নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২০
করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে যে দুর্নীতিগুলো হয়েছে, যেভাবে লাগামহীনভাবে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, নিম্নমানের পণ্য দিয়ে দাম হাঁকানো হয়েছে সেসকল যাবতীয় তথ্য এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উদ্যোগে কারা কারা এই সমস্ত অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁদের সমস্ত খবর সংগ্রহ করা হয়েছে এবং যাচাইবাছাই করে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই সমস্ত বিষয়গুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন এবং এই ব্যাপারে তিনি শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি দেখাবেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই সমস্ত দুর্নীতির সঙ্গে যারাই জড়িত তাঁরা যতইও ক্ষমতাবান হোক না কেন প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই দুর্নীতির খবর আসতে থাকে। বিশেষ করে, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে দুর্নীতি হয় এবং প্রধানমন্ত্রী নিজে এই দুর্নীতির কথা বলেছিলেন যে, এন-৯৫ মাস্কের নামে যে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে সেই মাস্কের মোড়কে এন-৯৫ লেখা থাকলেও বাস্তবে তা এন-৯৫ নয়। সাপ্লায়াররা যে মাল দিচ্ছে সেগুলো যাচাইবাছাই করে নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়েছিল এবং কার্যত প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। কিন্তু তারপরেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দায়সারা তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি এবং রিপোর্ট কার্যকর করার কোন উদ্যোগও নেয়া হয়নি। এরপরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে এই ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হয় এবং সারাদেশে যে মাস্কগুলো সরবরাহ করা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে তদন্ত করে এই ব্যাপারে যারা জড়িত তাঁদের চিহ্নিত করা হয়। এই ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে।
আরটি পিসিআর ল্যাব নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে প্রধানমন্ত্রী সে ব্যাপারে তাঁর কার্যালয়কে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এই খতিয়ে দেখার প্রেক্ষিতে যে সমস্ত অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া করোনা সঙ্কটকালে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে লাগামহীন মূল্য নির্ধারণ করে কেনাকাটা সম্পর্কিত সিএমএসডি’র যাবতীয় তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই ব্যাপারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনুসন্ধান করে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে যে, করোনা সঙ্কটের সময় যে সমস্ত সন্দেহভাজন কেনাকাটা হয়েছে, সে সমস্ত অনিয়ম এবং কেনাকাটার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই সমস্ত বিল পাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এখন যারা এই সমস্ত জিনিস কেনাকাটা করেছে এবং সাপ্লাই দিয়েছে তাঁদের অনিয়মের ব্যাপারে আরো খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং খোঁজখবর নেওয়ার পরে তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রথমত, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাবে তাঁদের বিরুদ্ধে যেন দুদক দ্রুত পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, এই সমস্ত ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যেন তাঁরা আর এসমস্ত ঠিকাদারি করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তৃতীয়ত, সরকারের পক্ষ থেকে যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাঁদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তাঁরা যেন তাঁদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, করোনার সময়ে যারা দুর্নীতি করেছে তাঁদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী কোন ছাড় দিবেন না এবং যথাযথ ব্যবস্থা তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।