে ভবিষ্যতে এইসব ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করতে হবে। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী কিছু কিছু সিদ্ধান্ত সচিবই দিতে পারে, সেখানে মন্ত্রীর কোন ভূমিকার দরকার নেই। সিভিল সার্জন তৈরি করার কাজ শুরু হয় একটি ফিটলিস্টের মাধ্যমে এবং এই ফিটলিস্ট তৈরি করার কাজ মন্ত্রী করেন। ফিটলিস্টের পর যখন একজন সিভিল সার্জনকে অন্য জায়গায় বদলি করতে হয় তখন আর মন্ত্রীর অনুমতি দরকার হয়না। কিন্তু বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার পর একজন পিয়নের বদলির জন্যে হলেও ফাইল মন্ত্রীর কাছে যেতো এবং মন্ত্রীর টেবিলে ২ দিন পরে থাকার পর মন্ত্রী সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন।
এই অবস্থার পরিবর্তন করেছেন বর্তমান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেই যে ফাইলগুলো নীতিনির্ধারণী নয়, রুটিনমাফিক- সেই ফাইলগুলোর সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই দিয়ে দিচ্ছেন। এতে মন্ত্রী অসন্তুষ্ট এমন খবর ছড়িয়ে পড়ছে নানা জায়গায়।
জানা গেছে যে, ভোলার সিভিল সার্জনকে ঝালকাঠীতে বদলি করার সিদ্ধান্তে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক ফাইলে লিখেছেন যে, ভবিষ্যতে এইসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাঁকে যেন অবহিত করা হয়। এরপর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব নিজে থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে যান এবং বিষয়টি ব্যাখা করেন যে মন্ত্রীর ফিটলিস্ট থেকে এটা করা হয়েছে। এই ধরণের সিদ্ধান্তগুলোর ব্যাপারে মন্ত্রীকে শুধু অবহিত করলেই চলে, মন্ত্রীর অনুমোদনের দরকার নেই।
তবে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, মন্ত্রীর ক্ষোভ-অসন্তোষের কারণ অন্য। সিএমএসডি’র দুর্নীতি সম্পর্কে সকলেই অবহিত এবং সিএমএসডি-তে দুর্নীতিবাজদের একটি চক্র গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে সিএমএসডির নতুন পরিচালক দেওয়া হয়েছে। তিনি একজন সৎ, দায়িত্ববান, কর্তব্যনিষ্ঠ ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরাসরি সিএমএসডির কার্যক্রম তদারকি করছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে সিএমএসডির তিনজন কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা বর্তমান পরিচালককে অসহযোগিতা করছেন এবং বিভিন্ন কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুসন্ধানে এটাও ধরা পড়েছে যে, এই তিনজন কর্মকর্তাই মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। তারা মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার কাছাকাছি অবস্থান করেন। এই বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সিএমএসডির ওই তিন কর্মকর্তাকে বদলির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যসচিব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ এই বদলি আদেশ জারি করেন। বদলিকৃতরা হলেন, উপপরিচালক (পিএন্ডসি) ডা. মো. জাকির হোসেন। তাকে বদলি করা হয়েছে তত্বাবধায়ক (উপপরিচালক সমমান) ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল, কক্সবাজার। তত্বাবধায়ক (উপপরিচালক সমমান) ডা. মো. মহিউদ্দীন। উপপরিচালক হিসেবে সিএমএসডিতে বদলি করা হয়েছে। সহকারী সার্জন ডা. মো. সাব্বির হোসেন। সিএমএসডিতে সংযুক্ত আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
জানা গেছে যে, মন্ত্রী এতে অসন্তুষ্ট হয়েছেন। সিএমএসডি-কে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনা অনুযায়ী সিএমএসডির নতুন পরিচালক দেওয়া হয়েছে। এই পরিচালক সততা এবং নিষ্ঠার সাথে অতীতের যে দুর্নীতিগুলো হয়েছিল সেই কালিমা মোচন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যখন একটা গতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, যখন করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অযোগ্যতা এবং দায়িত্বহীনতার বিপরীতে একটা কর্মচাঞ্চল্যের আবহ সৃষ্টি করা হচ্ছে তখন সেখানে মন্ত্রী দিচ্ছেন স্পিড ব্রেকার।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রীর কাছে যে কোন ফাইল গেলে সেটা দুদিন পড়ে থাকে। কারণ তিনি অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন। আর সেকারণে যদি ফাইলে কোন জীবানু থাকে তা মুক্ত হতে কমপক্ষে দুদিন সময় লাগবে তাই ফাইলটি পড়ে থাকে। তৃতীয়দিন মন্ত্রী এই ফাইলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুইদিন দুই বছরের সমান। দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণই হলো এখানের মূল চ্যালেঞ্জ। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গতি আনার যে চেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে করা হচ্ছে সেই গতিতে স্পিড ব্রেকার বসাচ্ছেন যেন মন্ত্রী।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।