ইনসাইড পলিটিক্স

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠরা কেন নেই আওয়ামী লীগে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ০২ অগাস্ট, ২০২০


Thumbnail

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নন, তিনি সর্বকালের সেরা বাঙালি রাজনীতিবিদও বটে। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং জনবান্ধব রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার আদর্শেই অনুপ্রাণিত একটি দল। বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে যেমন নির্যাতিত হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন, পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আপোসহীন সংগ্রাম করেছেন, তেমনি তিনি সংগঠনকে শক্তিশালী করেছিলেন, সংগঠনকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিলেন। জাতির পিতা স্পষ্টই অনুধাবন করেছিলেন যে, সবকিছুর উর্ধ্বে একটি ভালো সংগঠন, একটি আদর্শবান সংগঠন লাগবে। জাতির পিতার অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা পাঠ করলে বোঝা যায় যে, তিনি সংগঠনের ব্যাপারে কতটা মনযোগী ছিলেন। তিনি নিজের হাতে অনেক রাজনীতিবিদ তৈরি করতেন, বিভিন্ন পেশার অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তিকে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনও বহু নেতা আছে যারা জাতির পিতার স্নেহধন্য, জাতির পিতা যাঁদের রাজনীতিতে এনেছিলেন এবং জাতির পিতার সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এদের অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন, কেউ কেউ এখনো আওয়ামী লীগে আছেন, আর কেউ কেউ এখন আওয়ামী লীগে নেই। প্রশ্ন ওঠে যে, বঙ্গবন্ধুর যারা ঘনিষ্ঠ, যারা এখনো বঙ্গবন্ধুর ভক্ত, বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে যাঁদের মনে কোন প্রশ্ন নেই, বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে যাঁদের আবেগ-ভালোবাসার কমতি না থাকার পরেও তাঁরা আওয়ামী লীগে নেই কেন? এরকম কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়েই আমাদের এই প্রতিবেদন।

ড. কামাল হোসেন

ড. কামাল হোসেনকে বঙ্গবন্ধু হাতে ধরে রাজনীতিতে এনেছিলেন। উত্তাল গণআন্দোলনের পরপরই বঙ্গবন্ধু ড. কামাল হোসেনকে আওয়ামী লীগে নিয়ে এসেছিলেন। ড. কামাল হোসেন সেই সময় সদ্য আইন পেশায় যোগ দিয়েছিলেন এবং যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন। ড. কামাল হোসেন তাঁর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধু যখন তাঁকে রাজনীতিতে আসার আমন্ত্রণ জানালো তখন তাঁর দৃঢ়তা এমন ছিল যে, সেই আমন্ত্রণ তিনি প্রত্যাখ্যান করতে পারেননি। ত্রিশোর্ধ্ব বয়সেই বঙ্গবন্ধু তাঁকে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু ডা. কামাল হোসেন এখন আওয়ামী লীগে নেই। ১৯৭৫ এর পরবর্তী সময়ে যেমন তাঁর ভূমিকা ছিল রহস্যময়, তেমনি ১৯৯১ সালে তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে গণফোরাম গঠন করেন। এখন এই গণফোরাম টিকে না থাকার মতোই একটি নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল হিসেবে আছে। ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগে নেই কেন তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে এর মূল কারণ হলো ড. কামাল হোসেন হয়তো বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আর এগিয়ে নিতে চাননি বা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় তিনি একজন ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করেন।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী কেবল বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠই ছিলেন না, তিনি ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন, আওয়ামী লীগের সকলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও এখন কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে নেই। জানা যায় যে, বঙ্গবন্ধুর প্রতি কাদের সিদ্দিকীর শ্রদ্ধা-আনুগত্যতা নিয়ে সন্দেহ নেই, এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিও তাঁর ভালোবাসার কমতি নেই। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলে যে নিয়মনীতি মেনে চলতে হয় সেরকম বিধিনিষেধ মানার লোক কাদের সিদ্দিকী নন। তিনি তাঁর নিজের কথা স্পষ্টভাবেই বলেন এবং রাজনৈতিক শৃঙ্খলা, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পালনের ক্ষেত্রে তাঁর কিছু সমস্যা থাকার কারণেই তাঁকে আওয়ামী লীগ ছেঁড়ে চলে যেতে হয় এবং এখনো তিনি দলের বাইরে আছেন।

শেখ শহিদুল ইসলাম

জাতীয় পার্টির একাংশের নেতা শেখ শহিদুল ইসলাম জাতির পিতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মেধাবী ছাত্রনেতা-যুবনেতা হিসেবে শেখ শহিদুলকে বঙ্গবন্ধু নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন। ৭৫ পরবর্তী সময়ে শেখ শহিদুল ইসলাম এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। জাতীয় পার্টিতে নানা টানাপোড়েন এবং ভাঙ্গন প্রক্রিয়ার তিনি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টিতে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ব্যাপারে তিনি যেমন আপোসহীন, ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে যারা শিক্ষিত এবং রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় এগিয়ে তাঁদের মধ্যে শেখ শহিদুল ইসলাম অন্যতম। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য হয়েও তিনি কেন আওয়ামী লীগে নেই সেই এক বড় প্রশ্ন।

কাজী ফিরোজ রশীদ

কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর প্রিয়ভাজন এক ছাত্রনেতা এবং যুবনেতা ছিলেন। ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের আগের রাতেও কাজী ফিরোজ রশীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাত হয়েছিল। তারপর কাজী ফিরোজ রশীদ রাজনীতির নানা চড়াই-উতরাইয়ে আওয়ামী লীগে টিকে থাকতে পারেননি, যেকোন কারণেই হোক তিনি আদর্শচ্যুত হয়েছেন এবং এখন তিনি জাতীয় পার্টির অন্যতম নেতা।

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ছিলেন তরুণ শিক্ষক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজশাহী সফরে গেলে বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তরুণ শিক্ষকের ওপর। তাঁকে তিনি রাজনীতিতে যোগদানের অনুরোধ জানান। অধ্যাপক আবু সাইয়িদ রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৫ এর পরেও অধ্যাপক আবু সাইয়িদ একজন গবেষক হিসেবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে যে ষড়যন্ত্র, অকথিত অধ্যায় ইত্যাদি নিয়ে প্রচুর গবেষণা এবং লেখালিখি করেছেন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন এবং গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অকথিত বিষয়গুলোকে উপস্থাপন করা, বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভাষণগুলোকে খুঁজে বের করে আবার প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এখন তিনি আওয়ামী লীগে নেই। ২০০৭ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর টানাপোড়েন তৈরি হয় এবং এখন এই টানাপোড়েনের ধারায় তিনি এখন কেবল আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গন থেকেই বিতাড়িত প্রায়।

এরকম আরো কিছু ব্যক্তি আছেন যারা জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন, কিন্তু নানা কারণে তাঁরা পথভ্রষ্ট হয়েছেন কিংবা নানা বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁরা নেই।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সন্ধ্যায় হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

প্রকাশ: ০৮:৪৫ এএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে কিছু জরুরি শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আজ বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হবে। 

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
 
শামসুদ্দিন দিদার জানান, সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর রোডের ০১ নম্বর বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালে নেওয়া হবে খালেদা জিয়াকে। রাতে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


হাসপাতাল   খালেদা জিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হয়নি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ১০:৪৯ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক শেষে গণভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এ বছর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর হীরক জয়ন্তী জাঁকজমকভাবে আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, শেখ কামালের জন্মদিবস, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ বিভিন্ন দিবস পালন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। বৈঠকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।

আজ সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা শুরু হয়। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

উপজেলা নির্বাচন   কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের জনসভা বুধবার

প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মহান মে দিবস উপলক্ষে ১ মে (বুধবার) বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক জনসভা করবে আওয়ামী লীগ। জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে এই শ্রমিক জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে দলের কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করবেন।

আওয়ামী লীগ   জনসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আরও ৪ নেতাকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আরও চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দলটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানোনো হয়।


এতে বলা হয়, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ঢাকা জেলাধীন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মোসা. সাবিরা বেগম, সুনামগঞ্জ জেলাধীন শাল্লা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাজিরুল ইসলাম আজহার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ এবং যুবদলের সদস্য সাইফুর রহমানকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।


এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল ভোট বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

বহিষ্কারকৃতদের মধ্যে ২৮ জন চেয়ারম্যান পদে, ২৪ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ২১ জন।

বিএনপি   বহিষ্কার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

তারেককে নিয়ে টালমাটাল বিএনপি

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

তারেক জিয়ার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। তারেক জিয়া তার পছন্দের ব্যক্তিদেরকে দলে রাখছেন। অপছন্দের ব্যক্তিদেরকে দল থেকে বের করে দিচ্ছেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন নিয়মনীতি মানা হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে এবং এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দলের ভিতরে চলছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ এবং কোন্দল।

সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল তাকে আদেশ করেছিল দায়িত্ব গ্রহণ না করার জন্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদটি গ্রহণ করেন। আর তার এই পদ গ্রহণের কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল। কিন্তু এই অব্যাহতি শেষ পর্যন্ত টেকেনি। এখন তাকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে, তেমনই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তারেক জিয়ার এই সিদ্ধান্তে বিএনপির আইনজীবীদের একাংশ যারা মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলীসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বলছেন, তারেক জিয়ার নির্দেশেই তারা খোকনের ব্যাপারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার তারেক জিয়াই তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন। মাঝখান থেকে তারেক জিয়া তাদেরকে অসম্মান করবেন বলেও এই সিনিয়র আইনজীবী মনে করেন।

তারেক জিয়ার পরামর্শেই তারা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে দায়িত্ব না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়াই এখন মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে কথা বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে যেমন আছেন, তেমনই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও বহাল থাকছেন।

বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে মাহবুব উদ্দিন খোকন যদি নির্বাচন করে এবং জিতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে তাহলে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীরা কী দোষ করল? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত হল বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। আর এই ধারাবাহিকতায় বিএনপির বিভিন্ন পেশাজীবীদের নির্বাচনও বর্জন করছে। এর আগে বিএনপি নিয়ন্ত্রিত ড্যাব চিকিৎসকদের বিএমএ নির্বাচনও বর্জন করেছিল।

প্রকৌশলীদের নির্বাচনেও বিএনপি সরে গিয়েছিল। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কেন বিএনপি অংশগ্রহণ করল? সেটি যেমন একটি বড় প্রশ্ন, তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল যে- একই সিদ্ধান্ত একেক জনের ব্যাপারে এক রকম হবে কেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন?

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ দলের কিছু বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদেরকে বলেছেন, এই সমস্ত কীভাবে হচ্ছে আমি জানি না। আপনাদের যদি কোনও কিছু বলার থাকে আপনারা লন্ডনে যোগাযোগ করেন। এখন বিএনপিতে কেউ দায় নিতে চাচ্ছে না। কেউ জানছেও না যে কাকে কখন কীভাবে বহিষ্কার করা হচ্ছে। যার ফলে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে দলটির মধ্যে।

উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছেন সে রকম ৭৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি নির্দলীয় ধরনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তারা ব্যবহার করবে না।

অনেক বিএনপি নেতা মনে করেন যে, দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটাই সঠিক ছিল। কিন্তু কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সেটি তার নিজস্ব ব্যাপার। এ জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা বাঞ্ছনীয় নয় বলেই বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মনে করেন। আর একারণেই বিএনপির সব নেতারাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন এবং তারা এখন তিক্ত-বিরক্তও বটে।


বিএনপি   রাজনীতি   মির্জা ফখরুল   তারেক জিয়া   ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন