নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৮ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২০
আওয়ামী লীগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত লোকের কমতি নেই। এই বিশ্বস্তরা বিভিন্ন পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়েছেন এবং বিভিন্ন কঠিন সময়ে তাঁরা দলকে সংঘত রাখতে, শেখ হাসিনার আদর্শ-নীতিকে অটুট রাখার জন্য কাজ করেছেন, সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু সুসময়ে এই বিশ্বস্তরাই কেন যেন দায়িত্ব পান না, তাঁরা দূরে থাকেন। কেন এমন ঘটে, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে যে, এখনো আওয়ামী লীগে এমনকিছু নেতা আছে যারা এই সংকটকালীন সময়ে খুব ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। শুধু ভালোভাবে দায়িত্ব পালন নয়, তাঁরা শেখ হাসিনার অভিপ্রায় এবং কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নেও নিষ্ঠার পরিচয় দিতে পারতেন। যেখানে এখন একমাত্র ঘাটতি রয়েছে। সরকার এখন করোনা মোকাবেলায় এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলায় খারাপ কাজ করছে তা নয়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং পরিকল্পনা করছেন সেগুলো সেভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছেনা। এই বাস্তবায়নের কারণেই কিছু কিছু সমস্যা হচ্ছে। আর এই কারণেই অনেকেই মনে করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর যারা বিশ্বস্ত, যারা প্রধানমন্ত্রীর দুঃসময়ের সাথী, তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হলে পরিস্থিতি আরো ভালো হতো। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে,
আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম
আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোটের আমলে তিনি নির্যাতিত হয়েছেন, নিপীড়িত হয়েছেন, কারাবরণ করেছেন এবং তাঁর উপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলেও মন্ত্রীত্ব তো দূরের কথা বাহাউদ্দিন নাছিম এমপির মনোনয়ন থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। কেন হয়েছেন সেটা জানা যায়নি, তবে এখনো তিনি দলের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছেন।
শামীম ওসমান
আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের আরেক কাণ্ডারি শামীম ওসমান। তাঁকে নিয়ে বিতর্ক-সমালোচনা আছে, তবে আওয়ামী লীগের জন্যে যে তিনি অন্ত:প্রাণ, শেখ হাসিনার আদর্শের সঙ্গে যে তিনি এক মুহুর্তের জন্যেও বেইমানি করেননি তা প্রমাণিত, স্বতঃসিদ্ধ। অথচ শামীম ওসমান এমপি হয়েই আছেন, কখনো মন্ত্রীত্ব পাননি এবং নিজেকে প্রমাণের কোন সুযোগও পাননি। অনেকেই মনে করেন যে, শামীম ওসমানের মতো দৃঢ়চেতা, শেখ হাসিনার প্রতি একনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকেই এই সঙ্কটের সময়ে দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন এবং তাঁরা দায়িত্ব নিলে শেখ হাসিনার লক্ষ্য, চিন্তাচেতনা বাস্তবায়ন করা অনেক সহজসাধ্য হতো।
ড. আতিউর রহমান
ড. আতিউর রহমানকে মনে করা হয় তিনি শেখ হাসিনার সৃষ্টি, তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত নন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ, বিশ্বস্ত একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। শুধু শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ নন, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রামীণ এবং কৃষিমুখী অর্থনীতিকে নতুন মাত্রা দেওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি একজন বরেণ্য অর্থনীতিবিদ বটে। ড. আতিউর রহমানের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাবস্থায় অনেক অর্জন রয়েছে। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা সকলেই অকপটে স্বীকার করে। ড. আতিউর রহমানও এখন সরকারে ভূমিকাহীন। অথচ এই সময়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলাতে ড. আতিউর রহমানের মতো ব্যক্তিত্বদের অনেক বেশি দরকার ছিল বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট মহল।
আওয়ামী লীগে এরকম অনেক ব্যক্তি আছেন যারা হয়তো আওয়ামী লীগে বা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই, এমপিও নন। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নিরবে দলের পক্ষে কাজ করেছেন এবং দলকে সহযোগিতা করেছেন। এই সংকটকালীন সময়ে এদেরকে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই বিশ্বস্তরা যত বেশি প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকবেন তত বেশি দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সংশয় মুক্ত থাকবে এবং আশায় বুক বাঁধবে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে এরাই পাশে থাকবেন বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা, আর এখন যারা পদ নিয়ে আছেন তাঁরা কতটুকু থাকবেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন আওয়ামী লীগে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের যোগাযোগ হচ্ছে। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাচনে তাদের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য কর্মীদেরকে টেলিফোনেও বার্তা দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে একটি স্ববিরোধী অবস্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। ওই বৈঠকেই আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হবে এবং সেই ধারাবাহিকতায় ৭৩ জন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপির অধিকাংশ তৃণমূলের নেতা যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তারা শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।
প্রথম ধাপে ধাপে বিএনপির ৬৭ জন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র আটজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এখনও ৫৯ জন বিএনপির প্রার্থী ১৫০টি উপজেলার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। যে সমস্ত প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছেন তাদের এলাকার কেন্দ্রীয় নেতারা সাবেক এমপি বা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই সমস্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন এবং তাদের জন্য ভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রচারণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতারা অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন। উপজেলা নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা দলের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মীদেরকে একত্রিত করছেন কর্মীসভার আদলে এবং সেই কর্মীসভায় বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হচ্ছেন। তারা বক্তব্য রাখছেন এবং শুধু বক্তব্য রেখেই ক্ষান্ত হননি, তারা উপজেলায় স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদেরকে আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা দলের ঐক্য বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য বার্তা দিচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে অংশ গ্রহণ করছে না। সেখানে তাদের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। প্রায় অধিকাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের গড়ে তিন জন করে প্রার্থী রয়েছে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা মনে করছেন যে, এটি তাদের জন্য একটি অনবদ্য সুযোগ। কারণ এর ফলে উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের কোন্দলের ফসল তারা ঘরে তুলতে পারবে। আর এ কারণেই উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্ত অনেকে মানছেন না। আর বাস্তবতা অনুধাবন করে যারা এলাকার এমপি তারাও উপজেলায় একটা ভিত্তি রাখার জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে সমর্থন করছেন।
বিএনপি আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন মির্জা ফখরুল ড. মঈন খান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি উপজেলা নির্বাচন শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
সারাদেশে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। তবে অনুমতি না
থাকায় পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয় মিছিলটিকে।
পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দলটির নেতারা
অভিযোগ করে বলেন, সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার পরে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটের
নেতাকর্মীরা জড় হন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন৷
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই পুলিশ বারবার বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। বিরোধী দল দমন করে ক্ষমতাসীনরা একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে পুলিশ বারবার বিএনপির মিছিলে বাধা
দিচ্ছে, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পণ্ড করছে। দুর্নীতি দমন, আর জনকল্যাণ রেখে
ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দলকে দমনে ব্যস্ত।
তিনি আরও বলেন, যত প্রতিকূল পরিবেশ হোক না কেন, আওয়ামী লীগকে বিদায় না করা পর্যন্ত রাজপথে বিএনপির কর্মসূচি চলবে। একদলীয় শাসন কায়েম করতেই বেগম জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে সরকার।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত বিএনপি নেতারা প্রার্থী হয়েছেন, সেই সমস্ত প্রার্থীদেরকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, তারা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তাহলে তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে, বিএনপিতে বহিষ্কৃত এই সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
আগামী ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের অবাধ্যতা, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা ইত্যাদি নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি কী অবস্থান গ্রহণ করেন এবং কীভাবে তিনি বিদ্রোহীদের মোকাবেলা করেন সেটির দিকে তাকিয়ে আছে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ।