নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ০৮ অগাস্ট, ২০২০
সরকার বিভিন্ন রকম সংকট মোকাবিলায় ব্যতিব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। একদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলছে। তার সঙ্গে ক্রমশ দানা বাধছে অর্থনৈতিক সংকট। এর পাশাপাশি সারাদেশে বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে সরকারকে। এই প্রধান সংকটগুলোর পাশপাশি কিছু অপ্রধান সংকট ঘনিভূত হচ্ছে। এই সংকটগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করলে একদিকে যেমন জনআস্থার সংকট তৈরী হতে পারে তেমনি সরকারের ব্যাপারে মানুষের নেতিবাচক ধারণাও তৈরী হতে পারে বলে সাধারণ মানুষ মনে করছে। আর তাই করোনা, বন্যা কিংবা অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি ভিন্ন রকমের কিছু চ্যালেঞ্জের দিকে সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে নজর দিতে হচ্ছে এবং এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
সরকারের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জের বাইরে যে সমস্ত চ্যালেঞ্জগুলো এসেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে;
সিনহা হত্যার বিচার
৩১ জুলাই টেকনাফে মেরিন ড্রাইভে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এই বিষয়টি সারাদেশে তোলপাড় তৈরী করেছে। বিশেষ করে এরকম একজন তরুণ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুতে সকলেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দুরদৃষ্টির কারণে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরী হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের কারণেই অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেনা ও পুলিশ বাহিনীর প্রধানরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিচার কার্য শুরু হয়েছে এবং এ ব্যাপারে সুষ্ঠু বিচারের ব্যাপারে দুই বাহিনী একমত পোষণ করেছেন। এখন দেখা যাক সিনহা হত্যার বিচার কিভাবে হয়। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের কল্যাণ সমিতি (রাওয়া) একমাসের মধ্যে একটি সুনির্দিষ্ট সময় বেধে দিয়ে তার মধ্যে বিচার করতে বলেছেন। দেশের মানুষও এই নির্মম হত্যকাণ্ডের দ্রুত বিচার প্রত্যাশা করে। কাজেই এই বিচারটিকে সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে করা সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
দুর্নীতিবাজদের বিচার
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই নানারকম দুর্নীতির খবর বের হতে থাকে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক দুর্নীতির খবর সারাদেশের মানুষকে উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত করে তোলে। ইতিমধ্যে সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছে জেকেজি’র ডা. আরিফ এবং সাবরিনাসহ অন্যান্য দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুদক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে তলব করেছে। সাধারণ মানুষ দেখতে চায় এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং কঠিন অবস্থান এবং যারা করোনাকালীন সময়ে প্রতারণা-দুর্নীতি করেছে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। এই বিচারগুলো দ্রুত করা, দৃশ্যমান করা এবং নির্মোহভাবে করা সরকারের জন্যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
গুজব এবং অপপ্রচার ঠেকানো
করোনা মহামারির চেয়েও বড় হয়ে দেখা গেছে গুজব এবং অপপ্রচারের মহামারি। যেকোন ঘটনা নিয়ে নানারকম উদ্ভট গুজব ছড়ানোর জন্যে একটি মহল যেন সক্রিয় থাকছে সবসময়। সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর নানারকম গুজব ছড়ানো হয়েছে এবং কোনকিছু ঘটলেই গুজব ছড়িয়ে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির ভেতরে ফেলা একটি মহলের যেন নেশায় পরিণত হয়েছে। এই কারণেই গুজব-অপপ্রচার ঠেকানো সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ অনেকেই এই গুজবে বিশ্বাস করছে এবং নানারকম প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
চিকিৎসায় জনআস্থা ফেরানো
সাম্প্রতিক সময়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে সরকারের সামনে এসেছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মানুষজন হাসপাতালে যাচ্ছে না, অন্যান্য চিকিৎসার জন্যেও পারতপক্ষে যাচ্ছে না। এই অবস্থা স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি বড় হুমকি বলে মনে করছেন অনেকে এবং এই কারণে চিকিৎসায় জনআস্থা ফেরানো সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
শিক্ষায় সঙ্কট
বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো গত ১৭ মার্চ থেকে টানা বন্ধ। অন্য সবকিছু খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো খোলেনি। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া হলেও এইসএসসি পরীক্ষা কবে হবে তা জানা যায়নি। অনলাইন ক্লাশ নিয়ে নানারকম জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষার সঙ্কট মোকাবেলা করাও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আর এই চ্যালেঞ্জগুলো গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, এই চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষকে আস্থায় নিয়েই একটি সরকারকে দেশ পরিচালনা করতে হয়।
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎভাবে লাগাতার আন্দোলনে নামে বিএনপি। মূলত ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে একদফা দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যায় বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো। এ আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি তারা। একপর্যায়ে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ ৬২টি রাজনৈতিক দল। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন করে বিএনপি। নানামুখী তৎপরতার পরও নির্বাচন ঠেকাতে না পারা বিএনপির আন্দোলনে ভাটা পড়ে। সেই থেকে ধীরে চলছে বিএনপি। নেই রাজপথের কঠোর কোনো কর্মসূচি। সম্প্রতি দলীয় কিছু কর্মসূচিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজপথে জোরালো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও সাজার ঘটনা দলের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলছে জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য হামলা-মামলা ও গুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। এটা সবাই জানেন যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সরকার কিন্তু বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা আজও শেষ হয়নি। এখনো প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। গভীর রাতেও গ্রামে-গঞ্জে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির মকবুল ইসলাম টিপু, ওমর নবি বাবু, মাহবুবুর রহমান টিপু, রফিকুল ইসলাম ময়না, মোহাম্মদ রবিন, মোহাম্মদ সালেহ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একই দিনে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান (ভিপি মিজান), জেলা বিএনপি নেতা মোহিতুর রহমান হেলাল, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরীসহ ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর জুরাইন থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মনির মুন্সী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব বাবুসহ গাড়ি চালককে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক আটকের পরও অস্বীকার এবং মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব শাহেদকে গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
গত ২৪ এপ্রিল খুলনা জেলা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর ও কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, বিএনপি নেতা খান জুলফিকার আলী জুলু, রুপসার থানার মোল্লা সাইফুর রহমান, পাইকগাছার এনামুল হক, মো. সাহাবুদ্দিন ইজাদার, মো. সাইফুল ইসলাম পাইক, স্বেচ্ছাসেবক দলের মো. জাকির হোসেন তালুকদার, মো. লায়েকুজ্জামান লাকু, মো. কামাল উদ্দিন, মো. ফরহাদ হোসন, জাসাসের মো. খালিদ লস্কর, ছাত্রদলের জাকারিয়া, মো. তরিকুল ইসলাম রনি, মো. আলমগীর শেখ, যুবদলের ইমরান হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সোহেল গাজী, মো. সোহেল গাজী, মো. ফারুক হোসেন, আমিনুল মল্লিক, মো. শিহাব সরদার, বাদশাহ সরকার, মো. আল আমিন শেখ প্রমুখ।
গত ২১ এপ্রিল দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৭ নেতাকর্মীর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবন্দি নেতারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গোলাম হোসেন, মো. মোরসালিন, আবদুল আজিজ, সাবের হোসেন, কালাম, হান্নান খান, আবু কাউসার ভূঁইয়া, হুমায়ুন, আনিসুর রহমান শিপলু, সানি ও ইয়াসিন, মোস্তাক আহমেদ, মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন সিরাজ, সেন্টু আহমেদ সাকি, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, মোহাম্মদ মঈন, যুবদলের ওমর ফারুক, রাজু বল্লম রাজু, মো. রকি, বিএনপি নেতা মো. বিল্লাল, মো. ফালান, মোহাম্মদ রনি, মামুন, সাগর ও শাওন। ১৭ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য শহিদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপি নেতা সেলিম আহম্মেদ সালেম, কুতুব উদ্দিন এবং রেজাউর রহমান রাজুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তার আগে গত ১৮ এপ্রিল বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য লতিফুল্লাহ জাফরু, বংশাল থানার মো. মাকসুদ হোসেন এবং মোহাম্মদ আরিফ হাসানের জামিন নামঞ্জুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গত ১৭ ও ১৮ এপ্রিল দিনাজপুর জেলা বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির শামীম চৌধুরী, মোজাহারুল ইসলাম, নুর ইসলাম (চেয়ারম্যান), ঘোড়াঘাট উপজেলার আবু সাঈদ মিঞা, জেলা যুবদলের মোন্নাফ মুকুল, বিরল উপজেলার মো. মমিনুল ইসলাম, মো. আরমান আলী, মো. মমিন, মো. হাসিনুর রহমান পায়েল এবং যুবদলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আবুল মনছুর খান দিপক। এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ যশোর সদর ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির ৫২ নেতাকর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ১৮ মার্চ তারা ছাড়া পেয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিনা কারণে বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে যেতে হচ্ছে। কারাগার যেন তাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দীর্ঘ তিন-চার মাস কারাগারে থেকে বেরোলেন। এখনো কয়েক হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি। তাদের জন্য দিনের আলো ও মুক্ত বাতাস গ্রহণ যেন নিষিদ্ধ। এদের প্রায়ই কারাগারের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। এভাবে নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, গুম ও খুন করা এই কর্মসূচি যেন সরকারের শেষ হচ্ছে না। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। কারণ তিনি জানেন তার জনসমর্থন নেই। সরকার যতই বিরোধীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন করুক না কেন, একদিন এর বিচার হবেই। সব অন্যায়ের রেকর্ড আছে। তাদের শেষ রক্ষা হবে না।
জানা গেছে, ঈদের আগে সাজাপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তফা কামাল হৃদয়, এসএ খোকন, উত্তরা থানার আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান আত্মসমর্পণের পর কিছুদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন অপু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আজিজুর রহমান মুসাব্বির, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবিরসহ অনেকে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের স্ত্রী শিরিন সুলতানা বলেন, গত বছরের ২৬ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় তার স্বামী খোকনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত অনেক আসামির জামিন হলেও খোকনকে জামিন না দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অথচ খোকন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, পায়ে পানি ধরাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। অবিলম্বে স্বামী খোকেনর মুক্তি দাবি করেন শিরিন সুলতানা।
সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহসম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ বলেন, মিথ্যা মামলায় পুলিশি হয়রানির কারণে আমি তো ঘরে থাকি না। তবু কেউ কেউ আমার বাসার সামনে ও বিল্ডিংয়ের ছাদে, কেউ আবার ভাঙাড়ি সেজে, মনিটরিং করে। আমি তো চোর বা ডাকাত নই। আমার দল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য এবং জুলুমের বিপক্ষে লড়ছে। আমি সেই দলেরই (বিএনপি) একজন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল বিএনপি শামীম ইস্কান্দার ডা. জাহিদ
মন্তব্য করুন
বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশ মুক্ত হলেও অনেককে নতুনভাবে কারাগারে যেতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আগে এবং সম্প্রতি শতাধিক নেতাকর্মী ফের কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়। কেউ কেউ আছেন একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। অনেককে বিভিন্ন মামলায় আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ। সর্বশেষ সোমবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন কেউ কেউ।
উপজেলা নির্বাচনের দুই ধাপের প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই দুই ধাপে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী এমপির স্বজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর মন্ত্রী-এমপিদের নিজস্ব ব্যক্তি বা মাইম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে একশরও বেশি। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেছেন তখন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া একদিনের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। বাড়িতে ফেরার পর বিএনপি পন্থী চিকিৎসক এবং ড্যাব নেতা ডা. জাহিদ দাবি করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে এখন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে এবং এর জন্য তাকে বিদেশ নেওয়ার কোন বিকল্প নেই।