নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০২০
ঈদের পর বিএনপির মধ্যে সবথেকে বড় আলোচনার বিষয় হচ্ছে ডা. জোবায়দা রহমান কি দেশে আসছেন? তারেক জিয়ার এই চিকিৎসক স্ত্রী বিএনপির কোন নেতা নন, কিন্তু বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক হিসেবে তাঁকে বিবেচনা করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বিএনপিতে তারেক জিয়ার থেকেও ডা. জোবায়দার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। যদিও ডা. জোবায়দা আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন বক্তব্যে বলেছেন যে, রাজনীতিতে আসার কোন ইচ্ছে নেই তাঁর। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, ঈদের দিন রাতে বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাত করতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ক আলোচনা হয়। সেই সময়ে বেগম খালেদা জিয়াই ডা. জোবায়দার কথা বলেন এবং জানান যে, ডা. জোবায়দাই তাঁর চিকিৎসার দেখাশোনা করছেন। আর এই চিকিৎসাটাকে আরো ব্যাপক বিস্তৃত করা এবং অসুখগুলোকে নিশ্চিত করে সেই ব্যাপারে সুচিকিৎসা করার জন্যে ডা. জোবায়দার দেশে আসার কথাও উল্লেখ করেছেন বেগম জিয়া।
এরপর থেকেই বিএনপিতে নানা রকম গুঞ্জন চলছে যে, ডা. জোবায়দা কি দেশে আসছেন? ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তারেক জিয়া এবং পরে রাজনীতি না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে ২০০৮ সালে তিনি লন্ডনে পাড়ি দেন। লন্ডনে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অবস্থানের সময় তিনি কি সেখানে নাগরিকত্ব নিয়েছেন নাকি রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন তা নিয়ে গুঞ্জন আছে। এই সময়ে তারেক জিয়া একাধিক মামলায় দন্ডিত হয়েছেন। মানি লন্ডারিং মামলায় তাঁর সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে, যাবতজীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায়। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই অবস্থায় তারেক জিয়াকে দেশে আনার জন্য সরকারের মধ্য থেকে একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেই উদ্যোগগুলো এখনো সফল হয়নি। এর মধ্যে বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হন এবং দুটি পৃথক মামলায় ১৭ বছরের কারাভোগ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুকম্পায় ৬ মাসের জামিনে আছেন, যার চার মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার বলে বেগম জিয়ার ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, তাঁর চিকিৎসার সার্বিক তদারকি করেন তাঁর ছেলের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং লন্ডন থেকেই তিনি বেগম জিয়ার চিকিৎসার সামগ্রিক দিক দেখভাল করেন। বেগম জিয়া ২৫ মাস কারাগারে ছিলেন। এই সময়ে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী কয়েকদফা ঢাকায় এসে সাক্ষাত করলেও ডা. জোবায়দা আসেননি।
বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে কিছু মামলা রয়েছে। তিনি ঢাকায় আসলে তাঁকে হয়রানি করা হতে পারে বলেই হয়তো তিনি ঢাকায় আসেননি। তবে অন্য একটি মহল বলছে যে, ডা. জোবায়দার ঢাকায় না আসার পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে। তাঁর মেয়ের লেখাপড়াসহ নানারকম আনুষঙ্গিক বিষয় ছিল যার কারণে তিনি ঢাকায় আসেননি। তবে বিএনপির অনেক নেতা বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্যে লন্ডনে যেতে চাইলেও পারিবারিক নানা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত তাঁর লন্ডনে যাওয়া হচ্ছে না। তিনি লন্ডনে না গেলে শেষ পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসা কিভাবে হবে তা নিয়ে বিএনপির ভেতরে যেমন আলাপ-আলোচনা হচ্ছে তেমনি বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের মাঝেও আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আর এই আলোচনায় ডা. জোবায়দা রহমানের দেশে আসার বিষয়টি সামনে চলে আসছে।
একটি সূত্র বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়া যেকোন শর্তে বিদেশে যেতে রাজি আছেন, এতদিন তিনি যাননি বিশ্বের করোনা পরিস্থিতির জন্যে। এখন অনেকেই যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন এবং সেই বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়াও যুক্তরাজ্যে যেতে চান। এই ব্যাপারে সরকারের সঙ্গেও দেনদরবার করতে চান। তাঁকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ডা. জোবায়দা রহমান ভূমিকা রাখতে পারেন বলেও অনেকে মনে করছেন। অন্য একটি সূত্র বলছে যে, বেগম জিয়া এখন দেশের বাইরে যাওয়ার পক্ষপাতী নন। তিনি দেশেই চিকিৎসা নিতে চান এবং দেশে যেন তাঁর সঠিক চিকিৎসা হয় সেটা দেখভাল করার জন্য ডা. জোবায়দা রহমান স্বল্পতম সময়ের মধ্যে দেশে আসতে পারেন এবং ডা. জোবায়দা রহমান দেশে আসলে কোন নেতিবাচক ঘটনা যেন না ঘটে এবং তাঁর যেন কোন সমস্যা না হয় সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছেন বিএনপির নেতারা। আর এই কারণেই যদি সকলকিছু ঠিক থাকে তাহলে ডা. জোবায়দা রহমান দেশে এসে বেগম জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা ঠিক করে দিবেন, অর্থাৎ কোন চিকিৎসার জন্যে কোন চিকিৎসক দেখবেন তা নির্ধারণ করে দেবেন এবং তারপর হয়তো তিনি চলে যাবেন।
তবে শেষ পর্যন্ত আদৌ ডা. জোবায়দা রহমান আসবেন নাকি বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চলে যাবেন নাকি জেলে চলে যাবেন তা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।